শ্রীমন্ত চৌধুরি: এখনও ঢাকে কাঠি পড়তে বাকি বেশ কয়েক মাস৷ কিন্তু বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো নিয়ে এখনই শহরের উত্তেজনার পারদ উর্ধ্বমুখী৷ আর সেই উন্মাদনাকে হাতিয়ার করে চাঁদিফাটা গরম উপেক্ষা করেই ময়দানে নেমে পড়লেন শহরের পুজো উদ্যোক্তারা৷ এখন থেকেই শহরের বিভিন্ন পুজো কমিটিগুলি নেমে পড়েছে টিজার যুদ্ধে৷ উত্তর থেকে দক্ষিণ, তিলোত্তমার আনাচে-কানাচে এখন পুজো কমিটির টিজারের হোর্ডিংয়ের ছয়লাপ৷ এ বলে আমায় দেখ তো ও বলে আমায়৷ কিন্তু পুজোর উত্তাপ বাড়াতে দুবছর আগে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছিল পুজো কমিটির বটবৃক্ষ বলে পরিচিত ফোরাম ফর দুর্গোৎসব৷ ফোরামের সেই উদ্যোগ, ‘মায়ের জন্য রক্তদান’ এবার তৃতীয় বছরে নয়া কীর্তিমান গড়ল। কলকাতার বুকে একছাতার তলায় সর্বাধিক মানুষের রক্তদানের রেকর্ড হল রবিবার। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রক্ত দিলেন ১৮০৬ জন। যা সর্বকালীন রেকর্ড।
গতবারের রক্তদানের সংখ্যাকে ছাপিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার নিয়েছিল ফোরাম। শোনা গিয়েছিল, প্রায় ২০০০-এরও বেশি মানুষ এবারের কর্মসূচিতে রক্তদান করতে পারেন। তবে শেষপর্যন্ত ১৮০৬ জন মায়ের জন্য রক্তদান কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রবিবার ভিড় জমিয়েছিলেন রেকর্ড সংখ্যক মানুষ। সবচেয়ে সমস্যার বিষয়, গ্রীষ্মকালে সব ব্লাড ব্যাকেই রক্তের আকাল দেখা দেয়৷ রক্তের চাহিদা মেটানোর জন্য বড় ভরসা বিভিন্ন রক্তদান শিবিরগুলি৷ ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক শাশ্বত বসু জানিয়েছেন, ‘ফোরামের ছাতার তলায় শহরের প্রায় ২৮১টি পুজোকমিটি রয়েছে৷ সবারই মিলিত উদ্যোগে এই প্রয়াস৷’ আরও বেশ কিছু মিলিয়ে ৩০০টি পুজোকমিটি এবার মায়ের জন্য কোমর বেঁধে নামে। রক্তদানের পরিসংখ্যায় আইএফএ এবং সিএবিকেও টেক্কা দিয়েছে ফোরাম। এক ছাদের নিচে ১৮০৬ মানুষের থেকে রক্তসংগ্রহ চাট্টিখানি কথা নয়। রবিবার সকাল দশটা থেকে শুরু হয় রক্তদান শিবির। উপস্থিত ছিলেন কলকাতার প্রত্যেকটি সরকারি ব্লাড ব্যাংক, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কয়েকটি ব্লাড ব্যাংকের আধিকারিকরাও। পুজোপাগল ও আধিকারিকদের যৌথ প্রয়াসে এক মহান উদ্দেশ্যকে সাফল্যমণ্ডিত করার প্রয়াস ফোরামের।
এদিন কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, অরূপ বিশ্বাস, সুজিত বসু, শশী পাঁজা, সাধন পাণ্ডে, দক্ষিণ কলকাতার সাংসদ মালা রায়, ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ, মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার প্রমুখ। তাঁরা প্রত্যেকেই এদিন ফোরাম ফর দু্র্গোৎসবের এই মহৎ প্রয়াসের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.