Advertisement
Advertisement

Breaking News

বিষ খাইয়ে খুন দাদাকে, তিন বছর পর অভিযোগ জানালেন সাঁতারু মাসুদুরের বোন

অভিযোগের আঙুল সাঁতারুর শ্বশুরবাড়ির দিকে।

Kolkata: Masudur Rahaman allegedly poisoned by his in-laws family
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:May 21, 2018 8:50 am
  • Updated:May 21, 2018 8:50 am

স্টাফ রিপোর্টার: স্বাভাবিক মৃত্যু হয়নি। বিষ খাইয়ে খুন করা হয়েছে দাদাকে। বিখ্যাত সাঁতারু মাসুদুর রহমান বৈদ্যর মৃত্যুর তিন বছর পর উঠল খুনের অভিযোগ। মাসুদুর রহমানকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ দায়ের করলেন তাঁর বোন। দু’পা হারানো সত্ত্বেও প্রচণ্ড প্রত্যয় নিয়ে ইংলিশ চ্যানেল পার হয়েছিলেন এই সাঁতারু। তাঁর মৃত্যুর ঘটনায় খুনের অভিযোগ দায়ের হওয়ায় আলোড়ন পড়েছে ক্রীড়ামহলে। বোনের অভিযোগ,  ২০১৫-র ২৬ এপ্রিল তাঁর দাদার মৃত্যুর পর বারবার দেহের ময়নাতদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন। তখনই তাঁদের সন্দেহ হয়েছিল যে  দাদার মৃত্যুর পিছনে অন্য কোনও কারণ রয়েছে। কিন্তু সাঁতারুর দেহের ময়নাতদন্তে রাজি হননি তাঁর স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।

মাসুদুর রহমানের বোন ও অন্যদের অভিযোগ,  প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করা হয়েছে। তাই দেহটি সাত তাড়াতাড়ি শেষকৃত্যের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। এই অভিযোগের ভিত্তিতে মাসুদুর রহমান বৈদ্যর স্ত্রী সালমা রহমান,  শাশুড়ি জানু বিবি,  শ্যালক মধু ও শ্বশুর মোজাম্মিল হক এবং এক চিকিৎসক ডা. জিয়াউল হাসান চৌধুরির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এই অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুন ও ২০১ ধারায় প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার মামলা দায়ের করেছে তিলজলা থানার পুলিশ। পুলিশের সূত্র জানিয়েছে,  ময়নাতদন্ত না হওয়ায় খুনের তদন্ত করা কিছুটা শক্ত। সেক্ষেত্রে অভিযুক্তদের জেরা ও পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তদন্ত করতে হয়। তবে আদালতের অনুমতি পেলে কবরস্থান থেকে দেহটি তুলে ফের ময়নাতদন্ত করা যায়। যেহেতু বিষ খাইয়ে খুনের অভিযোগ, তাই ভিসেরা পরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু মৃত্যুর তিন বছর পর দেহটি থেকে প্রমাণ মিলবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছে পুলিশও। মৃত্যুর আসল কারণ জানতে অভিযুক্তদের ডেকে পাঠানো হচ্ছে। নার্সিংহোমের অভিযুক্ত চিকিৎসক ছাড়াও অন্য চিকিৎসক,  কর্মীদের পাশাপাশি নার্সদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। খতিয়ে দেখা হবে ডেথ সার্টিফিকেট ও চিকিৎসা সংক্রান্ত অন্যান্য কাগজপত্র।

Advertisement

[৩০ লক্ষ পাউন্ড খরচে অভিনব ক্যাম্প, বিশ্বকাপের জন্য এলাহি আয়োজন ব্রাজিলের]

জানা গিয়েছে, সাঁতারু মাসুদুর রহমানের বোন মাজুরা রহমানই এই বিষয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন। মাসুদুর রহমান বৈদ্য আট ভাই-বোন ও মা-বাবাকে নিয়ে থাকতেন তপসিয়া সেকেন্ড লেনে। একটি দুর্ঘটনায় মাজুরার দাদা মাসুদুর রহমান বৈদ্যর হাঁটুর নিচ থেকে দু’টি পা কাটা যায়। তা সত্ত্বেও সাঁতারু হিসেবেই জীবনের লড়াই শুরু করেন তিনি। ওই অবস্থায় তিনি ইংলিশ চ্যানেল পার হয়ে আন্তর্জাতিক স্তরে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেন। ২০০১ সালে মাসুদুর তপসিয়া লেনের বাড়ি ছেড়ে কুষ্টিয়া রোডের সরকারি হাউজিংয়ে থাকতে শুরু করেন। তাঁর দু’পা না থাকায় বহু কাজ করতে অসুবিধা হত। তাই মায়ের সঙ্গে অন্য ভাই ও বোনেরা মাঝেমাঝে দাদার কাছে গিয়ে থাকতেন। ২০০৮ সালে মাসুদুরের সঙ্গে সালমা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর ওই দম্পতি কুষ্টিয়া রোডের হাউজিংয়েই থাকতেন। কিছুদিন পর ওই হাউজিংয়ের আবাসনে সালমার মা, বাবা ও ভাই গিয়ে থাকতে শুরু করেন। বাবা মোজাম্মিল হক মাঝেমাঝে থাকতেন তাঁদের মগরাহাটের বাড়িতে।

Advertisement

মাজুরার দাবি,  দাদা বেশ সুস্থই ছিলেন। সুভাষ সরোবরে সাঁতারের অনুশীলনও করতেন। ২০১৫-র ২৬ এপ্রিল বোন মনিরাকে ফোন করে মাসাদুর রহমানের অসুস্থতার খবর জানানো হয়। বলা হয়, তাঁদের দাদা অসুস্থ হয়ে নার্সিংহোমে ভরতি হয়েছেন। পরিস্থিতি আশঙ্কাজনক। দুপুর ২.২০ মিনিট নাগাদ মাজুরা নার্সিংহোমের দিকে রওনা হওয়ার সময় পথেই স্বামীর কাছ থেকে জানতে পারেন দাদার মৃত্যু হয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. জিয়াউল হাসান চৌধুরি তাঁদের আর এক দাদা মোহুমুদুর রহমানকে ডেকে মাসুদুরের মৃত্যুর খবর দেন। ভাইবোনের দাদার দেহে ময়নাতদন্তের দাবি জানালেও তা মানা হয়নি বলে অভিযোগ। তাঁদের একপ্রকার অগ্রাহ্য করেই শ্বশুরবাড়ির লোকজন সাঁতারুর শেষকৃত্যের আয়োজন করে ফেলে। দাদার মৃত্যু যে স্বাভাবিক নয়, তানিয়ে একপ্রকার নিশ্চিত ভাইবোনেরা। অভিযোগ, কুষ্টিয়া রোডে থাকা দাদার শ্বশুরবাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে বিষ খাইয়ে তাঁকে হ্ত্যা করেছে। প্রাথমিকভাবে পুলিশ জেনেছে, সুগারের রোগী ছিলেন ওই সাঁতারু। তথ্য বলছে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। ঘটনার তদন্তে নেমেছে পুলিশ।

[ব্যাটসম্যান হিসেবে নয়া চ্যালেঞ্জ বিরাটের, খেলবেন নতুন অধিনায়কের নেতৃত্বে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ