সুব্রত বিশ্বাস: এ যেন অ্যাসিড দগ্ধ তরুণীকে সার্জারি করে দেওয়া হল নবজীবন। তারই নজির গড়ল রেলের মালদহ ডিভিশন।
গত ১৪ ডিসেম্বর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) বিরোধী আন্দোলনে পুড়ে ছারখার হয়ে গিয়েছিল হাওড়াগামী মালদহ ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের এগারোটি রেক। জঙ্গিপুরে জ্বলন্ত রেকের ছবি ছড়িয়ে পড়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। ক্ষতির খতিয়ানে বড়সড় ধাক্কা খেয়েছিল রেল। কিন্তু দমে যায়নি রেল।
[আরও পড়ুন: CAA বিরোধিতায় যৌথ আন্দোলনের ডাক, অবিজেপি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের চিঠি মমতার]
মালদহ রেল কর্তাদের বলেন, “অ্যাসিড দগ্ধ মেয়ের মুখ দেখে অসহায় বাবা-মায়ের যে দশা হয়, আমাদের মানসিকতাও সেদিন তেমনই ছিল। কিন্তু দগ্ধ মেয়ের চিকিৎসায় কোনও ত্রুটি রাখেন না পরিবার, আমরাও সেই জ্বলে যাওয়া রেক মালদহ ডিপোয় নিয়ে আসি ১৮ ডিসেম্বর।” পরদিনই শুরু হয় মেরামতির কাজ। দিনরাত এক করে চলে পরিকাঠামো বদলানোর কাজ। সমস্ত জানলার কাচ ভাঙা, বেসিন, সিট, জলের ট্যাপ, আয়না, দরজার হ্যান্ডেল, প্রেসার গেজ, ভিনাইল র্যাপিং সব পুড়ে ছাই। বাকি ভেঙে চুরমার।
সব কিছুই বদলে ফেলা হল যুদ্ধকালীন তৎপরতায়। এরপর নতুনভাবে লাগানো হল শৌচালয়ের ফ্লোর ট্যাপ, ভিনাইল র্যাপিং, ডুপ্লেক্স ভালভ, ফ্লাস, টাইম টেবিল। ইউনিফর্ম বোর্ডও লাগানো হল। যা এর আগে ছিল না। চারদিনে এই রেক একেবারে ঝাঁ চকচকে। ‘উৎকৃষ্ট’ রেকের তকমা গায়ে চাপিয়ে সোমবারই এই রেক আবার রওনা দিল হাওড়ার দিকে। মালদহ স্টেশনে দাঁড়িয়ে রেল কর্তাদের স্বস্তি, এ যেন প্লাস্টিক সার্জারি করে মেয়ের রূপ আরও ভালভাবে ফিরিয়ে আনা গেল। মেয়ে বাপের বাড়ি ছেড়ে চলল শ্বশুরবাড়ি।