কলহার মুখোপাধ্যায়: করোনা সংক্রমণ রুখতে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার জন্য অনেক উপায়ই বের করেছেন মানুষজন। কোনও গ্রামের প্রবেশপথে বেড়া দিয়ে, কোথাও বাঁশ দিয়ে ঘিরে, তাতে পোস্টার লাগিয়ে পৃথক করে রাখা হয়েছে এলাকা। এ রাজ্যের এমন অনেক ছবিই চোখে পড়েছে। তবে এই সমস্ত বাধাই খানিকটা ভঙ্গুর। তাই এবার খোদ কলকাতা শহর লাগোয়া বাগুইআটিতে এলাকায় বহিরাগতদের প্রবেশ আটকাতে লোহার কোলাপসিবল গেটই বসিয়ে দিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তালাবন্ধ গেটে দিনে-রাতে রীতিমত পাহারা দিয়ে পরিস্থিতিতে কড়া নজর রাখছেন তাঁরা। পাড়ার কেউ যদি বাইরে বেরতে চান, তাহলে উপযুক্ত কারণ দেখিয়ে তবেই চাবি হাতে পাওয়া যাচ্ছে। এই ব্যবস্থায় বেশ নিশ্চিন্ত বোধ করছেন এলাকাবাসী।
বিধাননগর পুরনিগমের অন্তর্গত বাগুইআটির জগৎপুরের নবলক্ষ্মী পাড়ার ক্লাব – নবলক্ষ্মী স্মৃতি সংঘের উদ্যোগে স্থানীয় বাসিন্দাদের সহায়তায় মূল গলির মুখেই বসেছে কোলাপসিবল গেট। এছাড়া আশেপাশের ৫টি গলিতেই এই গেট বসানো হয়েছে। জলবহুল এলাকার কোথাও আবার বাঁশের ব্যারিকেডও করা হয়েছে। ক্লাবের সম্পাদক বরুণ রাজবংশী বলছেন, “এই রাস্তাটা আশেপাশের অনেক এলাকায় যোগসূত্র। নিউটাউন থানা এলাকার বেশ কিছু অংশ যেমন, হাতিয়াড়া, জ্যাংড়ার মানুষজন শর্টকাটের জন্য এই রাস্তা ব্যবহার করেন। সেই এলাকার এক চিকিৎসক করোনা আক্রান্ত হয়ে এই মুহূর্তে হাসপাতালে ভরতি। চিকিৎসকের বাড়িতে যে পরিচারিকা কাজ করতেন, তাঁর বাড়ি এই পাড়ারই অদূরে। ঘটনার পর পরিচারিকারও স্বাস্থ্য পরীক্ষা হয়েছে। রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। এই ঘটনাই আমাদের টনক নাড়িয়ে দেয়। তারপর এলাকা বিচ্ছিন্ন করতে এবং সকলের নিরাপত্তার স্বার্থে কোলাপসিবল গেট বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: লকডাউনে বাইরে বেরনোর শাস্তি! আদালতের নির্দেশে পথচারীদের সচেতন করছেন যুবক]
কিন্তু প্রশ্ন হল, এভাবে যে কোলাপসিবল গেটে তালা দিয়ে রাখা হচ্ছে, সেক্ষেত্রে রাতবিরেতে বিশেষ প্রয়োজনে যদি কাউকে বেরতে হয়, সেক্ষেত্রে কী হবে? এরও সমাধান রয়েছে। গেটের গায়ে লাগোয়া বাড়ি অরিন্দম রায়চৌধুরির। তাঁর কাছে তালাচাবি রাখা থাকে। যদিও রাতে কারও বেরনোর প্রয়োজন হয়, তাহলে তিনি অরিন্দমবাবুর থেকে চাবি নিয়ে তালা খুলে বেরতেই পারেন। কিন্তু সত্যিই কি এভাবে পৃথক রাখা সম্ভব? গলির মুখে কোলাপসিবল গেট বসানোয় প্রশাসনিক কোনও বিধিনিষেধ নেই? নবলক্ষ্মী স্মৃতি সংঘের সম্পাদক জানিয়েছেন, স্থানীয় প্রশাসন সবটাই জানে। এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে কেউ কোনও আপত্তি তোলেনি। তাই এভাবেই নিজেদের সুরক্ষার ব্যবস্থা তাঁরা নিজেদের মতো করে নিয়েছেন।