Advertisement
Advertisement

Breaking News

walking

প্রতিদিন গড়ে ১১১ মিনিট হাঁটলেই ১১ বছর আয়ু বাড়বে! দাবি ব্রিটিশ বিজ্ঞান পত্রিকার

শরীরচর্চার কারণে হাঁটাহাঁটি এখন অনেকের লাইফস্টাইলের অঙ্গ।

111 minutes walking everyday helps to increase 11 years lifetime, claims journal
Published by: Paramita Paul
  • Posted:April 13, 2025 5:30 pm
  • Updated:April 13, 2025 5:33 pm  

ক্ষীরোদ ভট্টাচার্য: ডাক্তারবাবুরা বলছেন,”হাঁটুন। স্রেফ হাঁটুন। হেঁটে যান।” হাঁটলে আয়ু বাড়ে। হাঁটলেই নতুন জীবন! প্রতিদিন ১১১ মিনিট হাঁটায় ১১ বছর আয়ু বাড়ে, বলছে গবেষণা।

বিখ্যাত বিজ্ঞানপত্রিকা ‘ব্রিটিশ জার্নাল অফ স্পোর্টস মেডিসিন’-এ কুইন্সল্যান্ডের গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটির যে গবেষণাপত্রটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে তুলে ধরা হয়েছে এমনই তথ্য। গত ১০ বছর ধরে ৩৬ হাজার চল্লিশোর্ধ্ব মার্কিন নাগরিকের উপর ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের জনস্বাস্থ্য বিভাগের করা স্টাডিতে দেখা গিয়েছে, গড়ে ১১১ মিনিট রোজ হাঁটলে, হাঁটাহাঁটি না-করা ব্যক্তিদের চেয়ে তাঁদের সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সময়সীমা প্রায় ১১ বছর বেড়ে যাচ্ছে। এই হাঁটায় যে কায়িক পরিশ্রম হয়, তাতে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকে ঈর্ষণীয় মাত্রায়।

Advertisement

 

walking-3

 

গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটির জনস্বাস্থ্য বিভাগের প্রফেসর লেনার্ট ভিরম্যান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্টাডির এই ফলাফল দেখে তাঁরা অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁরা দেখেছেন, যাঁরা সুস্থ থেকেও হাঁটাহাঁটি করেন না, আখেরে তাঁদের স্বাস্থ্যহানির বহর ধূমপান কিংবা উচ্চ রক্তচাপের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। উলটো দিকে, যাঁরা রোজ কমপক্ষে ১১১ মিনিট হাঁটেন বলে রেকর্ড রয়েছে তাঁদের কবজিতে দিনভর থাকা স্মার্ট-ওয়াচে, গড়ে তাঁদের আয়ু দেখা যায় অন্যদের চেয়ে প্রায় ১১ বছর বেশি।

 

walking

 

শরীরচর্চার কারণে হাঁটাহাঁটি এখন অনেকের লাইফস্টাইলের অঙ্গ। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞরা রুটিনে একেবারে মোটা হরফে লিখে দেন, ওয়াকিং মাস্ট। সকালে বা বিকেলে কিংবা সন্ধ্যায় রোজ নিয়ম করে হাঁটা। নিয়মিত হাঁটায় মন মজানো, এখন সর্বত্রই নয়া ট্রেন্ড। বিশেষ করে চল্লিশোর্ধ্বদের মধ্যে। ফলে মাঠে, ময়দানে, পার্কে কিংবা সুন্দর রাস্তা আজকাল আর সাতসকালে ফাঁকা থাকে না। ভরে ওঠে স্নিকার্স পরা পথচারীতে। কেউ ওজন ঝরাতে হাঁটেন, কেউ হাঁটেন ফ্যাটি লিভার কিংবা প্রেশার-সুগার-কোলেস্টেরলের মোকাবিলায়। কেউ বা নিছক ঘাম ঝরান নিজেকে ঝকঝকে রাখতে। আর জেন-জেড? তাঁদের অনেকেই তো আপাদমস্তক ফিটনেস ফ্রিক। জিমে গেলেও ট্রেড মিলে হাঁটা তাঁদের চাই-ই। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার গবেষণাটিতে সাফ বলা হয়েছে, হেঁটে আয়ু বাড়াতে গেলে হাঁটতে হবে একেবারে সময় ধরে, সারা দিনে পাক্কা পৌনে দু’ঘণ্টা প্রায়।

 

walk

 

হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ শান্তনু দত্ত বলছেন, “নির্দিষ্ট করে ১১১ মিনিট নাকি তার চেয়ে কম বা বেশি, সেই তর্কে গিয়ে লাভ নেই। তবে রোজ নিয়ম করে দ্রুত হাঁটা যে খুবই ভালো অভ্যাস, তাতে সন্দেহ নেই। শরীর তো বটেই, এতে মনও ভালো থাকে।” তাঁর কথায়, “টানা জোরে হাঁটলে মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্ল্যান্ড থেকে বিটা-এন্ডরফিন নামে একটি প্রোটিনের ক্ষরণ হয়। এই রাসায়নিকটিকে হ্যাপি হরমোনও বলে। কেননা, এই হরমোন স্ট্রেস কমায়, ব্যথা-বেদনার উপশম করে এবং একটা উৎফুল্লতা ও ভালোলাগার অনুভূতি তৈরি করে চাঙ্গা রাখে শরীর-মন। আর স্ট্রেস কমলে তো আয়ু বাড়তেই পারে। কারণ শরীরে ক্ষয় মন্থর হয়ে যায় তাতে।”একমত এন্ডোক্রিনোলজি বিশেষজ্ঞ সুজয় ঘোষও। তিনি জানাচ্ছেন, নিয়মিত জোরে হাঁটাই হল শরীরের ভালো কোলেস্টেরল বলে পরিচিত হাই-ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (এইচডিএল) বৃদ্ধির সবচেয়ে উপযোগী উপায়। তাঁর কথায়,”এইচডিএল বৃদ্ধি আখেরে হৃদ-স্বাস্থ্যকে ভালো রাখে। ফলে অকালমৃত্যুর আশঙ্কা তো কমেই।”

তবে এই প্রথম নয়। ভারত-সহ বিভিন্ন দেশের গবেষকরা একযোগে ১২টি সমীক্ষায় অংশ নেওয়া প্রায় ১ লক্ষ ১১ হাজার মানুষের হাঁটার নথি বিশ্লেষণ করেও প্রায় একই উপসংহারে উপনীত হয়েছিলেন। ওই গবেষণায় দেখা গিয়েছিল, প্রতিদিন যাঁরা অন্তত ২৫০০ স্টেপ ও ২৭০০ স্টেপ হাঁটেন, তাঁদের হৃদরোগে মৃত্যুর আশঙ্কা অন্যদের চেয়ে কমপক্ষে যথাক্রমে ৮% ও ১১% কম হয়ে যায়। আর দৈনিক ৭০০০ স্টেপ ও ৯০০০ স্টেপ হাঁটলে সেই আশঙ্কা অন্ততপক্ষে ৫১% ও ৬০% কমে যায় । গবেষণাপত্রটিতে আরও দাবি করা হয়েছে, প্রতি ১০০০ স্টেপ বা ১০ মিনিট করে অতিরিক্ত হাঁটার অর্থ হলো, ক্রমাগত কমে মৃত্যুর ঝুঁকি, বাড়ে আয়ু। ফলে ১১১ মিনিট হাঁটায় যে ১১ বছর আয়ু বাড়বে, তা আর বিচিত্র কী!

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement