সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে ভাইফোঁটা নিতে যাওয়ার তিনদিন পরই শোভন চট্টোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা ফেরাল নবান্ন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পরপরই তাঁর নিরাপত্তা তুলে নেওয়া হয় রাজ্যের তরফে। তারপর কেটে গিয়েছে আড়াই মাস। সম্প্রতি ভাইফোঁটা উপলক্ষে ফের মমতার বাড়িতে হাজির হন শোভন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর বন্ধু বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজনৈতিক মহলে জল্পনা, ধীরে ধীরে দূরত্ব কমছে দিদি ও ‘কাননের’। তার তিনদিন পরেই প্রাক্তন মেয়রের ওয়াই ক্যাটেগরি নিরাপত্তা ফিরিয়ে দিল নবান্ন।
কলকাতার মেয়র ও মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পর শোভন চট্টোপাধ্যায় যখন গোলপার্কের ফ্ল্যাটে স্বেচ্ছা নির্বাসনে ছিলেন। তখনও তাঁর সঙ্গে ছিল রাজ্যের দেওয়া ওয়াই ক্যাটেগরি নিরাপত্তা। কিন্তু আড়াই মাস আগে শোভন-বৈশাখী বিজেপিতে যোগ দিতেই তাঁর নিরাপত্তা তুলে নেয় রাজ্য। গত মঙ্গলবার রাজনৈতিক মহলকে চমকে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কালীঘাটের বাড়িতে হাজির হন শোভন-বৈশাখী। প্রিয় দিদির থেকে ভাইফোঁটাও নেন। জানা গিয়েছে, বৈশাখীকেও বোনফোঁটা দেন মমতা। তারপরেই শোভনের স্বাস্থ্যের খোঁজ নেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে ভুঁড়ি কমানোর পরামর্শ দেন। কিছু ওযুধ খাওয়ার কথা বলেন। এরপর কেন রবীন্দ্র সরোবরে হাঁটতে যাচ্ছেন না তা জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। বৈশাখীদেবী তখন উত্তরে জানান, নিরাপত্তার কারণেই লেকে যাচ্ছেন না শোভন।
সূত্রের খবর, সেকথা শুনেই বিস্মিত হন মুখ্যমন্ত্রী। এবং শোভনকে আশ্বাস দেন যে তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি পুলিশ দেখবে। সেদিন রাতেই নাকি কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের কিছু অফিসার শোভন চট্টোপাধ্যায়ের গোলপার্কের ফ্ল্যাটে গিয়ে নিরাপত্তার বিষয়ে আলোচনা করেন। এরপর আজ, শুক্রবারই শোভনের নিরাপত্তা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা জানানো হয়। জানা গিয়েছে, আটজন নিরাপত্তারপক্ষী পাবেন তিনি। এই প্রসঙ্গে বৈশাথীদেবী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘তাঁর নিরাপত্তার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছিলাম। তিনি মানবিক দিক থেকে সমস্যা দেখেছেন। এতে অহেতুক রাজনীতি খোঁজার কোনও মানে নেই।’
[আরও পড়ুন: ‘ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা বলব না’, শোভনের ভাইফোঁটা প্রসঙ্গে মন্তব্য দিলীপের]
উল্লেখ্য, শোভন-বৈশাখী মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যাওয়ায় বিস্মিত বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব। তবে সংবাদমাধ্যমের সামনে তা প্রকাশ করতে নারাজ রাজ্য নেতৃত্ব। তাই সম্প্রতি বারবার একই প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে কিছুটা বিরক্ত হয়ে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘কার কাছ থেকে ভাইফোঁটা নেবে সেটা পার্টি ঠিক করবে না কি? এধরনের রাজনীতি আমরা করি না।’ এরপর তিনি আরও বলেন, ‘শোভন চট্টোপাধ্যায় আমাদের একজন সাধারণ কর্মী। শোভনবাবু কাঁচা লোক নন। বহু বছর ধরে রাজনীতি করছেন। উনি জানেন কী করতে হয়।’ এবার নবান্ন শোভনের নিরাপত্তা ফিরিয়ে দেওয়ায় বিজেপির অস্বস্তি আরও বাড়বে বলে মত রাজনৈতিক মহলের।