সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: তাঁদের হাতেই শরীরের রোগ সারে। ওষুধে কাজ হয়। সেরে ওঠে মানুষ। প্রাণ ফিরে পায় মরণাপন্ন জীবন। ডাক্তারির মতো পেশাকে আপন করে নিয়েছেন সেবার তাগিদে। অথচ এই শহরে মাথা গোঁজার ঠাঁই পাচ্ছেন না চার যুবক। কেন? কারণ তাঁদের পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে একটি শব্দ। মুসলিম। এ কারণেই ভাড়াবাড়ি থেকে উঠে যেতে বলা হয়েছে আফতাব আলম, মোজতাবা হাসান, নাসির শেখ ও শওকত শেখকে।
[শুভদৃষ্টি নয়, কীর্তনের সুরই মেলাল দুই দৃষ্টিহীনের হৃদয়কে]
সদ্য মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে পাশ করেছেন চারজন। শহরের বিভিন্ন হাসপাতালে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। রোগীদের সুস্থ জীবনে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য দিন-রাত খাটেন। অথচ তাঁদের জীবনেই শান্তি নেই। একে তো অবিবাহিতদের ভাড়াবাড়ি পাওয়া দুষ্কর, তার উপরে তাঁদের নামের জন্য বেশিরভাগ মানুষ ঘর ভাড়াই দিতে চান না। অনেক কষ্টে কুঁদঘাট এলাকায় একটি ভাড়াবাড়ি মেলে। কিন্তু সেখানেও টিকে থাকা মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাড়িওয়ালার তরফ থেকে অবশ্য কোনও আপত্তি নেই। আপত্তি তুলেছেন আশেপাশের কয়েকজন মানুষ। আপত্তি তাঁদের প্রথম থেকেই ছিল। সন্ত্রাসবাদী অপবাদও শুনতে হয়েছে তাঁদের কাছ থেকে। তাও সব উপেক্ষা করেই থাকছিলেন চার যুবক। কিন্তু সম্প্রতি তাঁদের এক বন্ধু ভাড়াবাড়িতে দেখা করতে আসেন। তাঁকে পর্যন্ত হেনস্তা করা হয়। পরিচয় পত্র চাওয়া হয়। এ বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ জাহির করেছেন মোজতাবারা।
ঘটনার খবর পেয়ে এগিয়ে আসে সংহতি অভিযান নামের এক সংগঠন। সংগঠনের সদস্য দ্বৈপায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তাঁদের পক্ষ থেকে এলাকায় গিয়ে ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হয়। যে প্রতিবেশীরা হুমকি দিয়েছিলেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। তাঁর আশ্বাস, আর সেই প্রতিবেশীরা চার ডাক্তারকে উত্যক্ত করবেন না। তাও আরও একবার তাঁদের সঙ্গে কথা বলা হবে। সোশ্যাল মিডিয়ার বিপ্লবের ফলেই এমনটা সম্ভব হয়েছে। এভাবেই একসঙ্গে লড়াই করে সমাজের ব্যাধি দূর করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন দ্বৈপায়ণ।
[হাওড়ায় লাইনচ্যুত ইস্পাত এক্সপ্রেস, চূড়ান্ত দুর্ভোগের কবলে দূরপাল্লার যাত্রীরা]