৬ চৈত্র  ১৪২৯  মঙ্গলবার ২১ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

নিজের টাকায় শবরদের জন্য স্কুল গড়েছিলেন, আন্তর্জাতিক সম্মানে ভূষিত কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল

Published by: Sandipta Bhanja |    Posted: August 7, 2020 8:08 pm|    Updated: August 8, 2020 12:02 pm

Kolkata Police constable Arup Mukherjee recieves international honor

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: গায়ে কলকাতা পুলিশের সাদা উর্দি। মাথায় হেলমেট। হাতে ওয়াকিটকি। সিগন্যালে অনবরত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করে চলেছেন। পথচলতি অনেকেই হয়তো তাঁকে এভাবে দেখছেন। আর পাঁচজন আমজনতার মতোই একেবারে সাদামাটা মানুষটি যে মনের দিক থেকে ধনী, তা কথা না বললে ঠাহর করাও দায়। কলকাতা পুলিশের সাউথ ট্রাফিক গার্ডের কনস্টেবল অরূপ মুখোপাধ্যায় (Arup Mukherjee), ঘনিষ্ঠমহলে তিনি শবরদের রক্ষাকর্তা নামেও পরিচিত। অনেকে আবার শবর পিতাও বলেন তাঁকে। কলকাতা পুলিশের সাদা উর্দির অন্দরের মানুষটা প্রচারের আড়ালেই যে একনিষ্ঠভাবে সমাজসেবা করে চলেছেন, এবার তারই পুরস্কার হিসেবে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেলেন।

কলকাতা পুলিশের (Kolkata Police) ট্রাফিক কনস্টেবল অরূপ মুখোপাধ্যায়ের নাম উঠল ‘ব্র্যাভো ইন্টারন্যাশনাল বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে’। নেপথ্যে কারণ? এই মানুষটি বিগত এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নিজের বেতনের টাকায় নিজের গ্রামে শবরদের জন্য একটি স্কুল চালাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, এমন করোনা আবহে লকডাউনের মধ্যে কাজের দায়িত্বের মাঝেই কলকাতা থেকে ছুটে গিয়ে পুরুলিয়ার প্রায় ৪ হাজার শবর সম্প্রদায়ের মানুষের মুখে খাবার তুলে দিয়েছিলেন।

[আরও পড়ুন: মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে তৃণমূলে যোগ ‘ফুডম্যান’ চন্দ্রশেখর কুণ্ডুর]

গ্রামে থাকার সময় অরূপ খুব কাছ থেকে আশেপাশের শবর পরিবারগুলির চরম দুর্দশার দিন দেখেছেন। সেখান থেকেই সিদ্ধান্ত নেন চাকরি পেয়ে প্রথমে সেই সমস্ত মানুষদের জন্য কিছু করবেন। পুরুলিয়ার মানবাজার এলাকার পুঞ্চায় অরূপ বাবু তৈরি করেছেন ‘পুঞ্চা নবদিশা মডেল স্কুল’। সে স্কুলে যেসব শিশুরা পড়ে, তাঁদের অনেকের বাবা-মাকেই চুরি-ডাকাতির অভিযোগে জেলে থাকতে হয়েছে৷ ১৯৯৬ সালে অরূপ কলকাতা পুলিশে চাকরি পান। তাঁর বাবাও রাজ্য পুলিশের কর্মী ছিলেন। চাকরি পেয়েই কথামতো কাজ করলেন। যে শবর পরিবারগুলির উপর অপরাধীর তকমা সাঁটা হত, তাদের সন্তানরা যাতে ভবিষ্যতে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারে, সেই দায়িত্বই নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছেন।

নিজের জেঠুর কাছ থেকে কয়েক কাঠা জমি পেয়ে সেখানেই স্কুল তৈরি করে ফেলেন। এখন সেই স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় ১২৬। তাঁদের খাওয়া-দাওয়া, পোশাক, পড়াশোনা পুরোটাই নিজের পকেটের টাকায় চালান অরূপবাবু। যদিও সহৃদয়বান কয়েকজন ব্যক্তির কাছ থেকে সাহায্য পান। কিন্তু মাসের শেষে নিজের কিংবা পরিবারের জন্য যৎসামান্য টাকাই পড়ে থাকে। তাতেও বিন্দুমাত্র ক্ষোভ কিংবা দুঃখ নেই তাঁর। আজীবন এইভাবেই মানবসেবা চালিয়ে যেতে চান।

সরকারের তরফে এখনও তেমন কোনও পুরস্কার না এলেও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান তাঁকে একাধিকবার সম্মানিত করেছে। এবার স্বীকৃতি এল সুদূর আন্তর্জাতিক মহল থেকে। ‘ব্র্যাভো ইন্টারন্যাশনাল বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে’ নাম উঠল কলকাতার পুলিশের এই কনস্টেবলের।

[আরও পড়ুন: এবার তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের পাশে রাজ্য, বাঙ্গুরে ডেডিকেটেড কোভিড বেডের ব্যবস্থা]

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে