Advertisement
Advertisement

Breaking News

bridge

কলকাতাবাসীর জন্য সুখবর, মাঝেরহাট ব্রিজ চালু হবে পুজোর আগেই

৭৬ মিটার ঝুলন্ত ইস্পাতের ফ্রেম বসতেই লক্ষ্যপূরণ।

Majherhat Bridge of Kolkata will be reopened before Durga Puja
Published by: Paramita Paul
  • Posted:July 18, 2020 9:36 am
  • Updated:July 18, 2020 9:36 am

কৃষ্ণকুমার দাস: মাঝেরহাট ব্রিজের নয়া নির্মাণে রেললাইনের উপরের ৭৬ মিটার ঝুলন্ত ইস্পাতের পরিকাঠামো বসানো মাত্রই সেতু নির্মাণ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা কার্যত সম্পূর্ণ করে ফেলল রাজ্য সরকার। বর্ধমান রোডের দিক থেকে শুরু শেষ হওয়া এই দানবীয় ফ্রেম শেষ হল আলিপুর মিন্টের কাছে গিয়ে। মাঝে অবশ্য দু’টি পিলারের সাপোর্ট রয়েছে। ছয় মিটার পর পর গার্টার দিয়ে পৃথক পৃথক অংশ জুড়ে ৭৬ মিটার ঝুলন্ত অংশ তৈরি করেছেন ইঞ্জিনিয়াররা। জুনের ২ তারিখ থেকে এই ঝুলন্ত অংশের কাজ শুরু করেন পূর্ত দপ্তরের বিশেষজ্ঞরা। মাঝরাতে দপ্তরের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে এই ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্রিজের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অংশের কাজ শেষ করলেন স্বয়ং পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস।
পুজোর আগেই অবশ্য ভেঙে পড়া ব্রিজ নতুনভাবে নির্মাণ সম্পূর্ণ করার টার্গেট রয়েছে জানিয়ে পূর্তমন্ত্রী জানান, “৬৫০ মিটার দীর্ঘ ব্রিজের এই ৭৬ মিটার অংশই ছিল সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু সেই ঝুঁকি নিয়েও টার্গেট ও সময় ধরে যে কাজ হল তার কৃতিত্ব ইঞ্জিনিয়ার ও পূর্ত দপ্তরেরর কর্মীদের।” তবে কলকাতায় করোনার আতঙ্কে জেলা থেকে আসা ব্রিজের নির্মাণ কর্মীরা মাঝে মধ্যে না বলেই বাড়ি চলে যাচ্ছেন বলে বিব্রত সরকার। তাই এই কর্মী ‘পালিয়ে যাওয়া’য় ব্রিজের কাজে একটু হলেও প্রভাব ফেলছে বলেও স্বীকারও করেছেন পূর্তমন্ত্রী। তবে পুজোর আগে মাঝেরহাট ব্রিজ ফের চালু হলে দক্ষিণ কলকাতা ও দক্ষিণ শহরতলির বাসিন্দাদের তিন বছরের দুর্ভোগ কাটবে।

[আরও পড়ুন : মাধ্যমিকের গ্লানি ভুলিয়ে দিল উচ্চমাধ্যমিকের ফল, কৃতীদের ফুল-মিষ্টি পাঠিয়ে শুভেচ্ছা মমতার]

ব্রিজের সঙ্গেই নির্মাণ সম্পূর্ণ হচ্ছে খিদিরপুরের নিকাশির বৃহৎ ও মোটা পাইপ বসানোর কাজ। মাঝেরহাটের পিলারের পাশ দিয়েই যাচ্ছে বিশুদ্ধ পানীয় জলের লাইনও। সেই কাজও দু’দিন আগে পরিদর্শন করে নির্মাণে আরও গতি আনতে নির্দেশ দিয়েছেন কলকাতা পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। ব্রিজের নিচের নিকাশি পাইপ বসানো সম্পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত খিদিরপুর, মোমিনপুর ও ইকবালপুরের বৃষ্টি জমা জলের দুর্ভোগ কিছুতেই কমবে না বলে এদিন স্বীকার করেন পুরমন্ত্রী। ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর বিকেলে আচমকাই ভেঙে পড়ে শিয়ালদহ-বজবজ সেকশনের রেল লাইনের উপরের প্রায় পাঁচ দশকের পুরনো মাঝেরহাট ব্রিজ। দুর্ভোগে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন বেহালা, ঠাকুরপুকুর, ডায়মন্ডহারবার থেকে শুরু করে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিস্তৃত জনপদের কয়েক লক্ষ বাসিন্দা।

Advertisement

[আরও পড়ুন : পাখির চোখ একুশের ভোট, রাজ্যবাসীর পরামর্শ নিতে নতুন ই-মেল আইডি চালু দিলীপের]

কেন্দ্রীয় সরকারের অপেক্ষায় না থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকেই মুখ্যমন্ত্রী পূর্ত দপ্তরকে দিয়ে নতুন ব্রিজ তৈরির কাজ শুরু করে দেন। টার্গেট নেওয়া হয় সেপ্টেম্বরেই নির্মাণ সম্পূর্ণ করার। মাঝেরহাটে শিবির বানিয়ে কাজ শুরু করেন পূর্তদপ্তরের রাস্তা বিভাগের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার (হেড কোয়ার্টার) সুস্মিত বন্দ্যোপাধ্যায়।
রেলের উপরের অংশের নির্মাণের জন্যও রাজ্য সরকার অর্থ মঞ্জুর করলেও রেল লাইনের উপরে সেতু বানাতে কেন্দ্রীয় সরকার অনুমতি দিয়ে দীর্ঘ একবছর সময় নেয়। এমনকী, ব্রিজের নির্মাণে দ্রুত সবুজ সংকেত দিতে রেলমন্ত্রী পীযূষ গোয়েলকে চিঠি লেখেন মুখ্যমন্ত্রী। দু’দফায় মাঝেরহাট ব্রিজের নকশা পরিবর্তন করায় রেল। রেলের অংশ বাদ দিয়ে সেতুর অবশিষ্টাংশ পূর্তমন্ত্রী নির্মাণ করিয়ে অপেক্ষা করছিলেন কেন্দ্রের অনুমতির জন্য। শেষে প্রায় একবছর দেরিতে গত মার্চ মাসে রেলমন্ত্রক ব্রিজের নকশা অনুমোদন করে।

Advertisement

কিন্তু লকডাউনের জেরে মাঝে প্রায় দেড় মাস নির্মাণ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। ফের মে মাসের শুরুতে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি মিলতে স্বল্পসংখ্যক শ্রমিক ও ইঞ্জিনিয়ার নিয়ে কাজ শুরু করে। মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার, দু’দফায় রাতে বজবজ সেকশনের ‘পাওয়ার ব্লক’ করে ৭৬ মিটার ইস্পাতের পরিকাঠামো তোলার কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে। ব্রিজের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার সুস্মিত বন্দ্যোপাধ্যায়রা এদিনও সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠকে বসেন, ঠিক হয় কবে কবে অবশিষ্ট কোন অংশের ঢালাই হবে। অ্যাপ্রোচ রোডগুলি কবে কোনটি ধরা হবে। আসলে প্রতিটি দিনেই মাঝেরহাট সেতুর নবপর্যায়ের একটি করে নির্দিষ্ট টার্গেট নির্মাণের টার্গেট বেঁধে দিয়েছেন পূর্তমন্ত্রী। স্বয়ং অরূপের কথায়, “লকডাউন, করোনা ও আমফান উপেক্ষা করেই জীবনের ঝুঁকি নিয়েই ইঞ্জিনিয়াররা মাঝেরহাট ব্রিজ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর টার্গেট সম্পূর্ণ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।”

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ