Advertisement
Advertisement
West Bengal

রোগীর কাছ থেকে একবারই নেওয়া যাবে রেজিস্ট্রেশন ফি, বেসরকারি হাসপাতালগুলোকে বড় নির্দেশ

কেন এই নির্দেশ?

Private hospitals of west bengal can take registration fee for one time

ছবি: প্রতীকী

Published by: Tiyasha Sarkar
  • Posted:November 7, 2024 12:20 pm
  • Updated:November 7, 2024 12:20 pm  

অভিরূপ দাস: চিকিৎসকের ফিজ সাতশো টাকা। সেই ডাক্তারকে দেখাতে এসে রোগীকে মোট দিতে হচ্ছে হাজার টাকা। বাকি তিনশো টাকা হাসপাতালের রেজিস্ট্রেশন ফিজ। কোনও হাসপাতালে এই রেজিস্ট্রেশন ফিজের মেয়াদ ছ’মাস। কোথও সাতদিন। মেয়ার ফুরিয়ে গেলে যতবার রোগী আসবেন ততবার দিতে হয় রেজিস্ট্রেশন ফিজের টাকা। বদলাতে চলেছে সেই নিয়ম। বুধবার পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ‌্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোনও মেয়াদ রাখা যাবে না এই রেজিস্ট্রেশন ফিজের। একবারই তা নেওয়া যাবে রোগীর কাছ থেকে।

শেকসপিয়ার সরণীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন দেবব্রত চক্রবর্তী। দেবব্রতবাবুকে রেজিস্ট্রেশন ফি বাবদ অতিরিক্ত আড়াইশো টাকা দিতে হয়। ডাক্তারের ফিজ ছাড়াও কেন অতিরিক্ত টাকা? প্রশ্ন তুলে রাজ‌্য স্বাস্থ‌্য নিয়ন্ত্রক কমিশনে চিঠি দেন দেবব্রতবাবু। তাঁর সেই অভিযোগের ভিত্তিতে বৈঠকে বসেন স্বাস্থ‌্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের ফুল বেঞ্চ। ডেকে পাঠানো হয় ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে। ‘‘কেন নেওয়া হচ্ছে রেজিস্ট্রেশন ফিজ?’’ কমিশনের প্রশ্নের জবাবে ওই বেসরকারি হাসপাতাল জানিয়েছে, ‘‘আমরা রোগীকে একাধিক অতিরিক্ত পরিষেবা দিই। হাসপাতালে রয়েছে পরিচ্ছন্ন বাথরুম। তা নিয়মিত পরিস্কার করতে লোকের প্রয়োজন। এছাড়াও রোগীর প্রয়োজনে হুইল চেয়ার, ট্রলি রাখা হয়েছে। হ‌্যান্ড স‌্যানিটাইজার-সহ একাধিক পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে অর্থের প্রয়োজন। তা বাবদই রোগী পিছু আড়াইশো টাকা নেওয়া হয়।’’ ওই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বক্তব‌্য, ওই আড়াইশো টাকার মেয়াদ ছ’মাস। ছ’মাসের মধ্যে ডাক্তার দেখাতে এলে রোগীকে আর টাকা দিতে হয় না। যদিও এই বক্তব্যে মান‌্যতা দেয়নি রাজ‌্য স্বাস্থ‌্য নিয়ন্ত্রক কমিশন। রাজ‌্য স্বাস্থ‌্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের চেয়ারম‌্যান অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ‌্যায় জানিয়েছেন, হাসপাতাল যে কারণে রেজিস্ট্রেশন চার্জ নেওয়ার কথা বলছে তা সঠিক নয়। এর জন‌্য টাকা নেওয়া যায় না। হাসপাতাল যে নির্দিষ্ট মেয়াদের কথা বলছে তাও অমূলক।

Advertisement

রাজ‌্য স্বাস্থ‌্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের বক্তব‌্য, ‘‘রেজিস্ট্রেশন চার্জ সমস্ত বেসরকারি হাসপাতাল নেয়। একবার তা নেওয়াই যায়। কারণ প্রতিটি বেসরকারি হাসপাতালে একটা রোগীর তথ‌্য ভাণ্ডার মেইনটেইন করতে হয়। কোনও রোগী যখন প্রথমবারের জন‌্য কোনও বেসরকারি হাসপাতালে দেখাতে যান তার নামে একটা ইউনিক পেশেন্ট আইডি তৈরি হয়। তার পরে যতবার সেই রোগী সংশ্লিষ্ট হাসপাতালে আসবে সেই ইউনিক আইডি-র মাধ‌্যমেই চিকিৎসা চলে। আইডি টাইপ করলেই বেরিয়ে আসে রোগী আগে কোন অসুখ নিয়ে এই হাসপাতালে এসেছিলেন।’’ স্বাস্থ‌্য নিয়ন্ত্রক কমিশনের চেয়ারম‌্যান অসীমকুমার বন্দ্যোপাধ‌্যায়ের কথায়, ‘‘সব হিসেব করে আমরা দেখেছি রেজিস্ট্রেশন চার্জ একবারই নেওয়া যাবে। ছ’মাস বাদে আর নেওয়া যাবে না।’’

উল্লেখ‌্য, অনেক হাসপাতাল রেজিস্ট্রেশন চার্জকে ‘লাইফটাইম’ বলে উল্লেখ করলেও কার্যক্ষেত্রে তা হচ্ছে না। বাইপাসের ধারে কাদাপাড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে রেজিস্ট্রেশন চার্জ লাইফটাইম বলে নেওয়া হলেও আদতে তার মেয়াদ এগারো বছরের জন‌্য। তারপর রোগীকে আবার টাকা দিতে হয়। মিন্টোপার্কের এক বেসরকারি হাসপাতালে আবার রেজিস্ট্রেশন চার্জের মেয়াদ মাত্র সাতদিন। রাজ‌্য স্বাস্থ‌্য নিয়ন্ত্রক কমিশন সাফ জানিয়ে দিয়েছে, বারে বারে আড়াইশো তিনশো টাকা করে রোগীর কাছ থেকে নেওয়া যাবে না। প্রথমবার রোগী যখন দেখাতে আসবে সেই একবারই নেওয়া যাবে রেজিস্ট্রেশন ফিজ। কমিশনের এই সিদ্ধান্তের পর কি বলছে বেসরকারী হাসপাতালগুলো? শহরের এক বেসরকারী হাসপাতালের সিইও প্রদীপ ট‌্যান্ডন জানিয়েছেন, ‘‘পূর্ব ভারতের হাসপাতাল অ‌্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে কথা বলে আমরা সিদ্ধান্ত জানাবো।’’

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement