কলহার, মুখোপাধ্যায়: শহরে ফের সক্রিয় প্রতারণা চক্র। বাবার জটিল অসুখের অজুহাত দিয়ে কেপমারির অভিযোগ। ডলার দেওয়ার বদলে ভিমবার ভরতি ব্যাগ গছিয়ে দিয়ে উধাও অভিযুক্ত। অভিযুক্তের নাম মহম্মদ বিলাল। অন্যদিকে প্রতারিত ব্যক্তি হলেন আবদুল ফালিম। অভিযোগ, গত ৯ অক্টোবর ২০ ডলারের ১০০পিস নোট দেওয়ার বদলে ভিমবার ও কাগজে পরিপূর্ণ ব্যাগ গছিয়ে উধাও হয়ে যায় বিলাল। ঘটনার প্রাথমিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠে বিধাননগর দক্ষিণ থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন আবদুল ফালিম। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে পুলিশ এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে দু’জনকে গ্রেপ্তার করেছে। ধৃতরা হল আবদুল ফারাত ও আবু দাইয়া।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতদের হেফাজতে পেলেই জেরা করে মূল অভিযুক্তের সন্ধান পাওয়া যাবে। জানা গিয়েছে, মহম্মদ ফালিমের এক আত্মীয়ের অসুস্থ। দীর্ঘদিন ধরে চিত্তরঞ্জন হাসপাতালে ভরতি রয়েছেন তিনি। তাই নিয়মিতভাবে হাসপাতালে যেতে হয় ফালিমকে। সেখানেই প্রতারক বিলালের সঙ্গে তাঁর পরিচয়। বাবার অসুস্থতাজনিত কারণেই তার হাসপাতালে আসা। এমনটাই ফালিমকে বলেছিল বিলাল। প্রায়ই দেখা হওয়ার কারণে মাঝেমধ্যেই তাদের গল্পগুজব চলত। একদিন ফালিমকে বিলাল জানায়, তার বাবার শারীরিক অবস্থা একদম ভাল নেই। চিকিৎসার জন্য একলক্ষ টাকার প্রয়োজন । তার কাছে ডলার থাকলেও লাখের কাছাকাছি টাকা নেই। তাই ফালিম যদি তাকে লাখ খানেক টাকা দেন, তাহলে ২০ ডলারের ১০০টি নোট তাঁকে দিয়ে দেবে বিলাল। ভারতীয় টাকায় যা দেড়লক্ষের কাছাকাছি। আবদুল ফালিম এইকথায় একপ্রকার নিমরাজি হয়েই মত দেন ফালিম। গত ৯ সেপ্টেম্বর টাকা ও ডলার হাতবদলের দিন ঠিক হয়। ওই দিন বিলালের পরামর্শ মাফিক ব্যাগ ভরতি লাখ টাকা নিয়ে বিধাননগরের পরিবেশ ভবনের সামনে আসেন ফালিম। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় বিলাল। অপরিচিত দুই ব্যক্তিকে দেখে প্রথমে সন্দেহ হয়েছিল ফালিমের। তবে বিলাল জানায়, ওরা তার ভাই। এরপরেই ব্যাগ হাতবদলের পালা। পরিবেশ ভবনের সামনে এতগুলি টাকা নিয়ে তো গোনা সম্ভব নয়, নিরাপদও নয়। তাই তারা পরস্পর ব্যাগ বদল করে নেয়। ডলারের ব্যাগ চলে যায় ফালিমের হাতে। আর টাকার ব্যাগ চলে যায় বিলালের হাতে। বলা বাহুল্য, ব্যাগ পেয়েই দ্রূততার সঙ্গে ঘটনাস্থল ছাড়ে বিলাল। এদিকে বাড়িতে এসে ব্যাগ খুলতেই ফালিমের চোখ কপালে ওঠে। কোথায় ডলার? ব্যাগের মধ্যে বাসন মাজার ভিমবারের সঙ্গে খবরের কাগজ ভরে দিয়েছে। সঙ্গেসঙ্গেই বিধাননগর দক্ষিণ থানায় প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন তিনি।এরপরেই তদন্তে নামে পুলিশ। ১৯ দিনের মাথায় এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হল। ধৃতদের জেরা করেই মূল অভিযুক্ত বিলালের খোঁজ শুরু হবে।