Advertisement
Advertisement

Breaking News

‘সান্তার’ জোড়া উপহারে ফিরল শিশুর বাকশক্তি!

দুর্ঘটনার আকস্মিকতায় বাকশক্তি হারিয়ে ফেলেছিল আট বছরের বালক।

Mute child speaks on Christmas
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:December 25, 2018 9:16 am
  • Updated:December 25, 2018 9:46 am

গৌতম ব্রহ্ম: একটা ফুটবল। একটা খেলনা গাড়ি। আর অনেকটা শুভেচ্ছা। ভালবাসার জোড়া উপহার সান্তা ক্লজ হয়ে ফিরিয়ে দিল আট বছরের এক শিশুর বাকশক্তি। সঞ্জীব কুমার। বাড়ি বিহারের ভাগলপুরের চম্পানগর গ্রামের দুর্গাসার লেনে। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে সঞ্জীব মেলা থেকে বাড়ি ফিরছিলএ কজনের বাইকের পিছনে বসে। পিছন থেকে সঞ্জীবদের বাইকটিকে ধাক্কা মারে একটি গাড়ি। গুরুতর জখম হয় সঞ্জীব। লিভার-সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রাণে বাঁচলেও দুর্ঘটনার আকস্মিকতায় বাকশক্তি হারিয়ে ফেলে আট বছরের বালক।

দক্ষিণ শহরতলির মুকুন্দপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু হয় তার। কিন্তু, অনেক চেষ্টা করেও কেউ তাকে কথা বলাতে পারছিল না। বাবা শিবকুমার, মা নিলুদেবী আপ্রাণ চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছিলেন। এই সময়ই সঞ্জীবকে দেখেন ‘মেক এ উইশ ফাউন্ডেশন’-এর স্বেচ্ছাসেবকরা। নীলুদেবীর মুখে সঞ্জীবের দুর্ঘটনাগ্রস্ত হওয়া থেকে বাকশক্তি নষ্ট হওয়া, সবটাই শোনেন তাঁরা। শুরু হয় কাউন্সেলিং। ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সাহানা সেন জানালেন, প্রথমে শিশুটি আমাদের দেখে বিরক্ত হচ্ছিল। মুখ ঘুরিয়ে নিচ্ছিল। কিন্তু স্বেচ্ছাসেবকরা হাল ছাড়েননি। ধৈর্য ধরে কাউন্সেলিং চালিয়ে গিয়েছেন। প্রথমে একটি ছোট্ট খেলনা গাড়ি দেওয়া হয় সঞ্জীবকে। এরপর শুরু হয় গল্প বলা। আস্তে আস্তে সাড়া মিলতে থাকে। একদিন সঞ্জীবের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ড্রইং খাতা আর মোম রং। ঘুরতে থাকে সঞ্জীবের হাত। স্পষ্ট হতে থাকে ছবি। বাড়তে থাকে মুখের আলো। অবশেষে শাপমুক্তি! ছবি শেষে সঞ্জীবের সামনে ফাউন্ডেশনের তরফে প্রশ্ন রাখা হয়, “কী উপহার চাও তুমি?” বুলি ফোটে শিশুর মুখে। জানায়, সে একটা ফুটবল আর রিমোট কন্ট্রোল চালিত খেলনা গাড়ি চায়। ছেলের মুখে কথা শুনে কেঁদে ফেলেন নীলুদেবী। জানান, “দু’মাস ছেলেটার মুখ থেকে হাজার চেষ্টা করেও একটা শব্দ বের করতে পারিনি। ডাক্তার, নার্সরাও কম চেষ্টা করেননি। কিন্তু সফল হলেন ফাউন্ডেশনের দিদিরা।”

Advertisement

পাভলভ হাসপাতালের সাইকিয়াট্রিস্ট ডা. শর্মিলা সরকার জানালেন, “দুর্ঘটনার কবলে পড়লে অনেক সময় ‘সাইকোলজিক্যাল ট্রমা’ হয়। তাতে অনেকে বাকশক্তি হারায়, যাকে বলে ‘মিউটিজম’। অনেকের স্মৃতি লোপ পায় (অ্যামনেশিয়া)। এই শিশুটির ক্ষেত্রে সম্ভবত তাই হয়েছিল। প্রিয় উপহার তার বাকশক্তি ফিরিয়ে দিয়েছে।” ৩০ নভেম্বর ইচ্ছেপূরণ হয়। ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে সঞ্জীবের হাতে তুলে দেওয়া হয় জোড়া উপহার। ফুটবল ও রিমোট কন্ট্রোল চালিত গাড়ি। উপহার হাতে পেয়ে আনন্দে আত্মহারা হয়ে যায় আট বছরের শৈশব। নীলুদেবী ও শিবকুমারের মুখে তখন হাজার ওয়াটের হ্যালোজেন জ্বলে উঠেছে। জানালেন, “সান্তা ক্লজ হয়েই ওরা আমার ছেলের বাকশক্তি ফিরিয়ে দিল।”

Advertisement

[প্রয়াত দ্বিজেন মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে এ কী করলেন বিজেপি নেতা?]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ