Advertisement
Advertisement

Breaking News

‘ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিডের পিছনে কয়েকজন তৃণমূল নেতার ব্যক্তিগত স্বার্থ’

বিস্ফোরক সিদ্ধার্থনাথ সিং৷

vested interest of TMC leaders behind Bhangar unrest, claims BJP
Published by: Sangbad Pratidin Digital
  • Posted:January 18, 2017 8:17 pm
  • Updated:July 25, 2022 12:49 pm

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড তৈরির পিছনে তৃণমূলের কয়েকজন নেতার ব্যক্তিগত স্বার্থ জড়িয়ে রয়েছে। তাই প্রয়োজনে গুণ্ডা লেলিয়ে দিয়েও ভাঙড়ের জমি খালি করতে চাইছে তৃণমূল সরকার। বুধবার এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বিজেপির জাতীয় সচিব সিদ্ধার্থনাথ সিং। এদিন সংবাদসংস্থা এএনআইকে তিনি বলেন, “ভাঙড়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি চালিয়েছে। ওই জমি খালি করতে তৃণমূল তো গুণ্ডা লাগাবেই। গোটা প্রকল্পের পিছনে তৃণমূলের কয়েকজন নেতার ব্যক্তিগত স্বার্থ রয়েছে।”

(শ্রীনু খুনে হাত রয়েছে দিলীপ ঘোষের, বিস্ফোরক অভিযোগ স্ত্রী পূজার)

বিজেপির জাতীয় সচিব রাহুল সিনহা এদিন মন্তব্য করেছেন, তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দ্বন্দ্বে ভাঙড় রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। এএনআইকে রাহুল বলেছেন, “ভাঙড়ে তৃণমূলের লোকেরা লুঠপাট চালাত, টাকা তুলত। বখরা সংক্রান্ত বিষয়েই দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধেছে।” ভাঙড়ের ঘটনায় রাজ্যের শিল্পবান্ধব ভাবমূর্তি নষ্ট হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর অভিযোগ, এই ঘটনায় দেশের শিল্পমহলের কাছে বার্তা গেল, যে বাংলায় শিল্পস্থাপনের পরিবেশ নেই। যদিও বিজেপির এই অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়েছেন, ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড হবে না৷ জোর করে জমি নেবে না সরকার৷ এলাকার সাধারণ মানুষ না চাইলে এই প্রকল্প হবে না৷

Advertisement

(ভাঙড় কাণ্ডে বহিরাগতদের গ্রেফতারির নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর)

পুলিশের একটি সূত্রের দাবি, বহিরাগত-নকশালরা পুলিশ ও সাধারণ মানুষের উপর আক্রমণ চালিয়ে ভাঙড়ের পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ করে তুলেছিল৷ গুলিতে দু’জনের মৃত্যুর পর জেলা পুলিশের তরফ থেকে রাজ্য সরকারের কাছে এই রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে বুধবার৷ ভাঙড় এবং রসপুঞ্জের পরিস্থিতি নিয়ে বুধবারই ভবানীভবনে জরুরি বৈঠক করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এদিন কালীঘাট থেকে বেরিয়ে নবান্নে যাওয়ার পথে আলিপুরে রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশের সদর দফতর ভবানীভবনে আসেন মমতা৷ ডিজি সুরজিত্‍ করপুরকায়স্থ, আইজি আইন শৃঙ্খলা অনুজ শর্মা, আইজি দক্ষিণবঙ্গ অজয় রাণাডে, ডিআইজি প্রেসিডেন্সি ভরতলাল মিনা-সহ একাধিক পুলিশ কর্তাকে নিয়ে বৈঠক হয়৷ দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার দু’টি জায়গা কেন অশান্ত সেই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী৷ পরিস্থিতি সামলাতে কেন দেরি হচ্ছে তাও জানতে চান৷ প্রসঙ্গত, রসপুঞ্জে ছাত্র ও তার মাকে পিষে মারার ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের দাবিতেই ছিল বিক্ষোভ৷ এদিনই মূল অভিযুক্ত গ্রেফতার হওয়ায় ক্ষোভের আঁচ কমে যায়৷ পরিস্থিতি শান্ত করতে সবরকম চেষ্টা চলছে বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানান পুলিশ কর্তারা৷

Advertisement

(অশান্ত ভাঙড়ে এসে আশ্বাস দিন মুখ্যমন্ত্রী, দাবি গ্রামবাসীদের)

ভাঙড় প্রসঙ্গে পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, পুলিশ আক্রান্ত হলেও কখনওই গুলি চালানো হয়নি৷ এডিজি আইনশৃঙ্খলা অনুজ শর্মার সুরে সুর মিলিয়েছেন নিহতের পরিবারের সদস্যরা৷ গুলিতে মৃত্যু আলমগির ও মফিজুলের পরিবারের সদস্যরা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, পুলিশ নয়, বহিরাগত দুষ্কৃতীদের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে৷ মঙ্গলবারই অনুজ শর্মা জানিয়েছিলেন, “পুলিশ কোনও গুলি চালায়নি৷ বহিরাগতরাই ভাঙড়ের গ্রামে ঢুকে গুলি চালিয়েছে৷ বাইরের দুষ্কৃতীদের গুলিতেই ওই দুই গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে৷” সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, “জোর খাটিয়ে সরকার জমি অধিগ্রহণ করবে না৷ সাধারণ মানুষের ইচ্ছার বিরুদ্ধে কোনও প্রকল্প নয়৷ এলাকার উন্নয়নের জন্য বাজার দরে চার বছর আগে জমি কিনেছিল পাওয়ার গ্রিড কর্পোরেশন৷ জোর করে জমি নেওয়া হয়নি৷ বাইরে থেকে কিছু জমি মাফিয়া এবং যাদবপুর-প্রেসিডেন্সির নকশালপন্থীরা কাজ বন্ধ করতে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে হাঙ্গামা বাধানোর চেষ্টা করছে৷”

(বিদ্যুৎ প্রকল্পকে কেন্দ্র করে অগ্নিগর্ভ ভাঙড়, গুলিবিদ্ধ ২)

আজও ভাঙড়ের পরিস্থিতি ছিল থমথমে৷ এদিনও একাধিক জায়গায় ইট, গাছের গুঁড়ি ফেলে রাস্তা অবরোধ করে রেখেছেন গ্রামবাসীরা৷ বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভও দেখাচ্ছেন তাঁরা৷ তবে পুলিশ কোনও অভিযান করেনি৷ কাশীপুর থানায় দফায় দফায় বৈঠক করছেন জেলা পুলিশের কর্তারা৷ এলাকা শান্ত রাখার বার্তা দলের কর্মীদের দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব৷ প্রশাসনও নজর রাখছে, কোনও অবস্থায় বহিরাগতরা যাতে ফের ভাঙড় অশান্ত করে তুলতে না পারে৷ বিদ্যুতের সাবস্টেশন গড়া হবে না, প্রশাসন পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়ার পরও মঙ্গলবার অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে ভাঙড়৷ পরিকল্পিত হামলা চলে পুলিশকে লক্ষ্য করে৷ ভাঙচুর হয় পরপর গাড়ি৷ ইটবৃষ্টি, গুলি, আগুনে রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় পোলেরহাট৷ গুলিতে প্রাণ হারান মফিজুল আলি খান (২৭) এবং আলমগির মোল্লা (২১) নামে দুই যুবক৷ জখম মফিজুল আলিকে এসএসকেএম ও আলমগিরকে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে ডাক্তাররা মৃত ঘোষণা করেন৷ গুলিবিদ্ধ আকবর আলি মোল্লা আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন৷ ভাঙড়ে উড়িয়াপাড়ায় বাড়ি মফিজুলের৷ স্ত্রী, সন্তান রয়েছে তাঁর৷ তাঁর পরিবারের সদস্য ইমতাজ আলি খান অভিযোগ করেছেন, পুলিশ গুলি চালায়নি৷ আরাবুলের দুষ্কৃতীবাহিনী গুলি চালিয়েছিল৷ পাশাপাশি আলমগির প্রথমে ডিরোজিও কলেজে পড়ত৷ বর্তমানে ভাঙড় কলেজে পড়ত৷ পাঁচ ভাই, দুই বোন রয়েছে তাঁর৷ এসএসকেএমে ময়নাতদন্তের পর এদিন আলমগিরের দেহ ভাঙড়ে নিয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে৷ আলমগিরের বাবা কেতাব আলি মোল্লা জানিয়েছেন, দুষ্কৃতীরা গুলি চালিয়েছে৷ আর তাতেই মৃত্যু হয়েছে৷ এদিন আলমগিরের বাড়িতে যান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি ও এসইউসিআইয়ের প্রাক্তন সাংসদ তরুণ মণ্ডল৷ আরাবুলের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন তাঁরা৷ এদিন ভাঙড়ে নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়েছে পুলিশ ও র‍্যাফের উর্দি পাওয়াকে কেন্দ্র করে৷ বেশ কয়েকটি পোশাক পাওয়া যায় ভাঙড় এলাকা থেকে৷ কীভাবে এই পোশাক এল, তা নিয়ে সরব গ্রামবাসীরা৷ যদিও জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রকল্প এলাকা ও গাড়িতে পুলিশের কয়েকটি পোশাক ছিল৷ ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের সময় সেগুলি দুষ্কৃতীরা নিয়ে যায়৷

(বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ বন্ধের পরও অশান্ত ভাঙড়)

WB-Police_web

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ