কৃষ্ণকুমার দাস: গণনার শুরুতে সশরীরে গণনাকেন্দ্রে যাচ্ছেন না বিধানসভা ভোটের অধিকাংশ তারকা প্রার্থীরা৷ স্ত্রী-কন্যার পাশাপাশি অধিকাংশেরই দলীয় নেতা বা ইলেকশন এজেণ্টই সকাল সাতটা থেকে গণনা কেন্দ্রে কাউণ্টিং ইনচার্জের দায়িত্বে থাকছেন৷তবে ভোট শেষ হওয়ার পরে এভাবে দীর্ঘদিন টেনশন নিয়ে বসে থাকা চরম অস্বস্তিকর এবং পীড়াদায়ক বলে স্বীকার করেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত মুখোপাধ্যায়, সোমেন মিত্র, অরুণাভ ঘোষ, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, শোভন চট্টোপাধ্যায়, সুজন চক্রবর্তী থেকে অশোক ভট্টাচার্যরাও৷
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র ভবানীপুরের ভোট গননা হবে কলকাতার লর্ড সিনহা রোডের শাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুলে৷ দলের তরফে গণনার দায়িত্বে থাকছেন নেত্রীর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট শুভাশিস চক্রবর্তী৷ এই কেন্দ্রের গণনার ফলাফলও সবারই কার্যত জানা৷ শুধু মুখ্যমন্ত্রীর মার্জিন কতটা বাড়ল তা নিয়েই কৌতূহল৷
দশবার বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হওয়া বালিগঞ্জের সুব্রত মুখোপাধ্যায় অবশ্য এবারও প্রথমে গণনাকেন্দ্র ডেভিড হেয়ার ইনস্টিটিউশনে যাচ্ছেন না৷ দলের তরফে গণনার দায়িত্বে থাকবেন প্রায় দু’দশক ধরে সুব্রতবাবুর ভোট সামলানো স্বপন মহাপাত্র৷ ফলাফল ঘোষণার মুহূর্তেই তিনি পৌঁছে যাবেন বলে জানিয়েছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী৷
পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ক্ষেত্রে এবারেও পুরনো ট্রাডিশন মেনে বন্দর কেন্দ্রে ভোটগণনার দায়িত্বে যাচ্ছেন স্ত্রী ইসমাত হাকিম৷ প্রথমবার যখন কাউন্সিলর ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন ফিরহাদ তখন থেকেই এটা চলে আসছে৷সল্টলেক কেন্দ্রের প্রার্থী অরুনাভ ঘোষ গণনার পুরো দায়িত্ব নিজের ঘনিষ্ঠ আইনজীবী সৌমজিৎ রাহার উপর ছেড়েছেন৷ চৌরঙ্গি কেন্দ্রের কংগ্রেস প্রার্থী সোমেন মিত্রর হয়ে ১৯৭২ সাল থেকে গণনা সামলানো বাদল ভট্টাচার্য এবারও নেতাজি ইন্ডোরে সূর্য ওঠার আগেই পৌঁছে যাবেন৷
শিলিগুড়ির জোটপ্রার্থী অশোক ভট্টাচার্য অবশ্য ভোর সাড়ে ছ’টাতেই পৌঁছে যাবেন গণনাকেন্দ্রে৷ সঙ্গে থাকবেন তিন মেয়র পারিষদ শঙ্কর ঘোষ, জয় চক্রবর্তী ও মুকুল সেনগুপ্ত৷ বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র প্রার্থী নারায়ণগড়ে৷ কিন্তু তিনি আলিমুদ্দিনেই থাকবেন৷তৃণমূলের প্রথম প্রার্থী হিসাবে নন্দীগ্রাম কেন্দ্রে যাঁর নাম ঘোষণা করেছিলেন মমতা সেই শুভেন্দু অধিকারীও তাঁর ভোট গণনা কেন্দ্র হলদিয়া গর্ভমেণ্ট স্পনসর্ডে প্রথমে যাবেন না৷ দায়িত্বে থাকছেন শুভেন্দুর মুখ্য নির্বাচনী এজেন্ট প্রণব মহাপাত্র৷
দলের মহাসচিব ও শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বেহালা পশ্চিমের ভোট গণনা হবে হেস্টিংসে৷ গণনার দায়িত্বে অঞ্জন দাস ও প্রদীপ বাগ৷ কিন্তু ৬০০ মিটার দূরে গাড়ি থেকে নেমে হেটে যাওয়ার কমিশনের নির্দেশে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ তৃণমূলের হেভিওয়েট প্রার্থী৷বেহালা পূর্বের তৃণমূল প্রার্থী কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ভোটগণনা হবে ঠাকুরপুকুর ব্রতচারী ইনস্টিটিউটে৷ গণনার দায়িত্বে মুখ্য নির্বাচনী এজেণ্ট সুশান্ত ঘোষ(বুয়া)৷ তবে প্রতিবারের মতো এবারও যে স্ত্রী রত্নাকে নিয়ে ঠিক সময়ে কাউন্টিং সেন্টারে পৌছাবেন তা আগাম জানিয়েছেন৷
কাউন্সিলর থেকে ধাপে ধাপে মন্ত্রী হওয়া টালিগঞ্জের প্রার্থী অরূপ বিশ্বাসের গণনার দায়িত্বে বরাবরের মতো এবারও ছোট ভাই স্বরূপ৷ নিজের অফিসে বসে বর্ধমান ও দার্জিলিং জেলার গননার সমন্বয় করবেন অরূপ৷তবে, গণনা কেন্দ্রে যে সময়েই যান, এবারে মোবাইল ফোন না রাখার যে নির্দেশনামা জারি করেছে নির্বাচন কমিশন তাতে যথেষ্ট ক্ষুব্ধ প্রার্থীরা৷
খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
Copyright © 2024 Pratidin Prakashani Pvt. Ltd. All rights reserved.