সুব্রত বিশ্বাস: লকডাউনে কাজ গিয়েছে। কারখানার মালিক ঝুপড়ি আবাস থেকে তাড়িয়ে দিয়েছেন শ্রমিকদের। দীর্ঘ কর্মহীনতায় দিল্লি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন ওড়িশার কটকের প্রত্যন্ত প্রান্তের ১৬ জন শ্রমিক। শ্রমিক ট্রেনে কোনওরকমে হাওড়া আসেন বাপি মুন্ডিয়া, বাবলি বালমুছু, অর্জুন হাসদ, ধনেশ্বর হাসদারা। বৃহস্পতিবার খুব ভোরে শ্রমিক ট্রেনে হাওড়া এলেও কটকে যাওয়ার মতো কোনও ব্যবস্থা তাঁদের জন্য ছিল না। ট্রেন হাওড়া আসার পরই তাঁদের স্টেশন ছাড়তে হয়। সবাই রাজ্যের ব্যবস্থায় বাড়ি ফিরে গেলেও ১৬ জন আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ স্টেশনের বাইরে ঘোরাঘুরি করতে থাকেন।
রেলপুলিশ জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে, তাঁদের কাছে বাড়ি ফেরার মতো অর্থ নেই। তাই কি করবেন ভাবতে পারছে না। শ্রমিকদের দুরাবস্থার কথা জানতে পেরে রেলপুলিশ তাঁদের ওয়েটিং রুমে নিয়ে যায়। সামাজিক দূরত্ব খাওয়া, থাকার ব্যবস্থা করে দেয়। শুক্রবার রেলপুলিশ ১৬ জনকে নিজেদের টাকায় টিকিট কেটে চড়িয়ে দেয় ভুবনেশ্বরগামী ট্রেনে।
হাওড়া জিআরপির আইসি আবদুল গফফার বলেন, “এই শ্রমিকরা দিল্লিতে কাজ করতেন। কর্ম এবং বাসস্থান হারিয়ে ফেলে বাড়ি ফিরছিলেন শ্রমিক ট্রেনে। কিন্তু সেটি হাওড়ায় যাত্রা সমাপ্ত করায় বিপদে পড়েন তাঁরা।” তাই নিজেরাই টাকা দিয়ে ১৬ জন শ্রমিককে টিকিট কেটে দেয় রেলপুলিশ। শুক্রবার তাঁরা বাড়ির উদ্দেশ্যে ট্রেনে চড়েন। রেল পুলিশ সুপার এম কন্নান বলেন, “শুধু আইনি সমস্যার সমাধান নয়, পুলিশের সামাজিক দায়িত্বও রয়েছে। যা পালন করল হাওড়া জিআরপি।”
এদিকে ৪ জুন থেকে বাংলা, ঝাড়খন্ড ও অন্ধ্রের বেশ কিছু স্টেশন থেকে বহু ট্রেনের স্টপেজ তুলে দেওয়ার চরম বিপাকে পড়েন হাজার হাজার যাত্রী। ট্রেন না দাঁড়ানোর ক্ষুব্ধ যাত্রীরা বিক্ষোভ দেখান বহু স্টেশনে। মুম্বই থেকে হাওড়াগামী ট্রেন ধরতে এসে বেশ কিছু স্টেশনে যাত্রীরা জানতে পারেন, টাটানগর, চক্রধরপুরে ট্রেনটি দাঁড়াবে না। বৃহস্পতিবার থেকে স্টপেজ তুলে দেওয়া হয়েছে। এরপরেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন যাত্রীরা। রায়পুর স্টেশনে বিক্ষোভ দেখান যাত্রীরা। অভিযোগ, ১ জুন থেকে যে একশো জোড়া ট্রেন চলছে, তার টিকিট দেওয়া শুরু হয়েছে ২১ মে থেকে। অনেকেই টিকিট কেটেছেন আগেই।
২ জুন রাতে রেল ঘোষণা করে, ৪ জুন থেকে বেশ কিছু ট্রেন অনেকগুলি স্টেশনে দাঁড়াবে না। ফলে অসংখ্য যাত্রী বিপাকে পড়েন। রায়পুর দিয়ে মুম্বই ও আহমেদাবাদ এক্সপ্রেস হাওড়ায় আসে। যাতে প্রায় দশ হাজার যাত্রীর টাটায় আসার কথা। স্টপেজ ওঠায় বিপাকে পড়েন অসংখ্য যাত্রী। দক্ষিণ পূর্ব রেল জানিয়েছে, রাজ্য সরকারগুলি বেশ কিছু স্টেশনে স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে পারবে না। রাজ্যের আবেদনে বিভিন্ন জায়গা থেকে স্টপেজ তুলে দেয় রেল। বাতিল টিকিটের টাকা ফেরত পাওয়া যাবে বলে রেল জানিয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.