Advertisement
Advertisement

মারণ ক্যানসারকে দূরে ঠেলে ঠাকুর গড়ছে এই মৃত্যুঞ্জয়ী কিশোর

অভাবের সংসারে চিকিৎসার খরচ মেটানো দুষ্কর।

Survived deadly cancer, this teen making Durga Idol's with immense talent
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:August 27, 2017 3:35 am
  • Updated:October 3, 2019 12:57 pm

মণিদীপা কর: রক্তে ক্যানসারের বিষ। হাতে শিল্পীর টান। ছ’বছর আগে অর্পণ সর্দারের ব্লাড ক্যানসার ধরা পড়েছিল। অভাবের সংসারে ক্যানসার চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে আর্ট কলেজে পড়া হয়ে ওঠেনি। দপ করে নিভে গিয়েছিল শিল্পী হওয়ার স্বপ্ন। আজ অবশ্য নিজেকে যথেষ্ট ভাগ্যবান মনে করে অর্পণ। কারণ, ক্যানসারই তাকে শিল্পী করে তুলেছে।

পুজো আর এক মাস। দুর্গা প্রতিমা বানাতে ভীষণ ব্যস্ততা। মূর্তি বিক্রির টাকায় আর্ট কলেজে পড়ার স্বপ্ন সফল করতে চায় অর্পন। ঠাকুরপুকুর সরোজ গুপ্ত ক্যানসার ইনস্টিটিউট অ্যান্ড রিসার্চ সেন্টারের চিকিৎসক ডা. সোমা দে, ডা. আর এন ঘোষ ও আর্ট থেরাপিস্ট পাপড়ি সাহার অনুপ্রেরণায় একের পর এক মূর্তি বানাচ্ছে সে। কোনও বারোয়ারি পুজোর মূর্তি তৈরির অর্ডার পায়নি। তবে ছোট একটি দুর্গামূর্তি ছ’হাজার টাকায় বিক্রি হয়েছে। ছেলেবেলায় দাদু গোবিন্দ সর্দারকে দেখে মূর্তি গড়তে শিখেছিল। সেই শিক্ষাই এখন স্বপ্ন পূরণের কাণ্ডারী। নতুন করে এই স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছে ঠাকুরপুকুর ক্যানসার হাসপাতাল।

Advertisement

[পুজোর আগেই থিমের চমক, শহর মাতাচ্ছে ‘বালির গণেশ’]

অর্পণের বাবা চন্দ্রনাথ সর্দার পেশায় মালি। মা জয়ন্তী সর্দার গৃহবধূ। বাড়ি বজবজের চোরিয়ালের প্রত্যন্ত গ্রামে। ২০১২ সালে লিউকোমিয়া ধরা পড়েছিল অর্পণের শরীরে। তখন সে নবম শ্রেণির ছাত্র। এনআরএস মেডিক্যাল কলেজ ও টাটা মেডিক্যাল সেন্টারে বেড না পেয়ে শেষে ভাগ্য খোলে ঠাকুরপুকুর হাসপাতালে। প্রথম দফায় প্রায় দশ মাস হাসপাতালে থাকতে হয়েছিল। সেখানেই রং-তুলির সঙ্গে নতুন করে বন্ধুত্ব। একে রোগযন্ত্রণা। তার উপর হাসপাতালের চার দেওয়ালে বন্দিদশা। সব মিলিয়ে কথা বলা, মেলামেশা বন্ধ করে দিয়েছিল। হাসপাতালের আর্ট থেরাপিস্ট পাপড়ি সাহার চেষ্টায় নতুন জীবন ফিরে পায় অর্পণ। পাপড়ি দেবীই তার হাতে রং-তুলি তুলে দেন। হাসপাতালের ঘরে বসেই ছবি আঁকা শুরু করে।

Advertisement

চিকিৎসার খরচ মেটাতে চেনা পরিচিতের কাছে হাত পাততে হয়েছে চন্দ্রনাথ ও জয়ন্তীকে। জমি, গরু বিক্রি করেছেন। রোগ সারাতে যখন আরও আটটি কেমোথেরাপি দেওয়া বাকি তখন তাঁরা নিঃস্ব। কোথা থেকে টাকার জোগাড় হবে সেই চিন্তায় দিশাহারা হয়ে পড়েছিলেন অর্পণের বাবা-মা। ভরসা জোগান পাপড়ি সাহা। অর্পণের আঁকা বুদ্ধ মূর্তি তাঁর চেষ্টাতেই দিল্লির এক সংস্থায় দু’লক্ষ টাকায় বিক্রি হয়। আর সেই টাকায় চিকিৎসা শেষ হয়। এ বছরই উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছে অর্পণ। ইচ্ছে আর্ট কলেজে পড়ার। এবারও দিশা দেখিয়েছেন ডা. সোমা দে। তাঁর অনুপ্রেরণায় সব প্রতিকূলতাকে দূরে সরিয়ে সৃষ্টি সুখে ডুব দিয়েছে মৃত্যুঞ্জয়ী কিশোর।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ