Advertisement
Advertisement
amphan

‘ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে রয়েছি, এখন রাজনীতি করবেন না’, কেন্দ্রকে অনুরোধ মমতার

'পরিস্থিতি কীভাবে সামলাব তা ভাবতে পারছি না', বলছেন মুখ্যমন্ত্রী।

Mamata Banerjee says cyclone amphan damaged west bengal
Published by: Soumya Mukherjee
  • Posted:May 20, 2020 10:01 pm
  • Updated:May 20, 2020 10:11 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘পুরো ঝড়টাই বাংলার উপর দিয়ে গিয়েছে। এর ফলে প্রচুর ক্ষতি হয়ে গেল।’ বলে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের কোথায় কী ক্ষতি হয়েছে তা দু-তিনদিনের আগে জানা যাবে না বলেও উল্লেখ করে তিনি। বলেন, ‘একটা কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষকে নিয়ে মোকাবিলা করছি আমরা। আমাদের এখানে দিঘাতে যতটা হিট করবে ভেবেছিলাম ততটা হয়নি। আগে থেকে প্রশাসন ব্যবস্থা নেওয়ায় অনেক বড় বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়া গিয়েছে। পাঁচ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কারণে রক্ষা করে গিয়েছে। তবে দুটো ২৪ পরগনা পুরো ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। অনেক জায়গায় মানুষ গাছ পড়ে মারা গিয়েছেন। আমি নবান্নে নিজের ঘরেও ঢুকতে পারিনি। পুরো বিল্ডিংয়ের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এখনও পর্যন্ত প্রায় আট জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা ও উত্তর ২৪ পরগনার বিস্তীর্ণ এলাকার পরিস্থিতি খুবই ভয়াবহ। সব সর্বনাশ হয়ে গিয়েছে। আমরা নিজেরা খুব স্তম্ভিত। খুব খারাপ লাগছে। যা দেখলাম তাতে করোনার থেকেও বড় বিপর্যয় হয়ে গেল।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজকে যেটা হল তা ১৯৩৭ সালের কথা মনে করিয়ে দিল। কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আজকে যে তাণ্ডব দেখেছি তাতে খুব আঘাত পেয়েছি। কেন্দ্রীয় সরকারের কাজে আবেদন থাকবে এই সময় রাজনীতি না করে বাংলার পাশে দাঁড়ান। আমরা যেখানে কাজ করছি সেই নবান্নেরও অনেক ক্ষতি হয়েছে। আমি সাধারণ মানুষকে আবেদন করব এখনই রিলিফ ক্যাম্প ছেড়ে কোথাও যাবেন না। সরকারি আধিকারিকদের পরামর্শ মেনে চলুন।  পরিস্থিতি সামাল দিতে ১০-১২ লাগবে। সেই সময়টা ধৈর্য ধরে থাকুন। এখনও কয়েকটি জায়গায় তাণ্ডব চলছে। বারাকপুর, বারাসত, বসিরহাট ও গঙ্গাসাগর সাব ডিভিশন, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুরের অবস্থাও খুব খারাপ। রাস্তাঘাট সবই প্রায় বন্ধ। এখনও আমি ভাবতে পারছি না সবকিছু ঠিক কী করে করব? যা খবর পাচ্ছি তাতে সব কিছু নতুন করে শুরু করতে হবে। এত ঝড় হবে কেউ ভাবতে পারেনি। আবহাওয়াবিদরা বুঝতে পারেননি। চারিদিকে ব্রিজ ভেঙে গিয়েছে। নদীবাঁধ ভেঙেছে। সবার কাছে আবেদন করব এই সময়ে বাংলার পাশে এসে দাঁড়ান। দয়া করে এইসময়ে রাজনীতি না করে মানুষের পাশে দাঁড়ান। রামকৃষ্ণ মিশন ও ভারত সেবাশ্রমের কাছে ভয়াবহ এই সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়াতে অনুরোধ করব। আমাদের সব পঞ্চায়েতগুলিকেও এই কাজে মনোনিবেশ করতে বলব। কৃষি থেকে শুরু করে সব ক্ষেত্রে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবকিছু ছেড়ে সেগুলো ঠিক করতে হবে।’

Advertisement

[আরও পড়ুন: করোনা যোদ্ধাদের কুর্নিশ, দুর্গাপুজোর থিম সং গাইবেন দুই ‘সুরেলা’ পুলিশ]

তাঁর কথায়, ‘আগে থেকে ব্যবস্থা নেওয়ায় মৃত্যুর সংখ্যা হয়ত কমানো গেলেও সব মিলিয়ে কঠিন পরিস্থিতি বাংলার জন্যে। ওড়িশা বেঁচে গিয়েছে। দিঘার ক্ষতি যতটা ভেবেছিলাম, তা হয়নি। কিন্তু, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা ধ্বংস হয়ে গেছে। রাস্তা, ঘরবাড়ি ও ব্রিজ সব ভেঙে পড়েছে। তবে এখনও সব খবর পাইনি। অনেক মানুষ গাছ ও বাড়ি ভেঙে মারা গিয়েছেন। কেউ কেউ আহত হয়েছেন। বিদ্যুৎ নেই। জল নেই। পুকুরগুলি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে। দিকে দিকে ধ্বংসের চিহ্ন। বিভিন্ন জায়গায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। আস্তে আস্তে হয়ত ঝড়ের দাপট কমবে। কিন্তু, এর মধ্যে ধানের ক্ষেত থেকে শুরু করে সব নষ্ট হয়ে গিয়েছে। খুব খারাপ লাগছে। বুলবুলের সময় মেরামত করেছিলাম। আজ যেটা হল, সেটা ধ্বংস। করোনার জন্যে এমনিতেই রাজ্যের আয় বন্ধ। তারপর যা ক্ষতি হল তা হয়তো কয়েক হাজার কোটিতে যাবে।’

Advertisement

রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীবা সিনহা বলেন, ‘আগামীকাল আশা করছি রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কী কী ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা মোটামুটি জানা যাবে। তারপর পরশু থেকে সংস্কারের কাজ শুরু করতে পারব বলে আশা করছি।’

[আরও পড়ুন: বাঘ-সিংহ যে যার ঘরে, নাছোড় হরিণ-জেব্রা, আমফান তাণ্ডবে চিন্তায় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ