Advertisement
Advertisement

Breaking News

Blood

অনলাইনে আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে রক্ত ‘বিক্রি’, অভিযোগ পেয়ে বিস্মিত স্বাস্থ্যদপ্তর

বেসরকারি ব্লাড ব্যাংকের বিরুদ্ধে উঠছে নানা অভিযোগ।

Some blood bank allegedly 'sells' blood online in Kolkata । Sangbad Pratidin
Published by: Sayani Sen
  • Posted:August 1, 2022 9:43 am
  • Updated:August 1, 2022 9:45 am

স্টাফ রিপোর্টার: প্রথম অভিযোগ, সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাংকের তালিকায় নাম না থাকলে সেই বেসরকারি হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের রোগীর রক্ত মিলছে না। দ্বিতীয় অভিযোগ, স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমতি না নেওয়া কিছু বেসরকারি ব্লাড ব্যাংকের রক্তদান শিবিরেও ঢুকে পড়ছে পেশাদার রক্তদাতা। আরও বড় অভিযোগ, অনলাইনে তাদের চাহিদা মাফিক অর্থ চলে যাচ্ছে। এই দু’টি অভিযোগ সামনে আসায় ঘুম উড়েছে মানিকতলা সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাংকের। রীতিমতো উদ্বেগে স্বাস্থ্যদপ্তর। 

শনিবার সকালে সুন্দরবনের একটি নার্সিংহোম থেকে ‘ও’ নেগেটিভ গ্রুপের এক ইউনিট রক্ত নিতে হাজির হন রোগীর আত্মীয়। দুপুর নাগাদ লাইন দিয়ে ঠায় দাঁড়িয়ে থেকে বিকেল তিনটে নাগাদ রোগীর পরিজনকে জানানো হল, ব্লাড ব্যাংকের কম্পিউটার তালিকার মধ্যে ওই নার্সিংহোমের নাম নথিভুক্ত করা হয়নি। তাই রক্ত দেওয়া সম্ভব নয়। পরে আসতে হবে। যদিও রোগীর পরিবারের দাবি, রক্তের নমুনা পরীক্ষার পর তাঁকে রেফার করে দেওয়া হয়। এদিকে রোগীর অবস্থা সংকটজনক। শেষ পর্যন্ত সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাংকের লাগোয়া এক দোকানের থেকে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা উত্তর কলকাতা উদয়ের পথের উদ্যোগে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকে মহার্ঘ রক্ত নিয়ে ওই ব্যক্তি বাড়ি ফিরে যান। প্রশ্ন উঠেছে, মাত্র দেড় কিলোমিটার দূরত্বে দুই সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে দুই নিয়ম কী করে হয়?

Advertisement

[আরও পড়ুন: জল্পেশ মন্দিরে পুজো দিতে যাওয়ার পথে পিকআপ ভ্যানে শর্ট সার্কিট, মৃত্যু ১০ পুণ্যার্থীর]

কিন্তু ঘটনা হল, এটা একমাত্র ঘটনা নয়। মাঝে মধ্যেই সেন্ট্রাল ব্লাড ব্যাংক-সহ কয়েকটি সরকারি ব্লাড ব্যাংকের কাজ নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন উঠেছে খোদ স্বাস্থ্যদপ্তরের ব্লাড সেলে। যদিও স্বাস্থ্যভবনের ব্লাড সেল ও চিকিৎসকদের সাফ উত্তর, আসল রিকুইজিশন স্লিপ ও রোগীর চিকিৎসা পত্র থাকলে কোনওভাবে রক্ত রেফার করা যাবে না। রাজ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. সিদ্ধার্থ নিয়োগী জানিয়েছেন, “সব তথ্য পেলে অবশ্যই তদন্ত করে দেখা হবে। কোনও শৈথিল্য হবে না। মানিকতলা ব্লাড ব্যাঙ্কের অধিকর্তা ডা. স্বপন সরেনের সঙ্গে দফায় দফায় যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাঁর মোবাইল ‘নট রিচেবল।’ তবে সহ অধিকর্তা স্পষ্ট জানিয়েছেন, “রক্ত থাকলে দিতেই হবে। এটা মানবিক দিক দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” তিনিও বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

Advertisement

রক্ত বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ। অভিযোগ প্রমাণ হলে কঠোর শাস্তি পেতে হয় অভিযুক্তকে। কিন্তু সরকারি সহায়তায় যেসব স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বড় মাপের রক্তদান শিবির করে তাদের একটা বড় অংশের অভিযোগ তুলেছেন বেসরকারি ব্লাড ব্যাংক বা সরকারি মদতপুষ্ট নয় এমন রক্তদান শিবিরে পেশাদার রক্তদাতারা ঢুকে পড়েছে। মারাত্মক অভিযোগ-দাবিমাফিক অর্থ লেনদেন হয়। কারণ, পেশাদার রক্তদাতা অর্থাৎ অর্থের বিনিময়ে যাঁরা রক্ত বিক্রি করেন তাঁদের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা যেমন তুলনামূলকভাবে কম থাকে তেমনই বিভিন্ন রোগের বাহক হয়ে থাকে তারা। তাই ড্রাগ অ্যান্ড কসমেটিকস আইন অনুসারে রক্ত বিক্রি দণ্ডনীয় অপরাধ। কিন্তু নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে এমন অভিযোগ আসায় প্রমাদ গুনছে স্বাস্থ্যদপ্তরের ব্লাড সেল। অভিযোগ থাকলেও প্রমাণ করা কঠিন।

স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. সিদ্ধার্থ নিয়োগীর কথায়, “সরকারি সাহায্যে রক্তদান শিবিরে রক্ত দেওয়ার আগে যেমন দাতার রক্তের হিমোগ্লোবিন, রক্তচাপ এবং শেষ কবে রক্তদান করেছিল তা যাচাই করা হয়। শিবিরের পর প্রাপ্ত রক্ত বিভিন্ন উপায়ে দফায় দফায় পরীক্ষা হয়। অনেক রক্তে ত্রুটি থাকলে তা নষ্ট করে ফেলা হয়। কিন্তু এর বাইরে কিছু থাকলে বলা মুশকিল।” যদিও রক্তদান আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত দীপঙ্কর মিত্রর কথায়, “সরকারি সাহায্যে রক্তদান শিবিরে টিফিন খরচ বাবদ ২৫ টাকা করে পেয়ে থাকে। তাই পেশাদার রক্তদাতাকে যুক্ত করা কার্যত অসম্ভব। তবে আমরা চাইব বেসরকারি কিছু ব্লাড ব্যাংকে সরকার কঠোর নজরদারির মধ্যে আনুক। তাহলেই সরষে থেকে ভূত তাড়ানো সম্ভব।”

[আরও পড়ুন: মধ্যরাতে ইডির হাতে গ্রেপ্তার শিব সেনা মুখপাত্র সঞ্জয় রাউত, তুললেন ষড়যন্ত্রের অভিযোগ]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ