Advertisement
Advertisement

Breaking News

মাওবাদী

সাত বছর পর জামিনে মুক্ত মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম

মোট ৩১টি মামলা ছিল তাঁর বিরুদ্ধে।

Kolkata Hight court approved bail to Mao leader Arnab Dam
Published by: Sulaya Singha
  • Posted:April 11, 2019 1:52 pm
  • Updated:April 11, 2019 2:29 pm

দীপঙ্কর মণ্ডল: জামিনে মুক্তি পাচ্ছেন রাজবন্দি তথা মাওবাদী নেতা অর্ণব দাম। বৃহস্পতিবার তাঁর জামিন মঞ্জুর করল কলকাতা হাই কোর্ট। ২০১২ সাল থেকে জেলে রয়েছেন অর্ণব। মোট ৩১ টি মামলা ছিল তাঁর বিরুদ্ধে। আগেই ৩০ টিতে জামিন পেয়েছেন। এদিন শিলদায় ইএফআর ক্যাম্পে ২৩ জন জওয়ানের মৃত্যু সংক্রান্ত মামলায় জামিনের শুনানি হয়। বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর ডিভিশন বেঞ্চ এই রাজবন্দিকে শর্ত সাপেক্ষে জামিন দেয়। আপাতত তিনি সোনারপুর থানা এলাকার বাইরে যেতে পারবেন না। এখন অর্ণব ওরফে বিক্রম হুগলি জেলে রয়েছেন।

বন্দি অবস্থায় স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর উত্তীর্ণ হয়েছেন। কলেজ সার্ভিস কমিশনের সেটও (স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট) পাশ করেছেন বিচারাধীন মাওবাদী নেতা। অর্ণবের বৃদ্ধ বাবা-মা ছেলের জামিনের অপেক্ষায় ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই হাই কোর্টের নির্দেশে খুশিতে বিহ্বল তাঁরা। এপিডিআর-এর তরফে রঞ্জিত সূর এ প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, সেট পাশ করা অর্ণব পরিবেশ এবং বাস্তুতন্ত্র নিয়ে পিএইচডি করতে চান। চাইলে তিনি কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনাও করতে পারবেন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: লোকসভা ভোটে বামেদের আবেদনপত্রেও বিকল্প নীতির উপর জোর]

গতবছর দেরিতে পরীক্ষাকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ায় নেট (ন্যাশনাল এলিজিবিলিটি টেস্ট)-এ বসা হয়নি অর্ণবের। তবে বন্দি অবস্থায় সেট-এ বসেন। কলেজ সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় এখনও কোনও বন্দি পাশ করেননি। রাজ্য সরকার তাঁর আবেদন মঞ্জুর করলে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, যাদবপুর কিংবা প্রেসিডেন্সির মতো কুলিন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা বা গবেষণা করতে পারবেন অর্ণব। মেধাবী ছাত্র অর্ণব নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশন থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ছিলেন খড়গপুর আইআইটিতে। ১৯৯৮ সালে ক্যাম্পাস থেকে আচমকাই নিখোঁজ হয়ে যান।

Advertisement

২০০৫-এ মাও-নাশকতায় জড়িত থাকার অভিযোগে তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে জামিনও পান। কিন্তু মাস দুয়েক পর ফের নিখোঁজ হয়ে যান অর্ণব। সরকারি আধিকারিকের ছেলে হয়ে যান মাওবাদী নেতা। সিপিআই (মাওবাদী) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্য ও বিহার-ঝাড়খণ্ড-ওড়িশার সীমান্ত আঞ্চলিক কমিটির সদস্য ছিলেন অর্ণব। জঙ্গলমহলে রোগা পাতলা ছেলেটির দাপটে কার্যত ঘুম উড়ে যায় পুলিশের। পশ্চিম মেদিনীপুরের সাঁকরাইল ইএফআর ক্যাম্পে হামলা-সহ একাধিক নাশকতার ঘটনায় অভিযুক্ত এই মাওবাদী নেতা। ২০০৯ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মামালা হয়। ২০১২ সালে পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়ের কাছে বলরামপুর থেকে মাওবাদী নেতা অর্ণবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। কলকাতার প্রেসিডেন্সি জেলে থাকা অবস্থায় তাঁকে পড়াশোনার সুযোগ করে দেয় কারা দপ্তর। বন্দিদের পড়িয়ে দৈনিক ৮০ টাকা মজুরি পেতেন।

অর্ণবের বাবার বয়স এখন ৭৫ বছর। মা ৭০। বাড়িতে আর কেউ নেই। অর্ণবের বাবা জানিয়েছেন, জেলে বসেই ইতিহাসে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর হন অর্ণব। দুটি পরীক্ষাতেই ফার্স্ট ক্লাস পান তিনি। জেলে থেকে কলেজ সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় উত্তীর্ণও হয়েছেন। ছেলে মুক্ত হয়ে এবার অধ্যাপনার কাজে যোগ দেবেন এই আশা করছেন বৃদ্ধ বাবা-মা।

[আরও পড়ুন: ভোটের আগে আরপিএফদের বদলি, প্রতিবাদে কমিশনে চিঠি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ