রুপোলি পর্দার দুই তারকারা বিপাশা বসু ও রানি মুখোপাধ্যায় শেয়ার করলেন তাঁদের রন্ধন অভিজ্ঞতা। সঙ্গে অবশ্যই পছন্দের পদ।
বিপাশা বসু
ফিটনেস ফ্রিক হতে গেলে কড়া ডায়েটিংকেই সঙ্গী করতে হবে এমনটা নয়। আমার পছন্দের ডিশ অনেকরকম। আলু পোস্ত তার মধ্যে একটা। মাটনের পদ আমি খুব ভালবাসি। তবে তারপরে আমি ওয়ার্কআউট করবই। শুটিং না থাকলে রেলিশ করে খেতে ভালবাসি। আমার আর এক প্রিয় পদ মাছের বড়া। তা সে যে মাছেরই হোক না কেন। সময় পেলে রেস্তরাঁয় খেতে যাই। ভীষণ এনজয় করি। বাছবিচার করি না। আমি জানি পরে জিমে গিয়ে সব ঝরাব।
এবার জেনে নিন তাঁর পছন্দের দুটি পদ কীভাবে বানাবেন।
লইট্যামাছের বড়া
উপকরণ:
লইট্যামাছ গোটা ৫-৬ টা টুকরো করে কাটা, বেসন ২ টেবিল চামচ, আদা বাটা ১ চা চামচ, রসুন বাটা ১ চা চামচ, চিনি ১/২ চা চামচ, হলুদ ১/২ চা চামচ, নুন স্বাদমতো, সরষে তেল ভাজার জন্য, লেবুর রস ২ চা চামচ, চাল গুঁড়ো ১ চা চামচ, বেকিং সোডা ২ চিমটে।
পদ্ধতি:
আদা বাটা, রসুন বাটা, লেবুর রস ও নুন দিয়ে মাছ ১৫ মিনিট ম্যারিনেট করুন। অন্য একটা পাত্রে চালের গুঁড়ো, সোডা, হলুদ, চিনি, সরষের তেল ও নুন মিশিয়ে স্মুদ ব্যাটার করে রাখুন। কড়াইতে সরষের তেল দিন। এবার লইট্যামাছ ওই ব্যাটারে ডুবিয়ে ছাঁকা তেলে ভাজুন। গোল্ডেন ব্রাউন রং ধরলে নামিয়ে, গরম গরম সার্ভ করুন।
[মেনকোর্স বা ডেসার্ট, সুস্থ থাকতে স্বাদের বদলে মন মজুক পুষ্টিতে]
মাংসের ঝোল
উপকরণ:
পাঁঠার মাংস ১ কেজি, আলু ৪ টে (বড়), পেঁয়াজ ৪ টে, রসুন ৪ কোয়া, টমেটো ২ টো, গোটা গরম মশলা অল্প, তেজপাতা ২ টো, জিরে গুঁড়ো ২ টেবিল চামচ, ধনে গুঁড়ো ২ টেবিল চামচ, লাল লঙ্কার গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, গরম মশলার গুঁড়ো ১/২ টেবিল চামচ (বাড়িতে করা হলে ভাল), চিনি স্বাদমতো, নুন স্বাদমতো, ঘি ১ টেবিল চামচ, সরষের তেল ৪ টেবিল চামচ।
পদ্ধতি:
প্রথমে আলু ডুমো ডুমো করে কেটে ভেজে তুলে রাখুন। এরপর তেলে গোটা গরম মশলা আর তেজপাতা ফোড়ন দিন। এরপর ঝিরিঝিরি করে কাটা পেঁয়াজ দিয়ে বাদামি রং হওয়া অবধি ভাজুন। এবার এতে একে একে গরম মশলা গুঁড়ো বাদে অন্য সব মশলা দিয়ে ভাল করে কষুন। টমেটো দিয়ে কষুন তেল ছাড়া অবধি। এরপর এতে মাংস আর ভাজা আলু দিয়ে ভাল করে কষান। জল দিয়ে ঢাকা দিন। সেদ্ধ করতে দিন। যদি কড়াইতে রান্না করেন তো আড়াই ফুট অর্থাৎ আড়াইবার জল দিয়ে মাংস সেদ্ধ করুন। নয়তো প্রেশারে সিটি দিয়ে দিন। এবার একটা পাত্রে ঘি গরম করে তাতে অল্প পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভাজুন। এই ভাজা পেঁয়াজটা মাংস সেদ্ধ হয়ে গেলে দিন। সঙ্গে দিন গরম মশলা গুঁড়ো। ভাল করে মিক্স করে দিন। রান্নাটা একটু ঝোল ঝোল হবে।
রানি মুখার্জি
বাপের বাড়ি বাঙালি। আর শ্বশুরবাড়ি পাঞ্জাবি। দুই দিকেই খাওয়ার মহল। পাঞ্জাবি আর বাঙালিদের এমনিতেই ‘খাদ্যরসিক’ হিসাবে নাম আছে। আর আমার বর ফিল্ম আর ফুড – এই দুটোই বেশি ভালবাসে। খুব ছোটবেলা থেকেই প্রিয় বাড়ির তৈরি রান্না। মাছের নানারকম পদ পছন্দ করি। ভেটকি পাতুরি তার মধ্যে একটা। আর খেতে ভালবাসি ঝিঙে পোস্ত। বাড়িতে তৈরি এই পদটা ছোটবেলা থেকে দারুণ লাগে। এছাড়া ফুলকপির ডালনাও ভাল লাগে। ‘মর্দানি’-র মতো ছবির শুটিং বা প্রেগন্যান্সির সময় কিছুটা ডায়েট কন্ট্রোলে ছিলাম। তাছাড়া আমি মোস্টলি প্রেফার করি বাড়ির তৈরি খাবার। রেস্তরাঁর খাবার বা হোটেলের খাবার যে খাই না, তা নয়। কিন্তু বেশি নয়। ব্রেকফাস্ট প্রোটিন রিচ হয় বাট নাথিং অয়লি। প্রসেসড ফুড, সুগারি ড্রিংকস অথবা ফ্রায়েড স্টাফ নৈব নৈব চ।
[শীতে সুস্থ থাকতে মেনুতে রাখুন এই খাবারগুলি]
এবার জেনে নিন তাঁর পছন্দের দুটি পদ কীভাবে বানাবেন।
আলু ফুলকপির ডালনা
উপকরণ:
ফুলকপি ২ টো, আলু ৩ টে (ডুমো করে কাটা), কড়াইশুঁটি ১/২ কাপ, টমেটো ১ টা বড়, সরষের তেল আন্দাজমতো, গোটা সাদা জিরে ১/২ চা চামচ, গোটা গরম মশলা অল্প, গরম মশলা গুঁড়ো ১/২ টেবিল চামচ, জিরে গুঁড়ো ১ চা চামচ, হিং একচিমটে, ঘি ১ চা চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ টেবিল চামচ, আদা বাটা অল্প, নুন স্বাদমতো, চিনি স্বাদমতো, তেজপাতা ২ টো।
পদ্ধতি:
প্রথমে ফুলকপি আর আলু ভেজে তুলে রাখুন। এরপর তেলে গোটা গরম মশলা, তেজপাতা দিয়ে দিন। ফেটে উঠলে আলু ফুলকপি দিন। টমেটো দিন। এরপর সমস্ত গুঁড়ো মশলা দিয়ে কষুন। আদা বাটা, কাঁচালঙ্কা, নুন, মিষ্টি সব দিয়ে নাড়াচাড়া করে জল দিয়ে সেদ্ধ করতে দিন। এবার একটা চামচে ঘি দিয়ে তার মধ্যে সাদা জিরে আর হিং গরম করুন। তরকারি সেদ্ধ হয়ে গেলে এই ঘি উপর থেকে দিয়ে ভাল করে নাড়াচাড়া করে নামিয়ে নিন।
ভেটকি পাতুরি
উপকরণ:
বোনলেস ভেটকি ৫০০ গ্রাম (মোটামুটি ৪ থেকে ১০ টুকরো হবে), কালো সরষে ২ টেবিল চামচ, নারকেল কোরা ৪ টেবিল চামচ, কাঁচালঙ্কা ৬ টা, সরষে তেল ৩ টেবিল চামচ, লেবুর রস ১১/২ টেবিল চামচ, হলুদ গুঁড়ো ১ চা চামচ, নুন স্বাদমতো, কলাপাতা একটা বড়, টুথপিক বা সুতো।
পদ্ধতি:
মাছ ধুয়ে পরিষ্কার করে লেবুর রস, নুন মেখে রেখে দিন ১ ঘণ্টা। ঘন সরষে পেস্ট তৈরি করুন, সামান্য নুন দিয়ে কাঁচালঙ্কা পেস্ট করুন। এবার কলাপাতা লম্বা চার ভাঁজ করে মোড়া যায় এমনভাবে কেটে রাখুন। এবার সরষে বাটা, নারকেল কোরা, কাঁচালঙ্কা বাটা, নুন, হলুদ, সরষের তেল মাখিয়ে ৪-৫ ঘণ্টা ম্যারিনেট করুন। মাছটা রান্নার ১ ঘণ্টা আগে ফ্রিজ থেকে বের করে নিন। এবার কলাপাতার চকচকে দিকে সরষের তেল ব্রাশ করে ওই ম্যারিনেট করা মাছ মশলা সমেত পাতায় রেখে মুড়ে সুতো দিয়ে বেঁধে চ্যাটালো তাওয়াতে সরষের তেল গরম করে কম আঁচে এপিঠ-ওপিঠ করে ভাজুন। কলাপাতা ভাজা হয়ে লালচে আকার নিলে নামিয়ে পরিবেশন করুন।