শুভঙ্কর বসু: কোন আইনে বারো বছর ধরে শিক্ষকের মাইনে আটকে রাখা হয়েছে, জবাব চাইল কলকাতা হাই কোর্ট!
প্রায় পনেরো বছর শিক্ষকতা করেছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার দীনবন্ধু পুরকাইত। এর মধ্যে ১২ বছর মাইনে ছাড়াই ছাত্র পড়িয়েছেন তিনি। এমনকী অবসরের পর এখনও মেলেনি কানাকড়ি। গোটা জীবনের কষ্টার্জিত অর্থের দাবিতে ফের একবার সেই আদালতেরই দ্বারস্থ হয়েছেন প্রৌঢ় এই শিক্ষক।
২০০০ সাল থেকে দক্ষিণ ২৪ পরগনার আলিপাড়া আম্বেদকর জুনিয়র হাই স্কুলে চাকরি করছেন দীনবন্ধু পুরকাইত। ১৯৯৭ সালে খানিকটা ব্যক্তিগত উদ্যোগেই এই স্কুলটি খাড়া করেছিলেন পেশায় শিক্ষক দীনবন্ধু পুরকাইত। ২০০০ সালে স্কুলটিকে বৈধতা ও অনুমোদন দেয় মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। হাই কোর্টের নির্দেশে তখন থেকেই ওই স্কুলের অরগানাইজিং অ্যাসিস্ট্যান্ট টিচার হিসাবে কাজ করছেন দীনবন্ধুবাবু। কিন্তু প্রায় সাড়ে তিন বছর চাকরির পর ২০০৩ সালের অক্টোবর মাসে কোনও কারণ না দেখিয়েই তাঁর বেতন বন্ধ করে দেয় শিক্ষা দপ্তর। এরপর মাইনের জন্য বিভিন্ন জায়গায় একাধিকবার দরবার করেছেন তিনি। কিন্তু কোনও কাজ হয়নি। এমনকী কেন বেতন বন্ধ করা হয়েছে তা জানানো পর্যন্ত হয়নি।
এরপর একরকম বাধ্য হয়েই হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন দীনবন্ধু পুরকাইত। তাঁর আইনজীবী পঙ্কজ হালদার বলেন, ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিচারপতি দেবাশিস করগুপ্ত দীনবন্ধুবাবুর বকেয়া বেতনের সমস্ত টাকা একবারে মিটিয়ে দিতে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের যুগ্মসচিবকে নির্দেশ দেন। এরপর আদালতের নির্দেশ মতো জেলা স্কুল পরিদর্শককে মাইনের সমস্ত টাকা মিটিয়ে দিতে নির্দেশ দেন যুগ্মসচিব। কিন্তু তারপরও বেতন বাবদ একটা পয়সাও পাননি তিনি। উল্টে আলিপাড়া আম্বেদকর জুনিয়র হাই স্কুল থেকে বদলি করে তাঁকে চুনখুলি দৌলতপুর পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২০১৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর অবসর নিয়েছেন দীনবন্ধুবাবু। কিন্তু এখনও মেলেনি বেতনের টাকা। মেলেনি অবসরকালীন সমস্ত ভাতাও। সব মিলিয়ে বাকি প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা।
বাধ্য হয়েই ফের আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর এজলাসে। বিচারপতি চক্রবর্তী রাজ্যের কাছে জানতে চেয়েছেন কোন আইনে এই শিক্ষকের মাইনে ও অবসরকালীন প্রাপ্য বকেয়া আটকে রাখা হয়েছে।
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.