ঘটনাস্থলে দমকলমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
দিশা ইসলাম, সল্টলেক: মহানগরে ফের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড। সোমবার রাতে অভিজাত সল্টলেক এলাকার বাড়ির একাংশ পুড়ে যায়। আর তাতেই মৃত্যু হল গৃহকর্তার। চলতি মাসেই কলকাতার একাধিক জায়গায় আগুন লেগেছিল। বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে গিয়েছিল নারকেলডাঙার একাধিক ঝুপড়ি।
সোমবার রাত ১০টার পর আগুন লাগে সল্টলেকের ডিএ ব্লকের ৪ নম্বর বাড়িতে। সেই আগুনেই ঝলসে মারা গেলেন গৃহকর্তা দেবর্ষি গঙ্গোপাধ্যায় (৪৭) ওরফে বাবুয়া। তিনি পেশায় রেলের ঠিকাদার ছিলেন। কীভাবে ওই বাড়িতে আগুন লাগল? তাই নিয়ে ধন্দ রয়েছে। ঘটনার খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু। তিনি ওই বাড়ির লোকদের সঙ্গে কথাও বলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, সল্টলেকের ওই তিনতলা বাড়িতে বৃদ্ধা মা তপতী গঙ্গোপাধ্যায়, স্ত্রী নিবেদিতা গঙ্গোপাধ্যায় ও বছর ছয়েকের মেয়েকে নিয়ে থাকতেন বাবুয়া। বাড়ির নিচের তলায় একটি টায়ারের দোকান রয়েছে। দুই ও তিনতলায় থাকেন গঙ্গোপাধ্যায় পরিবার। গতকাল সন্ধ্যা থেকে তিনতলার ঘরে একাই সময় কাটাচ্ছিলেন বাবুয়া। দোতলার ঘরে মৃতের স্ত্রী নিবেদিতা মেয়েকে খাওয়াচ্ছিলেন। পাশের ঘরে ছিলেন বয়স্ক মা। তখন প্রতিবেশীরা তিনতলার পিছনের একটি ঘর থেকে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখেন। অন্যরা বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেও ভিতরেই আটকা পরে যান দেবর্ষি গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁকে বার করা সম্ভব হয়নি।
খবর পেয়ে দমকলের দু’টি ইঞ্জিন আধ ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নেভায়। পরে বাড়ি থেকে মৃতদেহ বার করা হয়। আজ মঙ্গলবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হবে বলে খবর। আগুন লাগার কারণ স্পষ্ট নয়। তবে দমকলের প্রাথমিক অনুমান জ্বলন্ত সিগারেটের থেকে অগ্নিসংযোগ ঘটতে পারে। তিনতলার ঘরে ফলস সিলিংয়ের কাজ চলছিল। সেই দাহ্যবস্তু থেকে আগুন মুহূর্তের মধ্যে ভয়ঙ্কর আকার নেয় বলে অনুমান। অগ্নিসংযোগের আসল কারণ খতিয়ে দেখছে বিধাননগর উত্তর থানায় পুলিশ। অগ্নিকাণ্ডের সময় দেবর্ষিবাবু মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন কিনা, তদন্তে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আজ অকুস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করবে ফরেনসিক দলও।
দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, “মৃত্যুর ঘটনাটি খুবই দুর্ভাগ্যজনক। আগুন লাগার আসল কারণ জানতে ফরেনসিক তদন্ত করা হবে।” বাবুয়ার শালক জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আগুন লাগার মুহূর্তের মধ্যে জামাইবাবুকে তিনতলার ঘর থেকে বার করে আনার চেষ্টা হয়। কিন্তু আগুনের লেলিহান শিখায় তা সম্ভব হয়নি। আগুনে ঝলছেই মৃত্যু হয়েছে।” ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2025 Sangbad Pratidin Digital Pvt. Ltd. All rights reserved.