ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: প্রয়াত হলেন কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসির প্রভাবশালী নেতা রমেন পাণ্ডে। বেশ কিছুদিন ধরেই বিভিন্ন শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন তিনি। কিডনি সমস্যা এবং সুগারের পাশাপাশি শরীরে বাসা বেঁধেছিল একাধিক জটিল রোগ। তাঁর দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। তবে, একটি কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করা হয়। শনিবার সকালে শহরের এক বেসরকারি হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মিন্টোপার্কের মারুতি বিল্ডিংয়ে আপাতত তাঁর মরদেহ রাখা রয়েছে।পরে বিধানভবনেও নিয়ে যাওয়া হবে দেহ। আজ সন্ধেয় নিমতলা মহাশ্মশানে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে।
[আরও পড়ুন: নকশাল নেতা ও সাহিত্যিক সন্তোষ রানার জীবনাবসান]
তাঁর মৃত্যুতে রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দীর্ঘদিনের সহযোদ্ধার মৃত্যুতে শোকবার্তা পাঠিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। শোকবার্তায় তিনি লেখেন, “শ্রমিক আন্দোলনের অগ্রণী নেতা, আমার ছোট ভাই সম রমেন পাণ্ডের মৃত্যুর আকস্মিক সংবাদে আমি শোকস্তব্ধ। রমেন পাণ্ডের মৃত্যুতে শ্রমিক আন্দোলনের জগতে নিশ্চিতভাবে এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো। আমি প্রয়াত রমেন পাণ্ডের শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গ এবং তাঁর অসংখ্য অনুরাগীদের প্রতি সহমর্মিতা জ্ঞাপন করি। কামনা করি, তাঁর বিদেহী আত্মা চিরশান্তি লাভ করুক।”
[আরও পড়ুন: মাসের শুরুতেই অ্যাপ ক্যাব-ট্যাক্সি ধর্মঘটের ডাক, ভোগান্তির আশঙ্কা আমজনতার]
দীর্ঘদিন শ্রমিক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন রমেনবাবু। রাজ্যের পরিসর পেরিয়ে সর্বভারতীয় স্তরেও বেশ জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। একবার এশিয়া প্যাসিফিক এলাকার আন্তর্জাতিক সংগঠনেরও সহ-সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। তবে, একাধিকবার বিতর্কেও জড়িয়েছেন। বিশেষত শেষ বয়সে এসে আইএনটিইউসির রাজ্য সভাপতির পদ খোয়াতে হয়েছিল রমেনবাবুকে। তাঁর পরিবর্তে রাজ্য সভাপতি করা হয়েছিল কামরুজ্জামান কামারকে। কামরুজ্জামান তাঁর আগে প্রকাশ্যেই তৃণমূলে যোগদান করেন। স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল ফেরত কামারকে রাজ্য সভাপতি পদে মানতে পারেননি রমেনবাবু। কামারের পাশাপাশি সমান্তরালভাবে রাজ্য সংগঠনের উপর হস্তক্ষেপ জারি রেখেছিলেন তিনি। যা নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি। কামরুজ্জামান কামারের আগে প্রায় চার বছর কংগ্রেসের শ্রমিক সংগঠনের রাজ্য সভাপতি ছিলেন রমেন পাণ্ডে। মজার কথা হল, বিগত কয়েক বছরে রাজ্যে কংগ্রেস ক্রমশ শক্তিহারা হলেও, রমেনের নেতৃত্বে আইএনটিইউসির সাফল্য ছিল নজর কাড়ার মতো। কংগ্রেসের এ হেন দুর্দিনেও রাজ্যে নতুন নতুন শ্রমিক সংগঠন দখলে এনেছিল আইএনটিইউসি। কামারের ৪ বছরের শাসনকালে প্রায় দেড়শো নতুন শ্রমিক সংগঠনের দখল নেয় তাঁর সংগঠন। রমেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে বাংলা থেকে লেভি পাঠিয়েছিলেন ৩১ লক্ষ টাকা।