Advertisement
Advertisement

Breaking News

শিশুর ক্যানসারের নামে লক্ষাধিক টাকার প্রতারণা, ফের সক্রিয় অসাধু চক্র

যে বাচ্চাদের মুখ দেখিয়ে এমন জাঁকালো 'ব্যবসা' চলছে, তাদের পরিবার প্রায় কিছুই পায় না।

Fake cancer aid groups siphoning money from people
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:December 30, 2017 1:22 pm
  • Updated:December 30, 2017 1:22 pm

ব্রতদীপ ভট্টাচার্য: প্রতারণার পর্দা ফাঁস হয়ে গিয়েছে আগেই। তদন্তে উঠে এসেছে যে, ক্যানসার আক্রান্ত শিশুর চিকিৎসার জন্য গলায় আই-কার্ড ঝুলিয়ে রোগাক্রান্তর নথি ভরা ফাইল হাতে নিয়ে ট্রেন, বাসে বা রাস্তায় যে ‘স্বেচ্ছাসেবীদের’ সাহায্য চাইতে দেখা যায়, তার গোটাটাই ভাঁওতাবাজি। কুপন কেটে শিশুদের চিকিৎসার নামে দৈনিক হাজার হাজার টাকা তুলছে তারা। মাসে লাখ লাখ টাকা। আর দিনের শেষে ‘কালেকশন’-এর অর্ধেক পায় এজেন্টরা। বাকিটা যায় ভুঁইফোঁড় সংস্থার মালিকের পকেটে। অসহায় শিশুর চিকিৎসার জন্য যে সহৃদয় মানুষেরা সাহায্য দিচ্ছেন, তাঁরা জানতেও পারছেন না এই সহানুভূতি পুঁজি করে আসলে ব্যবসা ফেঁদে বসেছে এই সংস্থাগুলি।

[নতুন বছরে বেতন বাড়বে সব ধরনের চাকরিতেই, বলছে নয়া সমীক্ষা]

এই খবর ছড়িয়ে যাওয়ার পর মাসখানেক গা ঢাকা দেয় এই ভাঁওতাবাজরা। তবে পরিস্থিতি একটু থিতোতেই ফের মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে স্বেচ্ছাসেবীর মুখোশের আড়ালে লুকিয়ে থাকা প্রতারকরা। শুক্রবারই উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রাম এলাকায় এই সংস্থার এক কর্মীকে হাতে নাতে ধরেন এলাকার লোকেরা। ধরা পড়ার পর তিনি জানান, এক মাস কাজ বন্ধ রাখতে বলেছিল ‘মঙ্গলদ্বীপ’-এর মালিক বিশ্বনাথ গোস্বামী। তবে কয়েকদিন আগেই সে কর্মীদের জানায়, “সব মিটে গিয়েছে। আবার ফাইল আর কুপন নিয়ে নেমে পড়।”

Advertisement

[৫৫ হাজার টাকার রেলের টিকিট! অভিনব প্রতারণার শিকার শিক্ষিকা]

একা মঙ্গলদ্বীপ নয়। কোথাও চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, কোথাও ফাউন্ডেশনের নাম নিয়ে রোগে আক্রান্ত বাচ্চার ছবি দেখিয়ে টাকা তুলছে বহু সংস্থা। হিসাব কষে দেখা যায়, এই প্রতারণা করে মাসে কয়েক লক্ষ টাকা পকেটে পুরছে এই সংস্থার মালিক। হাজার হাজার কামাচ্ছে কর্মী বা এজেন্টরা। মঙ্গলদ্বীপ নামে এই চক্রের পান্ডা বিশ্বনাথ গোস্বামী জানিয়েছিল, দশ টাকার কুপনে দিনে হাজার টাকা কালেকশন হয়েই যায়। যে এজেন্ট টাকা তোলে সে কালেকশনের অর্ধেক পায়, মানে পাঁচশো, বাকিটা সংস্থার। সে জানায়, তার সংস্থায় ৩০ থেকে ৩৫ জন কাজ করে। অর্থাৎ, একজন গড়ে দিনে হাজার টাকা করে কালেকশন করলে প্রতিদিন তার আয় পাঁচশো টাকা। আর ৩০ জনের থেকে পাঁচশো করে নিয়ে এই সংস্থার আয় মাসে সাড়ে চাল লাখ টাকা।

Advertisement

[মায়ের পরকীয়া দেখে ফেলাতেই খুন চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া?]

অথচ যে শিশুর নামে টাকা তুলছে তার অভিভাবকদের হাতে ঠেকানো হচ্ছে সাকুল্যে এককালীন দু’-পাঁচ হাজার। গরিব পরিবারগুলি জানতেও পারছে না, তাদের বাচ্চাদের মুখ দেখিয়ে এমন জাঁকালো ‘ব্যবসা’ চলছে। মঙ্গলদ্বীপের মালিক এতটাই বেপরোয়া যে, কোনও কিছুরই ধার ধারে না সে। চাকরি প্রার্থী সেজে যাওয়ার পর সে জানিয়েছিল, রোগীর নামে টাকা তুলে সে নিজে পকেটে ঢোকাচ্ছে এটা কেউ প্রমাণই করতে পারবে না। এ বিষয়ে এতটাই আত্মবিশ্বাসী যে সে বলে, “পুলিশ কেন, কেউই আমার কিছু করতে পারবে না।” যদিও দমদম জোনের ডেপুটি কমিশনার ধ্রুবজ্যোতি দে জানিয়েছেন, “এলাকায় সমস্ত পুলিশকর্মীকে জানানো হয়েছে, এধরনের সংস্থার কর্মী দেখলেই তাদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে। রেল পুলিশকেও জানানো হয়েছে। এদের বিরুদ্ধে সমস্ত তথ্যপ্রমাণও জোগাড় করার কাজ চলছে। খুব শীঘ্রই অভিযান চালানো হবে।”

[বর্ষবরণের রাতে ফাঁকা ফ্ল্যাটে ‘সফিস্টিকেটেড’ মধুচক্র, সতর্ক পুলিশ]

[চিত্র প্রতীকী]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ