Advertisement
Advertisement

হেরোইন বিক্রির স্বর্গরাজ্য শিয়ালদহ, স্টেশনে বাড়ছে অপরাধ

এদের হাত ধরেই রোজ শয়ে শয়ে গ্রাম হেরোইন ছড়িয়ে পড়ে স্টেশন চত্বরে৷ জানেন কীভাবে?

Heroin smuggling routes in Sealdah Station
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:January 29, 2017 5:09 am
  • Updated:January 29, 2017 6:48 am

সুব্রত বিশ্বাস: হেরোইন বিক্রিকে কেন্দ্র করে অপরাধের জাল ছড়িয়ে পড়ছে শিয়ালদহ স্টেশনের অভ্যন্তরীণ এলাকায়৷ চুরি-ছিনতাই-এ সর্বস্ব খোয়াচ্ছেন যাত্রীরা৷ আরপিএফ কর্তারা স্পষ্টতই জানিয়েছেন, ‘পাতাখোরদের’ দৌরাত্ম্য বাড়াতে এই ধরনের অপরাধ সীমাহীন পর্যায়ে চলে গিয়েছে৷ হেরোইন বিক্রেতাদের ধরে রেল পুলিশকে দেওয়ার পর নিয়মমাফিক জামিন পাওয়ায় তারা আবার পুরনো ব্যবসায় চলে আসে৷ রেল পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট নারকোটিক আইন প্রয়োগ করতে ন্যূনতম ৫ গ্রাম হেরোইন-সহ আটক করতে হয়, ধৃতদের কাছে সেই পরিমাণ হেরোইন না থাকায় ভিন্ন আইন প্রয়োগ করতে হয়৷ তাতেই পেয়ে যায় জামিন৷

শিয়ালদহ কোর্ট এলাকা, কার পার্কিং এলাকা, বি আর সিং হাসপাতালের আশপাশে, মাদার টেরিজা নামাঙ্কিত আবাসনের পাশে, স্টেশনের সামনে ভ্যাট এলাকায় ও কোলে মার্কেট চত্বরে সক্রিয় এই হেরোইন চক্র৷ চক্রের সদস্যদের চেনে পুলিশ৷ তাহলে কেন ধরে না? কলকাতা পুলিশের আওতায় থানাগুলির কর্মীদের কথায়, কলকাতা এলাকায় তাড়া খেয়ে চলে যায় রেল পুলিশ এলাকায়৷ ফলে তাদের বমাল ধরা মুশকিল৷ শিয়ালদহ রেল পুলিশের সুপার সব্যসাচী রমন মিশ্র জানিয়েছেন, ক্রাইম অ্যানালিসিস করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷

Advertisement

ভাঙা, জীর্ণ বাড়িই কাটোয়ার ‘এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জ’

Advertisement

কারা যুক্ত? শুধু শিয়ালদহ স্টেশন ও আশপাশে প্রায় চল্লিশ থেকে পঞ্চাশ জন এই অপরাধে যুক্ত৷ মায়ানমার হয়ে বাংলাদেশ সেখান থেকে বনগাঁ সীমান্ত হলে শিয়ালদহে আসে হেরোইন৷ এক সময় শিয়ালদহের ড্রাগ পেডলার লক্ষ্মীর রমরমা কারবার থাকলেও এখন সে দ্বিতীয় শ্রেণিতে চলে এসেছে৷ তার জায়গা নিয়েছে ছোট অনুপা ও বড় অনুপা৷ নাম রয়েছে বৃহস্পতিয়ারও৷ এদের এক একজনের অধীনে দশ থেকে পনেরোজন রয়েছে৷ যারা কমিশনের ভিত্তিতে কাজ করে৷ ৫০ শতাংশ কমিশনে দৈনিক মোটা উপার্জনের আশায় বিক্রেতার সংখ্যা কম নয়৷ দলে মহিলার সংখ্যই বেশি৷ রয়েছে পুরুষ সদস্যও৷

কীভাবে বিক্রি হয়? অনুপা, লক্ষ্মীদের কাছে হেরোইন পৌঁছনোর পর তা ছোট-ছোট পুরিয়া করা হয়৷ ২৫ ও ৫০ টাকার ২৫টি পুরিয়ার প্যাকেট তৈরি করা হয়৷ এমন আটটি প্যাকেট নিয়ে তৈরি হয় একটি বান্ডিল৷ যা চক্রের ভাষায় ‘ক্যাসেট’ বলেই পরিচিত৷ ২৫ টাকার ক্যাসেটে বিক্রিত মূল্য পাঁচ হাজার টাকা৷ বিক্রেতারা পঞ্চাশ শতাংশ কমিশন পায়৷ এক একজন দৈনিক একটা থেকে দেড়টা ক্যাসেট বিক্রি করে থাকে৷ ফলে আড়াই থেকে চার হাজার টাকা দৈনিক আয়ের এই লাভজনক ব্যবসা থেকে কখনই পিছিয়ে আসতে চায়না হেরোইন বিক্রেতারা৷ এই আয়ের অনেকটাই প্রশাসনের অনেকের হাতে তুলে দিয়ে কারবারকে সক্রিয় রাখে তারা৷

আউশগ্রাম থানায় ব্যাপক ভাঙচুর, জ্বলল আগুন

খদ্দের কারা? অনেক সময় বহু ক্রেতাকে হাতে নাতে ধরেছে আরপিএফ৷ শিয়ালদহের আরপিএফ ইন্সপেক্টর সূরজপ্রকাশ গুপ্তার কথায়, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কলেজ পড়ুয়ারাতো রয়েইছে৷ এছাড়া একেবারে নিচুতলার মানুষজনও এই নেশায় আসক্ত৷ স্টেশনের আশপাশের বহু ফুটপাথবাসী এই নেশায় আশক্ত হয়ে স্টেশনে ঢুকে পড়ে৷ নেশার পয়সা জোগাড় করতে এরাই যাত্রীদের পকেট কাটে, পণ্য চুরি করার মতো অপরাধ ঘটিয়ে চলেছে৷ এদের দৌরাত্ম্য কমাতে স্টেশনে এলাকায় হেরোইন বিক্রি বন্ধই একমাত্র পথ বলে মনে করেছেন সুরজবাবু৷

মাটিতে আটা ফেলে দেওয়ায় মেয়ের গায়ে আগুন লাগিয়ে দিল মা

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ