Advertisement
Advertisement

১৮ বছর ধরে বিছানায়, SSKM-এর জাদুতে নিজের পায়ে হেঁটে বাড়ি ফিরলেন মুর্শিদাবাদের রুকসানা

অবাক হয়ে দেখল গোটা গ্রাম।

Woman suffering from disease for 18 years, cured in SSKM | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:January 29, 2024 3:41 pm
  • Updated:January 29, 2024 3:41 pm

ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: বাপ-মা কবে মরে গিয়েছে মনেই নেই। বছর তিনেক বয়সে ডান পায়ের উপরে ফোড়া থেকে ব্যথা-জ্বর হয়। ক্রমশ কোমরের নিচ থেকে অসাড় হয়ে যায়। হাতে ভর দিয়ে কোনও রকমে শরীরটাকে টেনে নিয়ে যেত। আড়ালে ‘অপয়া’ বলত পাড়ার লোক! একুশ বছরে এসে সেই মেয়েটাই যখন হেঁটে মুর্শিদাবাদে বাড়ি ফিরলেন অবাক হয়ে দেখল গোটা গ্রাম।

এমনটাও হয়? বিস্ময়ের আরও বাকি। গত সপ্তাহে পিজি হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগে রুকসানা আসতেই পুরো হাসপাতাল যেন হুমড়ি খেয়ে পড়ল। অন্তত একশো চিকিৎসক, নার্স একযোগে বলে উঠল, ‘‘দেখুন স্যর রুকসানা হাঁটছে!’’ পিতৃস্নেহে কন্যের মাথায় হাত বুলিয়ে বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক বলেছেন, “তোকে এগোতেই হবে। আমরা শুধু পথটা দেখিয়ে দিলাম। লড়াইটা তোর।” রুকসানার ছয়মাসের ক্লিনিক্যাল প্রসিডিওর ( চিকিৎসা পদ্ধতি) দেশের সফলতম দশটি চিকিৎসার মধ্যে জায়গা করেছে। ডকুমেন্ট তৈরি হচ্ছে। খুব শীঘ্রই তরুণীর উপস্থিতিতে প্রকাশ পাবে বলছে স্বাস্থ্যভবন।

Advertisement

[আরও পড়ুন: বজরংবলীর পতাকা নামানো নিয়ে উত্তেজনা, ক্ষমতাসীন কংগ্রেসকে ‘হিন্দু বিরোধী’ তোপ বিজেপির]

ছয়মাস আগে মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের রুকসানা বেগম (নাম পরিবর্তন) এসএসকেএম হাসপাতালের অর্থোপেডিক বিভাগের আউটডোরে দেখাতে আসে সেদিনটা বেশ মনে আছে ডা.অধ্যাপক মুকুল ভট্টাচার্যর। হাত আর কোমরে ভর দিয়ে কোনও রকমে শরীরটা টেনে আনতে যন্ত্রণায় চোখে জল। সব দেখলেন। রুকসানার ছোটবেলার গল্প শুনলেন। তরুণী বলেছিল, ‘‘ছোট্ট বয়সে ডান পায়ের হাঁটুর উপরে ফোড়া হয়েছিল। ওষুধ খেয়েছিল কি না মনে নেই। কিন্তু হাঁটুর নিচ থেকে পায়ের জোর কমতে থাকে। কয়েক বছরের মধ্যে কোমর পর্যন্ত অসাড় হয়ে যায়।’’ বাপ-মা মরা মেয়েটার আর চিকিৎসা হয়নি। ঘর থেকে বেরোতেই পারত না যে।

Advertisement

কিন্তু ওঁর দিদির মনে হল, বোন তো গলগ্রহ হয়েই বেঁচে থাকবে। ভবিষ্যৎ অন্ধকার। যদি কিছু একটা ব‌্যবস্থা হয়-এই ভেবেই খড়গ্রাম থেকে ট্রেনে করে পিজি আসেন তাঁরা। রাতটা হাসপাতালে কাটিয়ে পরদিন সকালে অর্থোপেডিক আউটডোর। এক্স-রে হল। জানা গেল, কোমর থেকে হাঁটু পর্যন্ত হাড়ে কোনও সমস্যা নেই। কিন্তু সংক্রমণের বিষে হাঁটুর নিচ থেকে মাংস ও পেশি জড়িয়ে শক্ত হয়ে আছে। মুকুলবাবুর কথায়, ‘‘ডান পায়ে দুটো অস্ত্রোপচার করা হয়। অপারেশনের তিনদিন পর থেকে ফিজিওথেরাপি শুরু।’’ ডা. মুকুল ভট্টাচার্য ও ডা. অভীক দত্ত পালা করে টানা তিনমাস রোজ ফিজিও করেছেন। প্রথমে ওয়াকার, পরে একটু একটু করে নিজের থেকে হাঁটা। ‘‘আর এখন তো ছুটে ট্রেনে উঠি’’–হাসতে হাসতে বলেছেন সাবলীল তরুণী। বাড়ি ফেরার সময় ডাক্তারবাবুকে কন্যে বলেছেন, ‘‘জীবনটা আমার। তাই ভালোভাবে নিজের ক্ষমতায় বাঁচব। কারও করুণা চাই না।’’

[আরও পড়ুন: বাড়িতে গ্যাজেটের ব্যবহার নয়, পরীক্ষার চাপ কাটাতে পড়ুয়াদের দাওয়াই মোদির]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ