Advertisement
Advertisement

Breaking News

বাগরিই কি বেশি ভয়াবহ? দুঃসহ স্মৃতি রোমন্থনে নন্দরামের মালিক

শুধু পণ্য নয়, পুড়ে ছাই স্বপ্নও।

Nandaram Market owner remembers past horrors afte Bagri fire
Published by: Monishankar Choudhury
  • Posted:September 18, 2018 8:40 am
  • Updated:September 18, 2018 9:43 am

মণিশংকর চৌধুরি: দাউদাউ জ্বলছে বাগরি। শুধু পণ্য নয়, পুড়ে ছাই স্বপ্নও। পুজোর আগেই বিসর্জনের সুরে থমথমে এলাকাটি। ধ্বংসস্তূপ থেকে কিছুটা অন্তত বাঁচিয়ে আনার আপ্রাণ প্রচেষ্টা। শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকা অনির্দিষ্ট ভবিষ্যতের দিকে। সব মিলিয়ে বাগরি মার্কেটে এখন শ্মশানের স্তব্ধতা। বছর কয়েক আগে এমনই এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ছাই হয়ে যায় নন্দরাম মার্কেটে। লেলিহান শিখায় পুড়ে খাক হয় বেশ কয়েকটি দোকান। তবে আজ সেই দুর্যোগ অনেকটাই কাটিয়ে উঠেছে নন্দরাম মার্কেট। ফের স্বাভাবিক ছন্দে চলছে জীবন। কিন্তু বাগরি মার্কেটের ভয়াবহ আগুন দেখে অতীতের বিভীষিকাময় অধ্যায়কে ফিরে দেখলেন নন্দরাম মার্কেটের মালিক মানিক সেঠিয়া।

[বিশ্বকর্মাই বাঁচিয়ে দিলেন, গাংনাপুর বিস্ফোরণে প্রাণে বেঁচে ভাগ্যকে ধন্যবাদ কর্মীদের]

Advertisement

পরিস্থিতির ভয়াবহতা নিয়ে প্রশ্ন করা হলে মানিকবাবু বলেন, “আগুন লাগলে কী হয়, আমি জানি। এমন বিপর্যয়ের ভুক্তভোগী আমিও। কিন্তু নন্দরাম মার্কেটের থেকেও বাগরির পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। শুধু দোকান নয় অনেকের ভবিষ্যৎও পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছে এই আগুনে। পুজোর আগে অনেক টাকার পণ্য মজুত রেখেছিলেন ব্যবসায়ীরা। সব খাক হয়ে গিয়েছে।” মানিকবাবুর মতে, ক্ষয়-ক্ষতির হিসেবে অনেক বেশি প্রভাবিত বাগরি। মাত্র দু’দিনেই পুড়ে ছাই কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তি। আর্থিকভাবে যা ইতিমধ্যেই ছাড়িয়ে গিয়েছে নন্দরামকে। বহুতল বাগরি মার্কেটে প্রায় চারশো দোকান রয়েছে। পুরোটাই গ্রাস করেছে আগুন। সেই তুলনায় নন্দরামে ক্ষতি হয়েছিল প্রায় দু’শো দোকানের। দু’দিন কেটে গেলেও এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন। মাঝে মাঝেই ফায়ার পকেট থেকে ফের জেগে উঠছে লেলিহান শিখা। ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন সমস্ত এলাকা।

Advertisement

বাগরি কাণ্ডে ইতিমধ্যেই উঠছে ষড়যন্ত্রের কথা। আঙুল উঠছে প্রোমোটারদের বিরুদ্ধে। তবে এসবই ভ্রান্ত ধারণা বলে দাবি করেন মানিকবাবু। তাঁর কথায়, এতো বড় বাজারে এমন কাণ্ড কেউ ঘটাতে পারে না। এই মুহূর্তে যে সব ব্যবসায়ীদের দোকান পুড়ে গিয়েছে, তাঁদের সাহায্য করা হোক। যা হওয়ার ছিল তা হয়ে গিয়েছে। তিনি জানান, ২০০৮ সালে বহুতল নন্দরাম মার্কেটের ছ’তলায় আগুন লাগে। যথারীতি মামলা চলে। কয়েকদিনের মধ্যেই পাঁচতলা পর্যন্ত ফের দোকান খোলার অনুমতি দেয় প্রশাসন। তবে ছ’তলার পজেশন পেতে দু’বছর অপেক্ষা করতে হয়। এর জন্য পূর্ববর্তী সিপিএম সরকারকেই দোষারোপ করেছেন মানিকবাবু। তবে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্যে ২০১০ দু’বছরের মাথায় ছ’তলাটিও ফিরে পান তিনি। কথা প্রসঙ্গে মনিকবাবু একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেন। যেহেতু মালিকপক্ষ ও ভাড়াটেদের মধ্যে অত্যন্ত সুসম্পর্ক রয়েছে। ফলে তাঁদের মধ্যে কোনও আইনি জটিলতা তৈরি হয়নি। সবাই নিজেদের দোকান ফেরত পেয়েছেন। কিন্তু বাগরি মার্কেটের মালিক রাধা বাগরির সঙ্গে ভাড়াটেদের একাংশের ঝামেলা চলছে। ফলে এনিয়ে আদালতে মামলা গড়ালে, দোকান ফিরে পাওয়ার রাস্তা একপ্রকার বন্ধ হয়ে যাবে। তাই এই মুহূর্তে আলোচনার মধ্যেই দু’পক্ষকে সমস্যার সমাধান করতে হবে।

এদিকে শনিবার থেকে এখনও পর্যন্ত আগুন না নেভায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা। একাংশের দাবি দমকলের গাফিলতিতে এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি আগুন। এই বিষয়ে মানিকবাবুর মন্তব্য, বিপর্যয় মোকাবিলায় সেনাকে ডাকা হলে আগুন নিয়ন্ত্রণে চলে আসত। নন্দরামেও অত্যন্ত তৎপরতার সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলা করেছে সেনা। অতীতের থেকে শিক্ষা নিয়ে রীতিমতো মজবুত অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা করা হয়েছে নন্দরাম মার্কেটে। ৫০ হাজার লিটারের দু’টি জলের ট্যাঙ্ক বসানো হয়েছে ওই বহুতলে। রয়েছে প্রায় একশো অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র। সমস্ত দোকানদারদের ট্রেড লাইসেন্স রয়েছে। সব মিলিয়ে যেকোনও ভাবেই দুর্ঘটনা এড়াতে প্রস্তুত মানিকবাবু। তাঁর একটাই প্রার্থনা, ফিনিক্স পাখির মতো ফের অস্তিত্ব ফিরে পাক বাগরি।

[নবান্নে বাগরি বৈঠক, মন্ত্রিগোষ্ঠীর নজরে পুরসভার ভূমিকা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ