সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তথাকথিত ড্রেস কোড নিয়ে হইচই বাধিয়েছ্লি অভিজাত রেস্তরাঁ মোক্যাম্বো। পোশাক ‘নোংরা’। তাই ঢুকতে দেওয়া হয়নি গাড়ির চালককে। তবে শনিবারের ঘটনাটা কার্যত নোংরামির পর্যায়েই পৌঁছল। ধুতি-পাঞ্জাবি পরিহিত এক ব্যক্তিকে ঢুকতে দেওয়া হল না শহরের অভিজাত কোয়েস্ট মলে। পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হল, তাঁর এই পোশাক মলের জন্য উপযুক্ত নয়। তবে কেন ওই পোশাক উপযুক্ত নয়, সেই প্রশ্নের উত্তর কিন্তু পাওয়া যায়নি মল কর্তৃপক্ষের কাছে। গোটা ঘটনার ভিডিও রেকর্ডিং নিজের ফেসবুকে প্রোফাইলে আপলোড করেন মডেল-অভিনেত্রী দেবলীনা সেন। মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হয়ে সেই ভিডিওগুলি। যার জেরে নিন্দায় মুখর নেটিজেনরা।
অভিনেত্রী দেবলীনা সেনের সঙ্গে কোয়েস্ট মলে গিয়েছিলেন তাঁর বন্ধু। যিনি আবার একজন পরিচালকও। আশিস অভিকুন্তক নামে ওই ব্যক্তির পরনে ছিল খাঁটি ভারতীয় পোশাক। ধুতি পরেছিলেন তিনি। মলের প্রবেশপথেই তাদের আটকায় নিরাপত্তারক্ষীরা। ‘ইংরাজি’তে কারণ জিজ্ঞাসা করা হলে, ওয়াকি-টকি মারফত ওপরমহলের সাথে কথা বলেন তাঁরা। তবে তাতেও সমাধান মেলেনি। পরে যেহেতু দেবলীনারা ইংরাজি বলতে পারেন, এই শর্তে তাদের মলে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়। নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দেবলীনা স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন তুলেছেন। প্রশ্ন আমাদেরও। যদি কোনও ইংরেজি ভাষা না জানা ব্যক্তি ধুতি পরে কোয়েস্ট মলে যেতেন তবে তিনি কি ঢুকতে পারতেন না? মলে প্রবেশের মাপকাঠি কি কারওর ভাষা বা পোশাক হতে পারে?
ঘটনার এখানেই শেষ নয়৷ দেবলীনা তাঁর ফেসবুকে জানিয়েছেন, উচ্চতর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেলে, ম্যানেজার ঘটনাস্থলে আসেন। তিনিও তাদের পরিষ্কার জানান, ধুতি বা লুঙ্গি পরে তাদের মলে প্রবেশ করা যায় না। অবশেষে মল ছেড়ে বেরিয়ে আসেন দুজনেই। ঘটনাটির সম্পূর্ণ ভিডিও, ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন দেবলীনা৷ ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল তাঁর পোস্ট৷ নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, প্রকাশ্যে এই ধরণের বৈষম্য, সমাজের অগ্রগতি নিয়েই প্রশ্ন তুলে দেয়। পরে ‘সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল’-কে একান্ত সাক্ষাৎকারে দেবলীনা বলেন, ‘ধীরে ধীরে মানুষের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা চলে যাচ্ছে। বেশভূষা বা মুখের ভাষা দিয়ে মানুষের শ্রেণিবিভাজন করা হচ্ছে। এই ধরনের ঘটনার প্রতিবাদ সর্বত্র হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। কারণ, অভিযোগ জানালেও এই ধরনের ঘটনার কোনও সুরাহা হয় না। অভিযোগপত্র আস্তাকুঁড়ে ফেলে দেওয়া হয়। স্রেফ নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার দোহাই দিয়ে যারা মানুষের পোশাককে কাঠগড়ায় তোলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ চালিয়ে যেতে হবে। শ্রেণিবিভাজন মেনে নেওয়া যায় না।’ সংশ্লিষ্ট মল কর্তৃপক্ষ অবিলম্বে এই ঘটনার জন্য ক্ষমা চাক, এমনটাই চাইছেন অভিনেত্রী। নেটদুনিয়াও এমনই দাবিতে সরগরম।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.