সুব্রত বিশ্বাস: মা স্বপ্ন দেখেন মেয়ে পড়াশুনো শিখে অনেক বড় হোক। আর তার জন্য খামতি রাখেননি। স্বামীর মৃত্যুর পর আয়ের খোঁজে মুম্বই পাড়ি দেন। পরিচারিকার কাজ করে মেয়ের পড়শোনা ও মাসিক খরচ পাঠিয়ে দিতেন ভাইয়ের হাতে। সেই টাকাতেই বর্ধমান কর্ড শাখার মশাগ্রামে মামার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা করছিল পম্মি সাহনি(১৬)। মশাগ্রামের জামালপুর হাই স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। মামা সুরজ সাহনি ও মামি সংগীতার কাছে নামেই প্রতি পালিত হচ্ছিল সে। আদপে বাড়ির কাজ করেই পরিচারিকার মতো জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে পম্মি। তবুও রেহাই পায়নি মামা-মামির অত্যাচারের হাত থেকে।
[উচ্চ মাধ্যমিকের দায়িত্ব থেকে অপসারিত ময়নাগুড়ির প্রধান শিক্ষক]
মা নিয়মিত খরচ পাঠালেও তাতে দুধে-ভাতে থাকার স্বপ্ন ছিল না। মার আর মার। তবুও ষোড়শীর অদম্য ইচ্ছা শিক্ষা লাভ করে নিজের পায়ে দাঁড়ানো। তবেই মায়ের ইচ্ছা পূরণ হবে। কিন্তু মামা-মামি তা চায় না। শুধু মাসোহারাটুকু হাতানোর অপেক্ষা। তার জন্য পম্মিকে একেবারে বাড়িছাড়া করতে এক ফন্দিও আঁটে তারা। স্কুল ছুটি। মুম্বইয়ে মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার গল্প ফাঁদে মামা-মামি। বৃহস্পতিবার পম্মিকে নিয়ে দু’জনেই আসে হাওড়ায়। এর পর পম্মিকে প্ল্যাটফর্মে বসিয়ে দু’জনেই হাওয়া হয়ে যায়।
পম্মির কান্নায় সন্দেহ হয় আরপিএফ কর্মীদের। জিজ্ঞাসাবাদে মামা-মামিকে খুঁজে না পাওয়ার কথা জানায় সে। এর পর অ্যাড্রেস সিস্টেমে ঘোষণা করে পম্মিকে নিয়ে হাওড়া স্টেশনে খোঁজ চালায় আরপিএফ। তন্নতন্ন করে খোঁজ না পাওয়ায় সন্দেহ হয় তাঁদের। এর পরই চাইল্ড লাইনের হাতে তাকে তুলে দেওয়া হয়। আরপিএফ ইন্সপেক্টর মিহির দাসের কথায়, অমানবিক কাহিনি। মায়ের পাঠানো টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনায় এক ষোলো বছরের মেয়েকে হাওড়া স্টেশনে ফেলে যায় মামা-মামি। পম্মির আবেদন, সে পড়তে চায়। থাকতে চায় মায়ের সঙ্গে। সেই ব্যবস্থা করার চেষ্টা চলছে।
[বৃদ্ধ দম্পতির অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে সর্বস্ব লুট, ধৃত আয়া]
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.