Advertisement
Advertisement

বাড়ি সংস্কার, সাময়িক ঠিকানা বদল মুখ্যমন্ত্রীর

ওই সময় তিনি থাকতে চান তৃণমূলভবনে৷

The address of CM will change temporarily
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:November 5, 2016 11:24 am
  • Updated:June 24, 2022 3:54 pm

বিশেষ সংবাদদাতা: টালির চালার বাঁশে ঘুণ৷ পচে গিয়েছে কড়ি-বরগা৷ বৃষ্টি হলে জল পড়ে৷ দেওয়ালে নোনা৷ উৎপাত ইঁদুর, পোকা-মাকড়ের৷

যে কোনও সময় ভেঙেও পড়তে পারে এই ঘর৷

Advertisement

দশ বাই দশের এই স্যাঁতস্যাঁতে জায়গা যে কোনও মুখ্যমন্ত্রীর থাকার উপযুক্ত নয়, তা অনেক আগেই বলে দিয়েছিল নিরাপত্তা অফিসাররা৷ স্থপতিরাও ফিট সার্টিফিকেট দেয়নি৷ কিন্তু তিনি গোঁ ধরে ছিলেন, এখানে, এই ভাবেই থাকবেন৷ অবশেষে নিরাপত্তা অফিসারদের জেদের কাছে হার মানতে হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে৷ আপাতত এক মাসের জন্য ৩০ বি হরিশ চ্যাটার্জি স্ট্রিটের বাড়ি ছাড়তে হবে৷

Advertisement

ওই সময় তিনি থাকতে চান তৃণমূলভবনে৷ একান্ত সেখানে সম্ভব না হলে কলকাতার মধ্যে কোনও সরকারি অতিথিশালায়৷ নবান্ন সূত্রে শুক্রবার জানা গিয়েছে, শীঘ্রই মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি সংস্কারের কাজ শুরু হবে৷ মুখ্যমন্ত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে৷ নানা বিষয় খতিয়ে দেখার পাশাপাশি, তাঁর বাড়ির হাল নিয়েও আলোচনা হয়৷ অফিসাররা তখনই সিদ্ধান্ত নেন, মুখ্যমন্ত্রী রাজি না হলেও তাঁকে বোঝাতে হবে৷ অবিলম্বে তাঁর বাড়ি মেরামত দরকার৷

প্রধানমন্ত্রী থাকার সময় অটলবিহারী বাজপেয়ী এসে তাঁর টালির চালা দেখে  হতবাক হয়ে যান৷ পরে বলেছিলেন, “মমতা তুমি এখানে থাকো!” তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি ভৈরোঁ সিং শেখাওয়াত, জর্জ ফার্ন্ডান্ডেজের মতো দিল্লির তাবড় নেতারা এসেছেন৷ এসেছেন শ্যাম পিত্রোদার মতো আন্তর্জাতিক মাপের বিশিষ্ট মানুষও৷ তাঁরা সবাই অবাক হয়েছেন মমতার ঘর দেখে৷ কেন তিনি জনগণের নেত্রী তা বুঝে গিয়েছেন ৩০বি-তে পা দিয়ে৷ আসলে সাধারণ মানুষ যেমন মমতাকে নিজের ঘরে মেয়ে মনে করেন, তেমনই মমতাও চান তাদের মতোই থাকতে৷ তাই মুখ্যমন্ত্রী হয়েও বাড়ি বদল করেননি৷

এই ঘর তাঁর কাছে পবিত্র মন্দির৷ মা গায়ত্রীদেবীর কত মধুর স্মৃতি এখানে৷ এক সময় ছিল মা-মেয়ের সংসার৷ এখন একা৷ এ কাহিনি কালীঘাটের আদি গঙ্গার পাড়ে যেন এক উপাখ্যান৷ যখন তিনি মুখ্যমন্ত্রী হন, তখন অনেকেই ভেবেছিলেন মমতা বাড়ি বদল করবেন৷ তিনি তা করেননি৷ এখনও করছেন না৷ মাত্র এক মাস সময়, বাড়ি সংস্কার শেষ হলে আবার ফিরে আসবেন নিজের আস্তানায়৷ তবে টালির চালা টালিরই থাকছে৷ কোনও বাহুল্য স্পর্শ করবে না৷ শুধু নিরাপত্তার কারণে যে টুকু ব্যবস্থা করা দরকার তাই-ই করা হবে৷ এবং সবটাই হবে নিজের খরচে৷

অতীতে মুখ্যমন্ত্রীদের মধ্যে আমৃত্যু জ্যোতি বসু ছিলেন সরকারি আবাস ইন্দিরাভবনে৷বুদ্ধবাবু এখনও রয়েছেন পাম অ্যাভিনিউয়ে সরকারি ফ্ল্যাটে৷ তবে সিদ্ধার্থশংকর রায় থাকতেন তাঁর নিজের বেলতলার বাসভবনে৷

মমতা কিন্তু অন্যরকম৷ যেমন সরকারি গাড়ি চড়েন না, সরকারি অতিথিশালায় গেলে ভাড়া দিয়ে থাকেন, তেমনই নিজের টালির চালায় পাকাপাকি ব্যবস্থা৷ এই এক মাস মুখ্যমন্ত্রী কোথায় থাকবেন, তা নিয়ে খোঁজখবর চলেছে৷ নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ৷ মমতার পছন্দ তৃণমূলভবন৷ অতীতে তিনি বহুবার সেখানে থেকেছেন৷ কিন্তু সরকারি আবাসগুলির মধ্যে মিন্টো পার্ক, গোলপার্ক হেস্টিং ইত্যাদি এলাকায় অতিথিশালা রয়েছে৷ সবই সাদামাটা৷ নতুন সরকারি বাড়ি সৌজন্যের কাজ শেষ হয়নি৷ ফলে কোনও একটিতে এক মাসে কাটিয়ে দিয়ে আবার কালীঘাটে নিজের ঘরে ফিরবেন মুখ্যমন্ত্রী৷

শুধু দোরগোড়ায় ফুলের গাছগুলো তিরিশ দিন থাকবে একা৷

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ