Advertisement
Advertisement

বাগরিতে অগ্নিকাণ্ড কি পরিকল্পিত নাশকতা? সিসিটিভি ফুটেজ ঘিরে রহস্য

দোষীরা কেউ ছাড় পাবে না, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী।

Sabotage suspected in Bagri market fire
Published by: Tanujit Das
  • Posted:September 19, 2018 9:50 am
  • Updated:May 20, 2023 2:33 pm

স্টাফ রিপোর্টার: বাগরি মার্কেট কাণ্ডে রহস্য বাড়িয়ে দিয়েছে কলকাতা পুলিশের হাতে আসা সিসিটিভির ফুটেজ। যেখানে দেখা যাচ্ছে, আগুন লাগার সময় একটি স্কুটিতে ও দৌড়ে কয়েকজন পালিয়ে যাচ্ছে। ওইসময় জ্বলছে মার্কেটের বাইরের ডালা, যা থেকে স্পষ্ট বাড়ির ভিতরে আগুন লাগেনি। বাইরের আগুন ছড়িয়ে পড়ে সর্বত্র। ওই সময় অনেকে সেখানে থাকলেও, ওই যুবকরা কেন পালিয়ে যাচ্ছিল সেটাই বড় প্রশ্ন। তাদের সন্দেহজনক গতিবিধিসম্বলিত ফুটেজের রহস্যভেদে নামছে পুলিশ। খবর পৌঁছেছে বিদেশ সফরে থাকা মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও। তিনি বলেছেন, “উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হবে। দোষী কেউ ছাড় পাবে না। শুধু ব্যবসা করলে চলবে না। নিজের তো বটেই, কর্মচারী, ক্রেতাদের নিরাপত্তার দিকটাও দেখতে হবে। বাথরুমটাও বেচে দেব, তা চলবে না। কোনও পরিকাঠামো গড়বে না, দেশলাই মারলেই দাউদাউ করে আগুন জ্বলবে আর সরকারের ঘাড়ে দায় চাপাবে এটা তো হতে পারে না।”

[এখনও জ্বলছে বাগরি মার্কেট, মালিক ও সিইও-র বিরুদ্ধে এফআইআর দমকলের]

Advertisement

মঙ্গলবার দু’দিন বাদে বাগরি মার্কেটের আগুন নিভেছে। ব্যবসায়ীরা এখনই তৎপর ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে কয়েকদিনের মধ্যে ব্যবসা শুরু করতে। যা নিয়ে পুলিশ ইতিমধ্যেই আপত্তি জানিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তা, কোনও ঢিলেমি চলবে না। দমকল, পুরসভা ও পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। কোনও আপস নয়। শুধু তাই নয়, তিনি কলকাতার অন্য বড় বহুতলে থাকা বিপজ্জনক বাজারগুলির পরিকাঠামো খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়কে। তাঁর কড়া বার্তা, “হয় বাজারগুলির ব্যবসায়ী, মালিকরা সবকিছু ঠিক করুক। না হলে আমাদের করতে দিক। নিজেরা করব না, সরকারকে করতে দেব না, তা চলবে না। ওরা পরিকল্পনা দিক। নকশা পাঠাক। আমরা সব খতিয়ে দেখে ছাড়পত্র দেব। শুধু বাগরি নয়, সব বাজারের পরিকাঠামো দেখা হবে যাতে নিরাপত্তায় ঘাটতি না থাকে। পুরসভার কথা শোনা হচ্ছে না। প্রয়োজনে চারতলার জায়গায় দশতলা হোক, যদি সেই সুবিধা থাকে। কিন্তু পরিকাঠামো ঠিক থাক। ভাল হোক। এটা দেখতে হবে।”

Advertisement

ইতিমধ্যেই পুলিশের তরফে বড়বাজার থানায় আগুন লাগানোর ষড়যন্ত্রের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। একইসঙ্গে গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে। বাগরি এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেডের দুই মালিক রাধা বাগরি, বরুণরাজ বাগরি ও সংস্থার সিইও কৃষ্ণকুমার কোঠারির নামে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তবে তাঁদের খোঁজে বাড়ি, অফিসে হানা দিলেও ধরা যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “প্রাথমিক খবর, হকারের ডালা থেকে আগুন লেগেছে। কিন্তু এমন অবস্থা করে রেখেছিল, দমকলের গাড়ি ঢুকতে পারেনি। কাজ করতে পারেনি। আগুন নেভাবে তার উপায়টুকু নেই। নিষেধ করা হয় দাহ্য পদার্থ রাখার। শোনেনি। কেন শুনবে না? আগুন তো প্রথমদিন নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছিল। কিন্তু এত দাহ্য পদার্থ রাখা ছিল, যে আগুন ধিকিধিকি জ্বলেছে। সব প্লাস্টিক, নেলপালিশ-সহ দাহ্য বস্তুতে ভরা। এটা তো চলতে পারে না। নিজেদের জীবনের কথাও ভাবেনি।”

[মাঝেরহাট কাণ্ডের জের, কাজে গতি আনতে সব দপ্তরেই টেন্ডার কমিটি]

বুধবার নবান্নে বাগরি মার্কেট নিয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয়েছে। মঙ্গলবার মেয়র শোভনবাবু বলেছেন, “অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা, নিরাপত্তা-সহ একাধিক গলদ ছিল। আমরাও এফআইআর করেছি। সরেজমিনে গিয়ে দেখেছি, স্প্রিঙ্কলার, ফায়ার এক্সটিংগুইসার কাজ করেনি। কর্তৃপক্ষকে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু শোনেনি। দেখেছি, বেআইনি দোকানে ভর্তি। সিঁড়ি, বাথরুমও গুদাম। দমকল কাজ করতে পারছিল না, এত বেআইনি দোকান। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। পুরসভা নিয়ন্ত্রিত এবং তার বাইরেও কলকাতায় যত মার্কেট আছে সেই সমস্ত জায়গায় নির্দেশ যাবে। শাটারের বাইরে আর মালপত্র রাখা যাবে না। যতটুকু তাঁর জায়গা, তার মধ্যেই ব্যবসা করতে হবে। কলকাতা পুরসভা, দমকল, কলকাতা পুলিশ যৌথভাবে সমস্ত মার্কেটে অভিযান চালাবে। কোনও দোকানের সামনে ডালা জাতীয় কিছু রাখা যাবে না। দোকানমালিক নিজে তা না সরালে ভেঙে দেওয়া হবে। মার্কেটের বাইরে ডালাগুলো নিয়েও দমকল এবং পুরসভা ভাবছে। আমরা ব্যবসায়ীরদের বিপক্ষে নই। আমরা জানি অনেক মানুষের রুটিরুজি নির্ভর করে এর উপর। কিন্তু ইচ্ছেমতো ব্যবসা চালানো যাবে না।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ