ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: অসমে এনআরসির চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর বাদ পড়েছে ১৯ লক্ষের বেশি মানুষের নাম। তারপর থেকেই বিভিন্ন জল্পনা শুরু হয়েছে বাংলায়। এই রাজ্যে বসবাসকারী অনেকের মনেই আশঙ্কা দানা বেঁধেছে! একদিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও বিজেপি বাংলায় এনআরসি হবেই বলে দাবি করছে। অন্যদিকে তৃণমূলের তরফে তার তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে। রাজ্যব্যাপী মিছিল ও পথসভা করেছে। বিরোধী সিপিএম ও কংগ্রেসের সঙ্গে একসুরে বিজেপিকেও আক্রমণ করেছে। কিন্তু, এবার এনআরসি সংক্রান্ত বিষয়ে রাজ্যবাসীর আতঙ্ক কাটাতে কর্মশালা করতে চলেছে তারা। প্রতিটি জেলায় তৈরি করা হবে আইনি সহায়তা কেন্দ্রও। যেখানে বর্তমান নথি খতিয়ে দেখার পাশাপাশি এই সংক্রান্ত বিষয়ে মানুষের প্রশ্নের উত্তরও দেওয়া হবে। তৃণমূলের সঙ্গে যৌথভাবে এই কাজ করতে চলেছে জমিয়তে-এ-উলেমায়ে হিন্দ। তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের উদ্যোগে আগামী শনিবার মহাজাতি সদনে এই সংক্রান্ত একটি কর্মশালা হবে। তারপরই তৃণমূলের লিগাল সেলের সঙ্গে মিলে জেলাগুলিতে আইনি সহায়তা কেন্দ্র চালু করা হবে। গত বুধবার এই কর্মসূচির কথা জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী ও জমিয়তে-উলেমা-হিন্দের প্রধান সিদ্দিকুল্লা চৌধুরি।
[আরও পড়ুন: জট কাটিয়ে এসেছে নথি, আলিপুর আদালতে শীঘ্রই শুরুর পথে রাজীব মামলা]
এপ্রসঙ্গে তিনি জানান, এনআরসি ও নাগরিকত্ত্ব আইন কী? তা বোঝানোর পাশাপাশি অসমে কেন এনআরসি করা হল, তাও জানানো হবে রাজ্যবাসীকে। এই জন্য জেলায় জেলায় তৈরি করা হবে লিগাল সেল। তারা আইনি সহায়তা কেন্দ্র থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের এই বিষয়ে সাহায্য করবে। প্রতিটি জেলায় কার কাছে থেকে সাহায্য পাওয়া যাবে তার তালিকাও তৈরি করা হবে। আগামী শনিবার মহাজাতি সদনে এই সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একটি কর্মশালা করা হচ্ছে। তাতে একজন প্রাক্তন বিচারপতিও উপস্থিত থাকবেন। কোনও নথিতে ভুল থাকলে কী করে সংশোধন করতে হবে তা ওই কর্মশালায় শেখানো হবে।
অসমের এনআরসি প্রক্রিয়া ও চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের পর সেখানকার পরিস্থিতি নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন সিদ্দিকুল্লা। বলেন, ‘এনআরসি নিয়ে আমরা আশঙ্কার কালো মেঘ দেখছি। সীমান্ত সংলগ্ন এলাকার মানুষের মনে ভোটার লিস্ট সংশোধন নিয়ে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। তা দূর করতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। কর্মশালার আয়োজন করা হচ্ছে। সেখানে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। পুরো বিষয়টি ভালভাবে পরিচালনার জন্য একটি পরামর্শদাতা কমিটি ও জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি তৈরি করা হচ্ছে। সেখানে মতুয়ারাও থাকবেন। রাজ্যবাসীর কাছে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত বিষয়ে সঠিক তথ্য পৌঁছে দিতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।’