সোমনাথ লাহা: মানুষ ও তার সংস্কৃতির অন্যতম যোগসূত্র হয়ে রয়ে গিয়েছে নদী। সেই কারণেই কলকাতা ও লন্ডনের অনন্য যোগসূত্রের সুদীর্ঘ ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে হুগলি ও টেমস নদী। এবছর ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের ৭০তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ ও ব্রিটেনের পারস্পরিক যোগসূত্রের পুনরাবিষ্কার, নতুন যোগাযোগ স্থাপন ও দুই দেশের তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করার উদ্দেশ্য নিয়ে আগামী ৬ ডিসেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত আয়োজন করা হয়েছে ‘সিল্ক রিভার’ উৎসবের। যেখানে অংশ নেবেন লন্ডন থেকে প্রায় ১৮ জন শিল্পী তথা অতিথি। এদের মধ্যে রয়েছেন লেখক, ডকুমেন্টারি ফিল্মমেকার, ফোটোগ্রাফার-সহ বহু বিশিষ্ট মানুষজন। দু’দেশের সম্মিলিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নতুনভাবে গাঁথা হবে যোগসূত্র।
[ আপাতত খুলছে না জি ডি বিড়লা, বুধবার বিকেল পর্যন্ত সময় চাইল কর্তৃপক্ষ ]
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানটির আয়োজক ব্রিটিশ কাউন্সিলের পাশাপাশি ব্রিটেনের কাইনেটিকা ও ভারতের থিঙ্ক আর্টস। যেটির পুরোভাগে রয়েছেন কাইনেটিকার আর্টিস্টিক ডিরেক্টর অ্যালি প্রিটি ও থিঙ্ক আর্টসের রুচিরা দাস।
[ইতিহাসের সাক্ষী হয়েও উপেক্ষিতই রয়েছে মুর্শিদাবাদের এই দিঘি]
পশ্চিমবঙ্গের বোটানিক্যাল গার্ডেন ও লন্ডনের কিউ বোটানিক্যাল গার্ডেনের মধ্যে যেমন সাদৃশ্য রয়েছে তেমনই এখানকার বাটানগর ও ব্রিটেনের ইস্ট টিলবারির মধ্যেও দেখা যায় অদ্ভুত মিল। এই দুই শহরেই জুতোর কারখানা খুলেছিলেন টমাস বাটা। তেমনই বারাকপুর ও গ্রিনউইচ অ্যান্ড উইলিচ। দু’জায়গাতেই রয়েছে সেনা ছাউনি। নদীমাতৃক এই দুই জায়গার সাদৃশ্য তাই আকর্ষণ করেছিল কাউনেটিকার আর্টিস্টিক ডিরেক্টর অ্যালি প্রিটিকে। সেই ভাবনাকে পাথেয় করেই সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে একত্রিত করে শুরু হয় ‘সিল্ক রিভার’ প্রোজেক্ট। যেটির প্রাথমিক পর্বের সূচনা হয়েছিল এবছরের গোড়ার দিকে জানুয়ারি মাস নাগাদ মুর্শিদাবাদে অনুষ্ঠিত দু’সপ্তাহের আবাসিক শিবিরের মধ্যে দিয়ে। যেখানে লন্ডন থেকে আগত শিল্পীদের পাশাপাশি কলকাতা, চন্দননগর, কৃষ্ণনগরের শিল্পীও। জুলাইয়ে তা প্রদর্শিত হয় নন্দনে।
[ স্কুল বন্ধ হবে না, জি ডি বিড়লা কাণ্ডে রাজনীতিতে আপত্তি মমতার ]
লন্ডনে অনুষ্ঠিত ‘সিল্ক রিভার’ পর্বে (১৫ সেপ্টম্বর-২৪ সেপ্টেম্বর) ইতিমধ্যেই ‘টোটালি টেমস’ উৎসবের অঙ্গ হিসাবে দেখানো হয় সবকটি স্ক্রোল। আয়োজন করা হয় হেরিটেজ পদযাত্রারও। তারই অঙ্গাঙ্গী পুনর্নিমাণ এবার হতে চলেছে কলকাতায়, অনুষ্ঠানের বিস্তারিত তথ্য জানা যাবে এই লিঙ্কে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালে দুই দেশের মোট ২০টি স্ক্রোল প্রদর্শনের মধ্যে দিয়ে উৎসব শেষ হবে। গঙ্গাবক্ষে মুর্শিদাবাদের আজিমগঞ্জ থেকে চন্দননগর পর্যন্ত হেরিটেজ বোট রাইড ও পদযাত্রাও উৎসবের অন্যতম সফর। যাতে খরচ মাথাপিছু প্রায় ১০,০০০ টাকা। এছাড়া এই উৎসবে তুলে ধরা হবে বাংলায় সংস্কৃতির বিভিন্ন ছবি। যেমন ভাটিয়ালি, রায় বেশে নৃত্য-সহ চন্দননগরের আলোর জাদু, হেরিটেজ স্থান দর্শন প্রভৃতি।