সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: বাদুড়িয়া কাণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপাল সংঘাত চরমে। ঘাসফুল এবং গেরুয়া-দুই শিবির থেকেই চলছে একে অপরকে কটাক্ষ, তোপ দাগা, কাদা ছোড়াছুড়ি। এবার সেই আগুনে ঘৃতাহুতি করলেন বিজেপির জাতীয় সচিব তথা প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহা। রাজ্যপালকে মোদি বাহিনীর সৈনিক আখ্যা দিয়ে উত্তেজনার পারদ চড়ালেন রাহুল। বাদুড়িয়ায় শান্তি ফেরাতে গতকালই বুথে বুথে শান্তিবাহিনীর দাওয়াই দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী-রাজ্যপাল তরজা যেন থামতেই চাইছে না। নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছেন রাহুল। বুধবার তিনি বলেন, ‘তৃণমূল ভাবছে, রাজ্যপালকে গালাগাল করে চুপ করাবে। কিন্তু তৃণমূল ভূল করছে, মোদি বাহিনীরই একজন সৈনিক কেশরীনাথ ত্রিপাঠীজি।’ এর পালটা দিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘রাজ্যপাল যে তাদের দলেরই লোক সেই স্বীকৃতি দিয়ে দিল বিজেপি।’
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবারই নবান্নে সাংবাদিক সম্মেলন করে তোপ দাগেন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে। রাজ্যপাল ফোনে হুমকি দিয়েছেন বলে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন মমতা। সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে মুখ্যমন্ত্রীরও একটা সম্মান আছে, তাঁকে অসম্মানিত করা হয়েছে বলে আক্ষেপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাতে বিতর্কের পারদ চড়ে। পালটা রাজভবন প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়ে রাজ্যপালের আত্মপক্ষ সমর্থনে বিবৃতি দেয়। বলা হয়, এমন কিছু বলা হয়নি যাতে মুখ্যমন্ত্রীকে অসম্মানিত করা হয়। তবে এই কথোপকথন প্রকাশ্যে আনা সমিচীন হয়নি। কিন্তু রাজ্যপাল এও বলেন, যে পরিস্থিতি যে দিকে গড়িয়েছে তাতে তিনি চুপ থাকতে পারেন না। ব্যস, এতেই সংঘাত চরমে পৌঁছয়। তারপর মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে কটাক্ষ করেন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তৃণমূলের মুখ্য জাতীয় মুখপাত্র ডেরেক ও’ব্রায়েন রাজ্যপালের বিরুদ্ধে বিজেপির ক্যাডারসুলভ আচরণ করার অভিযোগ তোলেন। রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে বিজেপির তোতাপাখি বলেও কটাক্ষ করেন। সেই পথে হাঁটেন রাজ্যের আরেক মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীও। শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীদের কটাক্ষের জবাব দিতেই আসরে নেমে একটু বেশি উত্তেজনা দেখাতে গিয়েছিলেন রাহুল। উত্তেজিত হয়েই রাজ্যপালকে মোদি বাহিনীর সৈনিক বলে মন্তব্য করে বসেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
অন্যদিকে, বাদুড়িয়া কাণ্ডে কার্তিক ঘোষ নামে এক আরএসএস কর্মীর মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করে আর জি কর হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি। বৃহস্পতিবার বিজেপির জাতীয় সচিব তথা বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়, রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং দলীয় নেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় আর জি কর হাসপাতালে বাদুড়িয়ার ঘটনায় আহতদের দেখতে হাসপাতালে যান। সেখানেই তাঁরা অভিযোগ তোলেন, তৃণমূল কর্মীদের মারেই কার্তিক ঘোষের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একপ্রস্থ বচসাও বাধে লকেটদের। তবে বাদুড়িয়া কাণ্ডেই এই মৃত্যু কি না তা এখনও নিশ্চিত করেনি পুলিশ।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.