Advertisement
Advertisement

Breaking News

বোন টিবি

হাড়েও বাসা বাঁধছে টিবি! জেনে নিন ভয়ংকর রোগ সম্পর্কে

কোন কোন উপসর্গ দেখলে বুঝবেন 'বোন টিবি' হয়েছে, জেনে নিন।

Doctor tips for Bone TB, know how to do treatment of Bone TB
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:May 14, 2019 9:26 pm
  • Updated:May 14, 2019 9:26 pm

টিবি ফুসফুসে হয় বলেই জানে সবাই। কিন্তু হাড়েও বাসা বাঁধে। বোন টিবির লক্ষণ চিনে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিলেন বিশিষ্ট অর্থোপেডিক ডা. সন্তোষ কুমার। লিখছেন সোমা মজুমদার

আপনি কি অনেকদিন ধরেই কোমর, পিঠের ব্যাথায় ভুগছেন? সঙ্গে দিন দিন ওজন কমে যাচ্ছে বা ক্ষিদে পাচ্ছে না? এমন হলে আর্থ্রাইটিসের ব্যথা বলে ফেলে রাখবেন না। কিংবা ওজন কমের দিকে থাকা ভাল, ভেবে এড়িয়ে যাবেন না। সাবধান। এমন লক্ষণ বোন টিবির। টিবি সাধারণত ফুসফুসে হয় বলেই বেশিরভাগ মানুষ জানেন। কিন্তু হাড়েও বাসা বাঁধে টিউবারকিউলোসিস। বিষয়টি নিয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান না থাকায় রোগী অনেক সময়ই বাত, নার্ভের সমস্যা বলে ভাবেন। অতএব, চিকিৎসাও শুরু হয় দেরিতে। সাধারণত পিঠের কিংবা হিপ জয়েন্টের ব্যথার কারণ যে টিবি হতে পারে তা অনেকেই বুঝতে পারেন না। তাই প্রাথমিক পর্যায়ে বোন টিবি ধরা পড়ে না। ফলে, চিকিৎসা শুরু করতেও দেরি হয়ে যায়।

Advertisement

কেমন এই টিবি
শরীরের অন্যান্য জায়গার টিবির মতোই টিউবারকিউলোসিস ব্যাকটিরিয়া মানুষের শরীরে আগে থেকেই থাকে। পরবর্তীকালে কোনও কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে সেগুলি কার্যকরী হয়ে যায়। সেই ব্যাকটেরিয়া যখন হাড় ও মেরুন্ডের অস্থিসন্ধিতে ছড়িয়ে পড়ে তখন বোন টিবি হতে হয়। বোন টিবিতে মেরুদণ্ড, হিপ জয়েন্ট ও কোমরে প্রচণ্ড ব্যথা হয়। এই টিবি আগে অনেক বেশি হত। তারপর মাঝে কমে গেলেও ইদানীং মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাচ্ছে বলে ফের প্রকোপ বাড়ছে।

Advertisement

লক্ষণ
বোন টিবি বা নির্দিষ্টভাবে স্পাইনাল টিবির অন্যান্য টিবির মতোই কিছু সাধারণ উপসর্গ দেখা যায়। যেমন ক্ষিদে কমে যায়, দ্রুত ওজন কমে যায়, সামান্য পরিশ্রমেই ক্লান্ত লাগে, জ্বর আসতে পারে, রাতে ঘাম হয়। এছাড়া বোন টিবির প্রাথমিক পর্যায়ে মেরুদন্ডে খুব ব্যাথা হয়, মাংসপেশী ফুলে যায়, মাংসপেশী শক্ত হয়ে যায়। আরও একটু অ্যাডভান্সড পর্যায়ে পৌঁছে গেলে নার্ভের জটিলতা, হাড় বিকৃতি, পেশীতে জোর কমে, শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে।

কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন
বোন টিবি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়ে না। কারণ টিবিই যে হয়েছে তা রোগীর বুঝতে অনেক দেরি হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ধরে যদি আপনার মেরুদন্ডে, কোমরে, হিপ জয়েন্টে ব্যাথা থাকে এবং সময়ের সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। সঙ্গে যদি আপনার প্রায়ই জ্বর আসে, ওজন কমে যায়, ক্ষিদে না পায় তাহলে অবশ্যই অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

চিকিৎসা
যে কোনও টিবির ক্ষেত্রেই রক্ত পরীক্ষা করতে হয়। তারপর এমআরআই এক্স রে করা হয়। রক্ত পরীক্ষায় টিউবারকিউলোসিস ব্যাকটেরিয়ার ডিএনএ-কে চিহ্নিত করা হয়। এমআরআই এক্স রে-র মাধ্যমে ঠিক কোন জায়গায় স্পাইনাল টিবি হয়েছে তা ধরা পড়ে। সাধারণত বোন টিবি ওষুধের মাধ্যমে ঠিক হয়ে যায়। দেড় থেকে দু’বছরের ওষুধের যে কোর্সটি দেওয়া হয় তা অবশ্যই শেষ করতে হয়। কারণ ওষুধের কোর্স অসম্পূর্ণ থাকলে টিবির ব্যাকটেরিয়ার আবারও কার্যকরী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এছাড়াও, এই টিবির ক্ষেত্রে অ্যাডভান্সড পর্যায়ে হাড়ের অপারেশন করে, মেরুদন্ডকে ঠিক স্থানে নিয়ে আসা হয়।

সতর্ক হলেই সুস্থ হওয়া সম্ভব
বোন টিবিতে মৃত্যুর আশঙ্কা সাধারণত থাকে না। প্রথমত, বোন টিবির ব্যাকটেরিয়া ফুসফুসের টিবির মতো শরীরে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে না। দ্বিতীয়ত, ফুসফুসের টিবিতে অপারেশন করে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। কিন্তু এক্ষেত্রে সার্জারির মাধ্যমে রোগী সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন। তবে যদি কারও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা খুব কম থাকে বা না থাকে এবং তিনি যদি দীর্ঘদিন ধরে বোন টিবির লক্ষণ দেখেও অবহেলা করেন তাহলে বিপদ অবশ্যম্ভাবী। ক্রনিক অ্যালকোহলিক হলে অথবা খাদ্যাভাস ঠিক না থাকলে কিংবা অবসাদগ্রস্ত হলেও মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকতে পারে। সাধারণত, চিকিৎসার মাধ্যমে বোন টিবির রোগীরা অনেকাংশেই সুস্থ হয়ে ওঠেন। এছাড়া সঠিক জীবনযাপন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে, খাদ্যাভাস ঠিক থাকলেই বোন টিবি প্রতিরোধ করা যায়। তবে ফুসফুসে টিবি রোগীর থেকে সংক্রমণ এড়াতে যেমন খাবারের বাসন আলাদা করে দিয়ে সতর্ক থাকতে হয়, এক্ষেত্রে কিন্তু তেমন কোনও সতর্কতার দরকার নেই। এটি সংক্রামক নয়।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ