Advertisement
Advertisement

Breaking News

জেএমবি

বুদ্ধ মন্দির উড়িয়ে দেওয়ার ছক কষেছিল ইজাজ, জেরায় স্বীকার জেএমবি প্রধানের

ইজাজের মূল কাজ ছিল রাজ্যের বিভিন্ন এলাকা থেকে জঙ্গি নিয়োগ।

New informaion about JMB leader Md. Izzaz, investigation underway
Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:August 27, 2019 4:17 pm
  • Updated:August 27, 2019 5:05 pm

স্টাফ রিপোর্টার: টার্গেট ছিল আবারও কোনও বুদ্ধ মন্দির। তা হতে পারে বিহারে, অথবা মধ্যপ্রদেশ বা ওড়িশায়। তবে কোন মন্দির তা এখনও স্থির হয়নি। গয়ায় ধৃত জেএমবির এদেশের আমির তথা সর্বোচ্চ নেতা ইজাজ আহমেদকে জেরা করে আপাতত সেই তথ্যই পেল কলকাতা পুলিশের এসটিএফ। বুদ্ধগয়ায় হামলা চালানোর অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাকে। মঙ্গলবার ট্রানজিট রিমান্ডে কলকাতায় এনে ব্যাঙ্কশাল কোর্টে তোলা হলে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

[আরও পড়ুন:নারদ কাণ্ডে তৎপর সিবিআই, তৃণমূলের প্রাক্তন সাংসদ কেডি সিংকে তলব]

রোহিঙ্গারা মায়ানমারে বৌদ্ধ প্রশাসকের হাতে অত্যাচারিত। এই অভিযোগ তুলেই মূলত ভারতের বিভিন্ন বুদ্ধ মন্দিরে হামলা চালানোর ছক কষে বেড়াচ্ছে জঙ্গি সংগঠন জামাত-উল-মুজাহিদিন বাংলাদেশ বা জেএমবি। বুদ্ধ গয়ায় যে হামলা চালিয়েছিল জেএমবি, সেখানে টার্গেট করা হয়েছিল দলাই লামার কর্মসূচিকে। তাঁর আসার আগেই বুদ্ধ গয়ায় হামলা চালায় এই আমির ইজাজ। তবে কোনও বড় হামলা চালিয়ে সেই সময় সফল হয়নি ইজাজ। বরং তারপর থেকে আরও কঠোর হয় বুদ্ধ গয়ার নিরাপত্তা। 

Advertisement

ধৃত ইজাজকে জেরা করে ইতিমধ্যে একাধিক বুদ্ধ মন্দিরের নাম, তাকে ঘিরে তাদের ছক জানতে পেরেছে এসটিএফ। তবে ঠিক কোন মন্দিরকে ইজাজ টার্গেট করেছিল, তা জানলেও প্রকাশ করতে চায়নি এসটিএফ। তদন্তকারীদের যুক্তি, এখনই সেইসব তথ্য প্রকাশ করে দিলে এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হতে পারে। তবে তথ্যের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলির মধ্যেও দফায় দফায় গোপনে এ নিয়ে আলোচনাও চলছে। ইজাজের জঙ্গি নেটওয়ার্কের দিকে নজর রাখছেন তদন্তকারীরা। সেই নেটওয়ার্ক এখন কী অবস্থায় রয়েছে, তারা কীভাবে কাজ করছে, তা জানার চেষ্টা চলছে।

Advertisement

[আরও পড়ুন:আয় তলানিতে, খরচে রাশ টানতে ফোন-গাড়ি বন্ধ সিপিএমের]

জেএমবি জঙ্গি বোমারু মিজান ধরা পড়ার পর থেকে এ দেশে কাজ করা জেএমবি জঙ্গিদের মূলত দু’টি কাজ। প্রথমত, মিজানকে ছাড়িয়ে আনা। দ্বিতীয়ত, প্রথম কাজ যতদিনে না করা যায়, ততদিন নতুন করে কাউকে দায়িত্ব দিয়ে সংগঠনের কাজ সামলানো। খাগড়াগড়কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত বোমারু মিজান ওরফে কওসর ও জেএমবি-র আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বোচ্চ নেতা সালাউদ্দিন সালেহিনের ডান হাত এই ইজাজ আদতে বীরভূমের বাসিন্দা। বোমারু মিজান ধরা পড়ার পর ইজাজকেই সর্বোচ্চ নেতা বানিয়ে ভারতের মাটিতে জঙ্গি কার্যকলাপ দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়েছিল সালেহিন।

কিন্তু ইজাজ কীভাবে কাজ করত? জানা যাচ্ছে, বিহারের গয়ায় বসে বিহার, ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যে জেএমবি জঙ্গি তৈরি করাই ইজাজের বড় দায়িত্ব। মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান মডিউল এই রাজ্যগুলিতেও তৈরি করার ছক ছিল তার। ধুলিয়ানে এর মধ্যেই ৫০ জনকে নিয়োগ করেছিল সে। জেরায় জানা গিয়েছে, গয়ার বিভিন্ন এলাকায় ফেরিওয়ালা সেজে ঘুরে বেড়াত ইজাজ। যার মূল উদ্দেশ্য ছিল আরও জঙ্গি নিয়োগ। সালেহিনের সঙ্গে এই পর্বে যোগাযোগ রাখার জন্য স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করত ইজাজ। সাধারণ ফোন ট্র্যাক করা সহজ বলেই এমন ফোন ব্যবহার করত তারা।

জঙ্গি নিয়োগের প্রক্রিয়াও খুব সহজ ছিল না। ফেরিওয়ালা সেজে ঘুরতে ঘুরতেই নানা মানুষের সঙ্গে মিশত ইজাজ। সেখানে নানা আলোচনায় বারবার সে তুলে আনত রোহিঙ্গাদের পরিণতির কথা। বৌদ্ধরা রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে মায়ানমারে। এই কথাই বারবার বলত সে। নিরীহ মানুষ এই পরিস্থিতির কথা শুনে রীতিমতো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠত। তারপর আরও কয়েকবার আলোচনার পর মস্তিষ্কে চূড়ান্ত জঙ্গিপনা ঢুকিয়ে তাকে জঙ্গিতে পরিণত করত ইজাজ। বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন পরিচয়ে ঘুরত সে। কোথাও পরিচিত ছিল ইজাজ আহমেদ নামে, কোথাও আবার মহম্মদ ইজাজ। কেউ আবার চিনত ডক্টরবাবু নামে। এমন নামের আড়ালেই চলত আমির ইজাজের জঙ্গি প্রশিক্ষণের কাজ।

[আরও পড়ুন:স্বামীকে নিয়ে আগেও মাকে খুনের চেষ্টা করে মেয়ে, পর্ণশ্রী হত্যায় নয়া তথ্য পুলিশের হাতে]

ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, ইজাজের বাড়ি বীরভূমের পানরুইয়ের অবিনাশপুরে। ২০০৮ সালে এক পরিচিত ব্যক্তির মাধ্যমে কয়েকজন জেএমবি নেতার সঙ্গে পরিচয় হয় তার। তখন সবে বাংলা থেকে সদস্য নিয়োগ শুরু করেছে জেএমবি। বীরভূম, মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, বর্ধমান-সহ বিভিন্ন জেলায় তৈরি করতে শুরু করেছে ঘাঁটি। যোগদানের পর ধীরে ধীরে ইজাজ নিজেও এই লোক নিয়োগের কাজে হাত লাগায়। ২০১৪ সালে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে বোমারু মিজান যখন এই রাজ্যে ‘কওসর’ সেজে থাকতে শুরু করে, তখন দু’জনের পরিচয়। পরে জেএমবির শীর্ষ নেতা সালাউদ্দিন সালেহিন এই রাজ্যে গোপন সফরে আসার পর তার সঙ্গেও যোগাযোগ হয় ইজাজের। শিমুলিয়ার জেএমবি ঘাঁটিতেও তার যাতায়াত ছিল কি না, তা জানার চেষ্টা হচ্ছে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ