নব্যেন্দু হাজরা: দুর্ঘটনা কমাতে গাড়ির ফিটনেসের উপর জোর দিয়েছে রাজ্য। কিন্তু হলে কী হবে, নজরদারি শুরু হতেই দেখা যাচ্ছে, রাস্তায় বের হওয়া প্রায় ৬৫ শতাংশ গাড়িরই সিএফ ফেল। যাত্রীবাহী বাস থেকে শুরু করে পণ্যবাহী, গাড়ি, পুলকার সবেরই এক অবস্থা। পরিস্থিতি দেখে নজরদারি আরও বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তী। টেকনিক্যালের পাশাপাশি নন টেকনিক্যাল মোটর ভেহিক্যালস ইন্সপেক্টদেরও এবার রাস্তায় নেমে গাড়ি চেকিংয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই কাজে ২৭টি নতুন গাড়ি কেনা হবে বলেও সূত্রের খবর।
পরিবহণ দপ্তরসূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছরের জুন মাস থেকে ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারি মাস পর্যন্ত এমিভিআই-রা রুবি মোড়ে অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ২৮ টি গাড়িতে চালান ইস্য়ু করেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে ৬৬০টি গাড়িরই ফিট সার্টিফিকেট নেই। শতাংশের হিসাবে যা ৬৫ শতাংশের মতো। তারমধ্যে ২৪৮টি গাড়ি রয়েছে, যেগুলোর বেআইনিভাবে গাড়ির ইঞ্জিন ও বডি বদলে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া স্পিড লিমিটিং যন্ত্র খারাপ ছিল ১৬৯টি গাড়িতে। বাকি অন্যান্য কাগজপত্র ঠিক না থাকায় আটকানো হয়েছে।
[আরও পড়ুন: আহা কী দৃশ্য! রাতের আকাশে একসঙ্গে পাঁচ গ্রহ দেখে মুগ্ধ অমিতাভ, শেয়ার করলেন ভিডিও]
দপ্তরের কর্তারা জানাচ্ছেন, ধরপাকড়ের সময় যে গাড়ি ধরা পড়ছে তাদের বেশিরভাগেরই ফিট সার্টিফিকেট নেই। তাঁদের কথায়, যত বেশি চেকিং করা হবে, ততই অসুস্থ গাড়ি ধরা পড়বে বেশি। তাও তো বাসে যাত্রী থাকে বলে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা ধরা হয় না। না হলে বেশিরভাগ বেসরকারি বাসই রাস্তায় বের করা যেত না। একই পরিস্থিতি হলুদ ট্যাক্সিরও। দপ্তরের কর্তারা আরও জানাচ্ছেন, আগে এমভিআইয়ের সংখ্যা কম থাকায় নিয়মিত চেকিং হত না। কিন্তু গত জুন মাস থেকে বাইপাসের উপর প্রায় নিয়মিত চেকিং করা হচ্ছে। তবে অফিস টাইমে খুব একটা হয় না। যে গাড়িগুলোর কাগজপত্র দেখা হচ্ছে সেগুলোর অধিকাংশেরই তিন-চার বছর আগে শেষবার সিএফ হয়েছিল।
পুলিশ শহরের নানা জায়গায় গাড়ির চেকিং করে। তাতেও কার্যত এমনই পরিসংখ্যান বেড়িয়ে আসে বলে জানান ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা। তাঁর কথায়, বারবার বেসরকারি বাস থেকে গাড়ি, পুলকার থেকে স্কুলবাসকে সিএফের ক্ষেত্রে জরিমানার অঙ্ক ছাড় দেওয়া হলেও মালিকরা তাতে কর্ণপাত করেন না। আনফিট গাড়িই ছোটান রাস্তায়। বাড়ে বিপদ। পরিস্থিতি এমন হয়েছে, টেকনিক্যাল এবং নন টেকনিক্যাল উভয় এমভিআইরাই গাড়ি ধরপাকড়ের কাজে নামছেন। তবে বাসের পাশাপাশি আনফিট স্কুলবাস এবং পুলকার রাস্তায় বের হওয়ায় চিন্তা বাড়ছে পরিবহণ দপ্তরের কর্তাদের। কারণ সময় মেনে স্কুলে ঢোকাতে গিয়ে এই বাস এবং পুলকার একটু বাড়তি গতিতেই ছোটে। ভিতরে থাকা ঠাসা পড়ুয়া। ফলে তাঁদের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে এসে পড়ে। এবিষয়ে পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ দত্ত বলেন, “আমাদের সংগঠনে থাকা সমস্ত গাড়ি সিএফ করিয়েই তবে পড়ুয়া নিয়ে স্কুলে যায়।”
[আরও পড়ুন: স্কটল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী হলেন পাক বংশোদ্ভূত হামজা ইউসুফ, আজই নেবেন শপথ]
হলুদ ট্যাক্সি এবং বেসরকারি বাসের অবস্থাও তথৈবচ। ভাঙা সিট, ভাঙা জানলা, ভাঙা হাতল। যা নিয়ে ক্ষুব্ধ যাত্রীরাও। তাঁদের বক্তব্য, ভাড়া নেওয়ার সময় যেমন খুশি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। অথচ যাত্রী নিরাপত্তা থেকে যাচ্ছে শিঁকেয়।