Advertisement
Advertisement

Breaking News

Poila Baisakh

ইলিশ ভাপা থেকে দই কাতলা, নববর্ষে দুয়ারে-দুয়ারে বাঙালি ভোজ পৌঁছে দেবে রাজ্য সরকার

কীভাবে ঘরে বসেই পেয়ে যাবেন জিভে জল আনা বাঙালি খাবার, রইল তার সুলুক সন্ধান।

West Bengal Government Arranges Bengali Dishes including Hilsha at Door Step on Poila Baisakh | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:April 14, 2022 1:41 pm
  • Updated:April 14, 2022 2:00 pm

কৃষ্ণকুমার দাস এবং গৌতম ব্রহ্ম : হায় বাঙালি হায়, তুই আর বাঙালি নয়/ তোর চলন, বলন, কথার ধরন নিজের মতো নাই। 
সত্যিই তো, বাঙালি ভুলতে বসেছে তাঁর ঐতিহ্য-সংস্কৃতি, এমনকী ব্যুৎপত্তিও। সারাবছর ইংরেজি ভাষা, দেশ-বিদেশের ক্যুইজিন কিংবা ক্রস কালচার পোশাকের পিছনে ছুটে মরে। তবে জেনারেশন ওয়াই যতই হ্যাট-কোট-বুটে মেমসাহেব সাজুক না কেন, বছরের ক’টা দিন তাঁরাই কিন্তু বাঙালিয়ানায় মেতে ওঠে। এদিনগুলোতে পাট ভাঙা শাড়ি-পাঞ্জাবিতেই নিজেদের সাজাতে ভালবাসে তারা। শুধু সাজগোজ কেন, খাবার পাতেও সেদিনের জন্য ফেরে সম্পূর্ণ বাঙালিয়ানা! ব্রাত্য থাকে ইতালিয়ান পাস্তা, চাইনিজ, মোগলাই কিংবা পাঞ্জাবি।

সেরকমই একটা দিন শুক্রবার। বাঙালি নববর্ষ। রাত পোহালেই ১৪২৯ বঙ্গাব্দ। এবার বাংলা নববর্ষ সপ্তাহশেষে। টানা তিনদিন শুক্র-শনি-রবি, ঠাকুমা-দিদিমার রান্না করা খাবারের আস্বাদ নেওয়ার হুজুগে মেতেছে মহানগরবাসী। তবে ছুটির মেজাজে বাড়িতে রান্নাবান্নার ঝক্কি রাখতে চায় না। তাই অগতির গতি হোম ডেলিভারি কিংবা রেস্তরাঁ। তবে শুধুমাত্র বেসরকারি রেস্তরাঁ বা হোম ডেলিভারি নয়, সরকারের তরফে দুয়ারে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে বাঙালি খাবার। খরচ নামমাত্র। এক হোয়াটসঅ্যাপেই বাড়িতে পৌঁছে যাবে ইলিশ ভাপা থেকে বিরিয়ানি। কীভাবে ঘরে বসেই কম খরচে পেয়ে যাবেন জিভে জল আনা বাঙালি খাবার, রইল তার সুলুক সন্ধান।

Advertisement

Advertisement

 

[আরও পড়ুন: দীর্ঘদিন বাদে দেশে বাড়ল করোনার অ্যাকটিভ কেস, নতুন করে চিন্তা বাড়াচ্ছে রাজধানী দিল্লি]

খাদ্যরসিক বাঙালির রসনার তৃপ্তিতে উদ্যোগ নিয়েছে পঞ্চায়েতদপ্তর। ১৪ এবং ১৫ এপ্রিল কলকাতা শহর ও তার সংলগ্ন কয়েকটি পুর এলাকার বাসিন্দারা হোয়াটসঅ্যাপ মারফত অর্ডার করতে পারবেন পছন্দের খাবার। ৮১৭০৮৮৭৭৯৪/ ৯৭৩৪৩৯৯৯১৫-এই দুই নম্বরে করা যাবে হোয়াটসঅ্যাপ। মধ্যাহ্নভোজের মেনুতে রয়েছে দেরাদুন চালের ভাত, টক ডাল, পোস্ত দিয়ে আলু উচ্ছে ভাজা, ইলিশ ভাপা (১ পিস), ঝাড়গ্রাম বন মুরগির কষা মাংস, চাটনি, পাপড়, মিষ্টি (২ পিস), পান। দাম মাত্র ৫০০ টাকা। ইলিশে আপত্তি থাকলে দই কাতলার বরাত দিতে পারেন। তবে শুক্রবার মধ্যাহ্নভোজের জন্য বৃহস্পতিবার রাত ৮টার মধ্যে অর্ডার করে ফেলতে হবে। এছাড়া শুধু ইলিশ ভাপা কিংবা ঝাড়গ্রাম মটন (৪ পিস) অর্ডার করতে পারেন। রাতের জন্য থাকছে অন্য মেনু। বাড়ি পৌঁছে যাবে চিকেন ও মটন বিরিয়ানি।

পঞ্চায়েত দপ্তরের এই উদ্যোগ প্রসঙ্গে রাজ্যের মন্ত্রী পুলক রায় বলছেন, নববর্ষের দিন বাঙালি উৎসবের মেজাজে থাকে। এবার সেই আবেগকে আরও কিছুটা উসকে দিতে এবং আমজনতাকে রান্না থেকে রেহাই দিতে রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ।”

 

[আরও পড়ুন: একবারই দান করা যাবে শুক্রাণু ও ডিম্বাণু, কৃত্রিম প্রজননের নিয়মে বড় বদল আনল কেন্দ্র]

চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজেকে প্রস্তুত করে ১৪২৯-এর সূর্যোদয়ের অপেক্ষায় কর্পোরেট পাঁচতারা থেকে ফ্রি-স্কুল স্ট্রিটের ওপার বাংলার নানা পদের রেস্তরাঁ। আইটিসি রয়্যাল, জেডব্লিউ ম্যারিয়ট, ওবেরয় গ্র্যান্ড, ললিত গ্রেট ইস্টার্ন, পিয়ারলেস ইন, রাজারহাটের ওয়েস্টিন- সবার হেঁশেলেই শেফরা চিংড়ির মালাইকারি থেকে ছানার ডালনা, নারকেল দিয়ে ছোলার ডাল, ভেটকি পাতুরি ও কচি পাঁঠার নানা পদ তৈরিতে ব্যস্ত। ঠাকুরবাড়ির রান্না বা উত্তমকুমারের পছন্দের পদকে হাতিয়ার করে শহরের দুই রেস্তোরাঁ রসনা তৃপ্তির আয়োজন করেছে। স্বয়ং সিক্স বালিগঞ্জ প্লেস, ভজহরি মান্না, ওহ ক্যালকাটা, ‘ষোলো আনা বাঙালি’র মতো কুলীন বঙ্গ-রেস্তরাঁয় ১৪২৯ বঙ্গাব্দের প্রথম দিনের বুকিং ‘হাউসফুল’।

Bengali foods will be available at some of West Bengal's rail stations during festive session
ফাইল ছবি।

ঝিঙেপোস্ত, কচুবাটা, পোস্তবড়া থেকে ডাবচিংড়ি খাওয়াতে প্রস্তুত দক্ষিণের অভিজাত লেক ক্লাব, স্যাটারডে ক্লাব থেকে বাওয়ালি রাজবাড়িও। পয়লা বৈশাখের সন্ধ্যায় ক্যালকাটা ক্লাব মেম্বারদের জন্য নববর্ষের আড্ডায় গরম গরম কড়াইশুঁটির কচুরি, ছোলার ডাল ও মাছের চপের ঢালাও ব্যবস্থা রেখেছে। ম্যারিয়টের থালিতে নববর্ষের দুপুরে কচি পাঁঠার ঝোলের সঙ্গে ছানার পাতুরি। রাজারহাটের ওয়েস্টিনে আলুপোস্ত, বাসন্তি পোলাও, ছানার ডালনার মতো মেনুর সঙ্গে পাঁঠার মাংস থাকছে। ঐতিহ্যমণ্ডিত গ্র্যান্ড বাংলা বছরের প্রথমদিন বুফে লাঞ্চেও ট্র্যাডিশনাল বাঙালি খাবারের সঙ্গে সন্দেশ-রসগোল্লা-দই রাখছে। স্বভূমির প্রখ্যাত রাজবাড়ির রাজকুটির রেস্তোরাঁয় গন্ধরাজের ঘোল, পোস্তর বড়া, তপসে ফ্রাই, মানকচু বাটা সঙ্গে শক্তিগড়ের ল্যাংচাও রেখেছে রসনাতৃপ্তির জন্য। সিক্স বালিগঞ্জ প্লেসে চিরন্তন বাঙালি খাবারের সঙ্গে চট্টগ্রামের কষা মাংস, ভুনা চিংড়ি ও কাঁচা আমের শরবত পরিবেশন করা হবে। তবে যাঁরা ওপারের বরিশাল বা কুমিল্লার নানা পদের স্বাদ নিতে চান তাঁদের আসতেই হবে ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের কস্তুরী বা রাঁধুনিতে।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ