সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবার আতঙ্ক এখনও কাটেনি। বিষাক্ত গ্যাস লিকের পর থেকে যেন ‘গ্যাস চেম্বার’-এ পরিনত হয়েছিল গোটা লিলুয়া শিল্পাঞ্চল। ঝাঁজালো গন্ধে অসুস্থ হয়ে পড়া ৭০ জনের অবস্থা এখন স্থিতিশীল। তবে ঠিক কোন বিষাক্ত গ্যাসের প্রভাবে এই দুর্ঘটনা, তা এখনও নির্দিষ্ট করে জানাতে পারেননি ফরেনসিক বিভাগ। অভিযোগ না হওয়ায় আপাতত হাত গুটিয়ে পুলিশ। কারখানা মালিক গা ঢাকা দিয়েছেন।
গোটা ঘটনায় মারাত্মক ক্ষুব্ধ পশিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র। সোমবার পর্ষদ গ্যাসের নমুনা সংগ্রহ করতে পারেনি। মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে যাওয়ার কথা পর্ষদের লোকেদের। যদিও তার মধ্যে গঙ্গায় জোয়ার-ভাটা খেলে যাওয়ায় কতটা বিষ ধরা পড়বে তা নিয়ে সন্দিহান খোদ পর্ষদের চেয়ারম্যানও। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, লিলুয়া শিল্পাঞ্চলে প্রচুর পরিমানে লোহার কারখানা রয়েছে। আর ওই কারখানাগুলিতে লোহা গলানোর কাজে বিষাক্ত ক্লোরিন গ্যাস ব্যবহার করা হয়। তাই ওই এলাকার জলে এবং পরিবেশের উপর যে সমস্ত কুপ্রভাব লক্ষ করা গিয়েছে সেগুলো ওই গ্যাসের প্রভাবে ঘটতে পারে বলে মনে করছেন তাঁরা।
তবে পশিমবঙ্গ দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, দমকল এবং প্রশাসনের অজ্ঞতার কারণেই ঘটনাটি ওই বিরাট আকার ধারণ করেছিল। অনেকেই গ্যাসের ওই তীব্র ঝাঁজালো গন্ধে জ্ঞান হারান। আবার অনেকে সেইসময় গঙ্গায় স্নান করতে নেমেছিলেন, তাদের মধ্যে অনেকেই জলের মধ্যেই সংজ্ঞা হারান। অনেকের আবার শ্বাসকষ্ট, গা হাত-পা জ্বালা, বমি বমি ভাব দেখা দেয়। প্রশাসন সূত্রে খবর, গ্যাসকাণ্ডে বেলুড়ে মোট অসুস্থ ৭০ জনের মধ্যে কয়েকজনকে জয়সওয়াল হাসপাতাল ও বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। আবার গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কয়েকজনকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাওড়া জেনারেল হাসপাতালে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেই লিলুয়া পুর দপ্তরের দাবি।
[বিগ বি-কে ডিলিট সম্মানে ভূষিত করতে চলেছে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়]
যখন এই ঘটনা ঘটে তখন নদীতে ভাটা চলায় জলের স্রোত ছিল দক্ষিণমুখী। ফলে দূষণ ছড়িয়ে পড়ে কলকাতার দিকেও। ঘটনার অন্যতম প্রত্যক্ষদর্শী ইতি বন্দোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রথমে গন্ধে মনে হচ্ছিল বোধহয় সকাল সকাল মশা মারার কামান দাগছে পুরসভার কর্মীরা। কিন্তু একটু পরই পাশের বাড়ির বছর দেড়েকের শিশু ঈশিতা সহ অন্যরা অসুস্থ হয়ে পড়ায় আতঙ্ক শুরু হয়। দরজা-জানালা বন্ধ করেও শ্বাসকষ্টের হাত থেকে মুক্তি মিলছিল না। অনেকে মুখে ভেজা গামছা ও রুমাল বেঁধে সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু তাতেও তো কোনও কাজ হচ্ছিল না, এতটাই ছিল গ্যাসের তীব্রতা।’
জানা গিয়েছে, সন্দীপ এন্টারপ্রাইজ নামে যে সংস্থার গোডাউনে এই ঘটনার সূত্রপাত, কোনওরকম অভিযোগ না আসায় সেই গোডাউনের মালিক প্রকাশ জয়সওয়ালকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
[সিআইডির ‘অতিসক্রিয়তা’, সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাই কোর্টের দ্বারস্থ ভারতীর স্বামী]