Advertisement
Advertisement

প্রদেশ কংগ্রেসে ভাঙন রুখতে ‘চ্যালেঞ্জ’ নিলেন ‘ছোড়দা’

আগামী নির্বাচনে কে হবে প্রদেশ কংগ্রেসের ‘বন্ধু’?

Somen Mitra takes charges of Pradesh Congress
Published by: Kumaresh Halder
  • Posted:September 21, 2018 7:47 pm
  • Updated:September 21, 2018 7:57 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ রাজনৈতিক সন্ন্যাসের পর হঠাৎ ফের বাংলার রাজনীতিতে ফিরলেন  ‘ছোড়দা’৷ দলের ওয়ার্কিং কমিটির আস্থাভাজন হয়ে প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষপদে বসলেন সোমেন মিত্র৷ আনুষ্ঠানিক ভাবে সভাপতি দায়িত্বগ্রহণ এখন সময়ের অপেক্ষা। শুক্রবার বিধানভবনে সংবাদিক সম্মেলনে আগাম পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেই দিলেন নয়া প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি৷ লোকসভা ভোটের আগে দলের ভাঙন আটকানোই যে তাঁর প্রথম লক্ষ্য তাও সরাসরি জানাতে ভোলেননি সোমেন৷ তবে, আগামী নির্বাচনে কে হবে প্রদেশ কংগ্রেসের ‘বন্ধু’? কোন জোটে পা বাড়াবে কংগ্রেস? জল্পনার আগুনে ঘি ঢেলে কিছুই খোলসা করলেন না বাংলার রাজনীতিতে পোড়খাওয়া সোমেন মিত্র৷

[৮৪ ঘণ্টার রূদ্ধশ্বাস লড়াই, কীভাবে সম্পন্ন হল ‘অপারেশন বাগরি’?]

Advertisement

এদিন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সোমেনবাবু বলেন, ‘‘এই মুহূর্তে দলের ভাঙন রোখাটাই আমরা কাছে বড় চ্যালেজ্ঞ৷ গত বিধানসভায় দলের সাফল্য এলেও তা আমরা ধরতে রাখতে পারিনি৷ এখন দলের ভাঙন রোখাটাই আমাদের মূল কাজ৷’’ কিন্তু, কীভাবে দলের ভাঙন রুখবেন সোমনবাবু? তাঁর মন্তব্য, ‘‘কংগ্রেস যদি এক হয়ে লড়াইয়ে নামে, তাহলে ভাঙন রোখা সম্ভব৷ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে কংগ্রেস যদি নিজের শক্তিতে মাঠে নামে তবেই দল বাঁচানো যাবে৷’’

Advertisement

[নিম্নচাপের জেরে ভারী বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গে, ওড়িশায় আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়]

কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির সেই প্রেস বিবৃতি

লোসকভা নির্বাচনের কথা ভেবে কংগ্রেস কী বামেদের সঙ্গে জোটের রাজনীতি চালিয়ে যাবে? বিজেপিকে রুখতে তৃণমূলের হাত ধরবে রাজ্য? তাতে কি আদৌও লাভ হবে প্রদেশ কংগ্রেসের? জল্পনা জিয়ে রেখে সোমনবাবু মন্তব্য, ‘‘কার সঙ্গে জোট হবে, কে কার সঙ্গে হাত ধরবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার মালিকানা আমার নেই৷ দল যা সিদ্ধান্ত নেবে তাই হবে৷’’ তবে, প্রদেশ কংগ্রেস ‘একলা’ চললেই সাফল্য আসবে বলেও মন্তব্যও করেন তিনি৷

শুক্রবার একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি পদ থেকে অপসারিত করা হয় অধীররঞ্জন চৌধুরিকে৷ তাঁর জায়গায় সোমেন মিত্রকে নয়া সভাপতি ঘোষণা করে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি। ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের কথা মাথায় রেখে অধীরকে কম গুরুত্বপূর্ণ পদে পাঠানো হয়েছে বলে কংগ্রেস হাই কমান্ড সূত্রে জানা গিয়েছে৷ লোকসভা ভোটের প্রচার কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে তাঁকে৷

এআইসিসি সূত্রে খবর, আগামী লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে জোটের রাস্তা খুলে দিয়ে ‘নরমপন্থী’ নেতাদের ঘাড়ে প্রদেশ কংগ্রেসের দায়িত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে৷ সভাপতি পদে বদল ঘটানোর পাশাপাশি এদিন চার প্রবীণ নেতাকে কার্যকরী সভাপতি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে হাইকম্যান্ড৷ কার্যকরী সভাপতির পদে বসানো হয়েছে শংকর মালাকার, নেপাল মোহাতো, আবু হাসেম খান চৌধুরি (ডালু) ও দীপা দাসমুন্সিকে। প্রাক্তন প্রদেশ সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যকে কো-অর্ডিনেশন কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়েছে৷

[মহরমে বন্ধ হোক অস্ত্র প্রদর্শন, আবেদন সাংসদ ইদ্রিশ আলির]

কংগ্রেস সূত্রে খবর, প্রদেশ কংগ্রেসের নয়া এই টিম বরাবারই তৃণমূলের দিকেই ঝুঁকে৷ বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোটের বিষয়ে সব থেকে বেশি বিরোধিতা এসেছিল এই টিমের তরফেই৷ গত বিধানসভা নির্বাচনে বামেদের সঙ্গে জোট করে দ্বিতীয় বৃহত্তম দল হিসাবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করতে পারলেও সাফল্য ধরে রাখতে পারেনি কংগ্রেস৷ দলের নেতাদের সঙ্গে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরির দূরত্ব তৈরি হওয়ায় দলের আন্দরে বাড়ছিল বিতর্ক৷ দলের সাফল্য ধরে রাখতে নিজের দক্ষতা দেখাতে ব্যর্থ ছিলেন অধীর৷ ফলে, এই নিয়ে দিল্লির নেতাদের কাছে কম সমালোচনা হজম করতে হয়নি বহরমপুরের সাংসদকে৷

এদিকে দলভাঙন ও দলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে প্রাক্তন সভাপতির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ ছিল হাইকমান্ড৷ একদিকে বাংলার দায়িত্ব ও কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ সাংসদের ভূমিকা পালন করতে গিয়েও সমস্যায় পড়ছিলেন তিনি৷ ফলে, লোকসভা নির্বাচনের আগে অধীরকে সরিয়ে বাংলার রাজনীতিতে পোড়খাওয়া সোমেন মিত্রের উপর ভরসা রাখল হাই কমান্ড৷ তবে, গত বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পর দীর্ঘদিন প্রচারের বাইরে ছিলেন সোমেনবাবু৷ ফলে, নতুন দায়িত্ব দিয়ে ফের বাংলার ময়দানে কীভাবে কামাল দেখান ‘ছোড়দা’ তারই অপেক্ষায় রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ