সু্প্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায়: যথাযথ উদ্যোগের অভাবে বন্ধ হয়ে গেল লালবাজারের সেই অতি জনপ্রিয় ‘উৎসব অ্যাপ’। এর ফলে এবারে আর শহরবাসী পুলিশের এই অ্যাপের মাধ্যমে পুজোর যাবতীয় হাল-হকিকত জানতে পারবেন না। এদিকে, পরিবার নিয়ে ঠাকুর দেখার জন্য পুজোয় একদিন কলকাতা পুলিশের কনস্টেবলদের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি, পুজো উদ্যোক্তাদের সুবিধার্থে এবার ‘আসান’-এর সময়সীমা পঞ্চমী পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে পুজোর শেষ মুহূতের্র প্রস্তুতি দেখতে বের হচ্ছেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা। একডালিয়া এভারগ্রিনের পুজো প্রস্তুতি দেখেই প্রথম শহর পরিক্রমা করবেন তিনি। এরপর দেশপ্রিয় পার্ক, সুরুচি সংঘ হয়ে চলে আসবেন মধ্য কলকাতার পুজো মণ্ডপে। সেখানে সমস্ত নিয়মকানুন মেনে মণ্ডপ তৈরি হচ্ছে কিনা তা নিজের চোখে খতিয়ে দেখবেন পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা।
[আরও পড়ুন:পুজোর আগেই বদলাচ্ছে মেট্রোর সময়সূচি, দেখে নিন একনজরে]
বছর চারেক আগে অত্যন্ত উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে ‘উৎসব অ্যাপ’ চালু করেছিলেন লালবাজারের পুলিশ কর্তারা। প্রথমে এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন রাজা মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের প্রাক্তন ছাত্র অভীক সাহা। মূলত তিনিই এই অ্যাপ চালু করার জন্য লালবাজারে প্রস্তাব দিয়েছিলেন। সেই সময় পুলিশ কমিশনার ছিলেন রাজীব কুমার। এই প্রস্তাবে খুশি হয়ে বিষয়টি দেখার জন্য তিনি দায়িত্ব দিয়েছিলেন তৎকালীন যুগ্ম নগরপাল (এস্টাবলিশমেন্ট) সুজয় চন্দকে। তিনি এরপর অভীককে সঙ্গে নিয়ে নিজেদের উদ্যোগে চালু করেছিলেন ‘উৎসব অ্যাপ’। অত্যন্ত জনপ্রিয়তার সঙ্গে সেবারের পুজোয় রমরমিয়ে চলেছিল এই অ্যাপ। এর সাফল্য দেখে পরের বছরেও এই অ্যাপ চালু রেখেছিলেন লালবাজারের পুলিশকর্তারা।
গতবছরেও এই ‘উৎসব অ্যাপ’ চালু ছিল। এরই মাঝে চাকরি থেকে অবসর নিয়ে ওএসডি হয়ে যান সুজয় চন্দ। পাশাপাশি মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজের ওই প্রাক্তন ছাত্রও লালবাজারের কর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা বন্ধ করে দেন। এরফলে এবারের পুজোয় আর ‘উৎসব অ্যাপ’-এর কথা কারও মাথাতেও আসেনি। ফলে বন্ধ হয়ে গেল এই অ্যাপ। কী ছিল এই জনপ্রিয় অ্যাপে? শহরের সমস্ত পুজোর হাল হকিকত ছিল তাতে। বিগ বাজেটের যে কোনও পুজোর থিম থেকে শুরু করে পুজোর রাতে কোন রাস্তায় উপচে পড়া ভিড়, কোন মণ্ডপের পাশে অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে, কোনখানে রয়েছে পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ, মণ্ডপের কাছে কোন স্টলে কী কী খাবার পাওয়া যায়? তার সমস্ত খুঁটিনাটি ছিল এই জনপ্রিয় অ্যাপে। যে কোনও স্মার্ট ফোনে এই অ্যাপ দেখে ঠাকুর দেখার জন্য বাড়ি থেকে বের হতে পারতেন দর্শনার্থীরা।