ফাইল ছবি
সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একাধিকবার কলকাতার নারী সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সম্প্রতি আনন্দপুর (Anandapur) কাণ্ড নিয়েও শোরগোল পড়ে যায়। নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন যেমন উঠতে থাকে, ঠিক তেমনই সাহসিনী নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায়কে নিয়েও আলোচনা হতে শুরু করে। ঠিক কোন সাহসে রাতের কলকাতায় একজন বিপদগ্রস্ত মহিলাকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন? হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে সেকথাই জানালেন তিনি।
প্রেমিকের সঙ্গে দেখা করতে এসে শ্লীলতাহানির শিকার হন ব্যাংকে কর্মরতা এক তরুণী। তাঁকে বিপদগ্রস্ত অবস্থায় দেখে নিজেকে সামলে রাখতে পারেননি নীলাঞ্জনা চট্টোপাধ্যায় (Nilanjana Chatterjee)। রাতের কলকাতায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন নীলাঞ্জনার স্বামীও। ওই যুবক নীলাঞ্জনার পায়ের উপর দিয়ে গাড়ি চালিয়ে চলে যায়। সিন বোন ভেঙে যায় তাঁর। ভরতি হতে হয় বেসরকারি হাসপাতালে। অস্ত্রোপচার হয়। আপাতত সুস্থই রয়েছেন তিনি। তবে পায়ের চোট সারতে চিকিৎসকদের অনুমান আরও বেশ কয়েক মাস সময় লেগে যাবে। এই পরিস্থিতিতে রবিবারই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেন সাহসিনী। হাসপাতাল কর্মীরা হাততালি দিতে দিতে ‘হও ধরমেতে ধীর, হও করমেতে বীর, হও উন্নত শির, নাহি ভয়’ গান গেয়ে তাঁকে বিদায় জানান। নীলাঞ্জনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ, চিকিৎসক, নার্স এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
ঠিক কীভাবে এক মহিলার পাশে দাঁড়ানোর সাহস পেলেন তিনি? হাসপাতাল থেকে বেরনোর সময় সেকথা জানান। জানান, তাঁর প্রথম বিয়ে একেবারেই সুখের নয়। সেখানে গার্হস্থ্য হিংসারও শিকার হতে হয়েছিল। প্রতিবাদ করেছিলেন। রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। সেখান থেকে তিনি মনের জোর সঞ্চয় করেন। আর সেই জোর থেকেই বারবার অন্যায়ের প্রতিবাদে সরব হন। পাশে দাঁড়ান বিপদগ্রস্তদের। যে তরুণীকে সাহায্য করতে এগিয়ে গিয়েছিলেন তিনি তাঁর সম্পর্কেও এদিন মুখ খোলেন নীলাঞ্জনা। তিনি বলেন, “আনন্দপুর কাণ্ডের ওই তরুণীর উপর কোনও অভিমান নেই আমার। কোন পরিস্থিতিতে একজন মেয়ে বারবার বয়ান বদল করছেন, তা জানা নেই আমার। তাই তাঁকে বিচার করব না।” পায়ের চোট এখনও পুরোপুরি সারেনি। তবু অন্যায় দেখলে ভবিষ্যতেও ঝাঁপিয়ে পড়বেন বলেই জানান সাহসিনী।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.