Advertisement
Advertisement

Breaking News

যাদবপুর

‘পুলিশের আরও সংযত হওয়া উচিত’, যাদবপুরে পড়ুয়াদের উপর লাঠিচার্জে বিরক্ত শিক্ষামন্ত্রী

যাদবপুরের সুলেখা মোড়ে লাঠিচার্জের ঘটনা মুখ্যমন্ত্রীকে জানাবেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Partha Chatterjee condemns cops brutality on Jadavpur
Published by: Sayani Sen
  • Posted:January 7, 2020 10:23 am
  • Updated:January 7, 2020 10:23 am

দীপঙ্কর মণ্ডল: পড়ুয়া, সিপিএম ও বিজেপি-তিন মিছিল ঘিরে ধুন্ধুমার যাদবপুরের সুলেখা মোড়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশের ব্যাপক লাঠিচার্জ। পুলিশের লাঠির আঘাতে বেশ কয়েকজন পড়ুয়া আহত হন বলেও অভিযোগ। ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করে পুলিশকে আরও সংযত থাকার বার্তা দেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। পরে পুলিশও ঘটনার দুঃখপ্রকাশ করে।

জামিয়া মিলিয়ায় ঢুকে পুলিশি হেনস্তার খবরে ফুঁসছিল ছাত্র সমাজ। ক্ষোভের আগুন জ্বলছিল ধিকিধিকি। জেএনইউ কাণ্ড যেন বারুদের সেই স্তূপে জ্বলন্ত দেশলাই কাঠি। যার সাক্ষী রইল সোমবার সন্ধের যাদবপুর। যুযুধান একাধিক পক্ষের রণহুঙ্কারে তটস্থ হয়ে পড়ল সুলেখা মোড়। এই টক্করের মুখে এদিন ভরসন্ধ্যায় দক্ষিণের সুলেখা মোড় ও উত্তরের কলেজ স্ট্রিট অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে সুলেখা মোড়ে। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবাদী পড়ুয়া, সিপিএম ও বিজেপির তিন মিছিল এসে সেখানে জড়ো হওয়ায় উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে চড়ে। লাল পতাকা হাতে সিপিআইএমএল (রেডস্টার) ও শামিল ছিল। ঘটনা হল, সুলেখা মোড়ে বিজেপি মিছিল আসার সময়ে একই জায়গায় সিপিএম ও যাদবপুরের পড়ুয়াদের মিছিল চলে আসে। বাম-অতিবামদের মুখোমুখি গেরুয়া সমর্থকরা! একসময় প্রায় নাকের ডগায় চলে আসে বাম ও গেরুয়া বাহিনীর মিছিল। তবে ধারে ও ভারে বিজেপি মিছিল ছিল ছোট। পুলিশ তিনটি মিছিল আটকে আলাদা আলাদা ব্যারিকেড করে দেয়।

Advertisement

[আরও পড়ুন: যাদবপুরে লাঠিচার্জে ব্যথিত পুলিশ! পড়ুয়াদের কাছে ক্ষমা চেয়ে বিতর্কে ডেপুটি কমিশনার]

যাদবপুরের পড়ুয়াদের বক্তব্য, “আমরা এনআরসি, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন, এনপিআর ও জেএনইউ পড়ুয়াদের উপর হামলার প্রতিবাদে এই মিছিলে শামিল হয়েছি। নির্বিচারে আমাদের উপর পুলিশ লাঠি চালিয়েছে। পুরুষ পুলিশকর্মীরাই ছাত্রীদের মেরেছে।” ঘটনার নিন্দা করে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “আমি দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘটনার নিন্দা করি। পুলিশের ভূমিকা আরও সংযত হওয়া উচিত, সেটা মনে করিয়ে দিতে চাই। ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনে পুলিশ আরও বেশি সংযত থাকবে, এটাই বোধহয় কাম্য। শিক্ষামন্ত্রী হিসাবে বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাচ্ছি।”

Advertisement

Jadavpur Protest

পুলিশকে ক্ষমা চাইতে হবে, এই দাবিতে রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন ছাত্রছাত্রীরা। যাদবপুর-গড়িয়া, গড়িয়া-গড়িয়াহাট রুট বেশ কিছুসময় বন্ধ থাকে। সবাইকে রাস্তা ফাঁকা করার আবেদন করে পুলিশ। সন্ধের কিছু পর বিজেপি কর্মী সমর্থকরা পিছিয়ে যায়। যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীদের মিছিলটি সরাতে রাজি হয়নি। পুলিশের সঙ্গে তাদের তীব্র বচসা হয়। কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রীর উপর পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। তাতে বেশ কয়েকজন পড়ুয়া আহত হয়েছেন। পরে ঘটনার দুঃখপ্রকাশ করে পড়ুয়াদের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন কলকাতা পুলিশের ডিসি এসএসডি সুদীপ সরকার। তিনি জানান, ভুল বোঝাবুঝি থেকে হয়েছে। আমরা কখনওই পড়ুয়াদের উপর লাঠি চালাতে চাইনি। কলকাতা পুলিশ সবার পাশে আছে।

[আরও পড়ুন: মিছিল-পালটা মিছিলে রণক্ষেত্র যাদবপুরের সুলেখা মোড়, ‘নির্বিচারে লাঠিচার্জ’ পুলিশের]

বস্তুত, রবিবার রাত কেটে সোমবার দিনের আলো ফোটার সঙ্গে সঙ্গে বিক্ষোভের আঁচ মালুম হয়ে গিয়েছে মহানগরে। দিনভর দিকে দিকে প্রতিবাদ মিছিলে গোটা শহরের ‘বডি ল্যাঙ্গুয়েজ’ যেন অন্যরকম। যাদবপুর, প্রেসিডেন্সি-সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জোটবদ্ধ সমাবেশ থেকে জেহাদ ঘোষণা হল বিজেপি এবং এবিভিপির বিরুদ্ধে। এসএফআই, ডিএসও, এইআইএসএ-র মতো বাম ছাত্র সংগঠনগুলির মূল স্লোগানই ‘পালটা আঘাত ফিরিয়ে দাও।’ অন্যদিকে, বিজেপি এবং এবিভিপিও চুপ করে নেই। তারাও এদিন রাস্তা দাপিয়েছে। রবিবার রাতে কিছু দুষ্কৃতী বিজেপির যাদবপুর কার্যালয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। বিজেপি নেতা অনুপম হাজরার দাবি, যাদবপুরের কিছু পড়ুয়া এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। আগের রাতের ঘটনার প্রতিবাদে মিছিল ও যাদবপুর থানায় স্মারকলিপি প্রদানের কর্মসূচি ছিল বিজেপির।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ