BREAKING NEWS

১১ আশ্বিন  ১৪৩০  শুক্রবার ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

ফুসফুস ক‌্যানসারের চিকিৎসায় বিপ্লব আনছেন বাঙালি কন্যা! মৃত্যুহার কমাবে তাঁর গবেষণা

Published by: Biswadip Dey |    Posted: January 28, 2021 9:50 am|    Updated: January 28, 2021 9:50 am

Bengali researcher leading research team working on cancer in US | Sangbad Pratidin

গৌতম ব্রহ্ম: খলনায়কদের হদিশ আগেই মিলেছিল। কিন্তু তাদের রোয়াবির নেপথ্যে কাদের হাত, সেটা জানা যায়নি। এবার ফুসফুসের (Lung) অলিন্দে কর্কট (Cancer) আগ্রাসনে মদতদাতা সেই ‘জিন’কে খুঁজে বার করে তাকে শায়েস্তা করার ওষুধও বাতলে দিলেন একদল মার্কিন গবেষক। যাঁদের নেতৃত্বে এক বঙ্গললনা!

ড. ত্রিপর্ণা সেন। কারমেল স্কুলের এই প্রাক্তনী এখন বিডেন-কমলার দেশকে নতুন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন। দুরারোগ্য ‘লাং ক্যানসার’কে (Lung cancer) বাগে আনার স্বপ্ন। স্বপ্নপূরণের তাগিদে সম্প্রতি মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তর ত্রিপর্ণাদের সাড়ে তিন লক্ষ মার্কিন ডলার আর্থিক অনুদানও দিয়েছে। বুধবার হোয়াটসঅ্যাপ কলে ‘সংবাদ প্রতিদিন’-এর তরফে ত্রিপর্ণাকে ধরা হয়। আদতে কলকাতার লেক গার্ডেন্সের মেয়ে ত্রিপর্ণা জানালেন, “লাং ক্যানসার চিকিৎসায় বিপ্লব এনে দেবে আমাদের গবেষণা। কমিয়ে দেবে মৃত্যুহার।”

[আরও পড়ুন : প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে প্লে স্টোরে FAU-G, প্রথম পর্বের ভিডিও পোস্ট করলেন অক্ষয়]

ডিসেম্বরেই ত্রিপর্ণাদের গবেষণাপত্রটি বিশ্ববন্দিত ‘সেল রিপোর্টস’ ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। তা উদ্ধৃত করে ত্রিপর্ণা জানিয়েছেন, ফুসফুসে ক্যানসারের জন্য এসটিকে১১ ও কেইএপি১—এই দুই ‘জিন মিউটেশন’ অন্যতম দায়ী। যে সব রোগীর শরীরে এই দুই জিনের পরিবর্তন একসঙ্গে হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে ক্যানসার ভয়াবহ আকার নেয়। কোনও থেরাপি বা ওষুধ ঠিকমতো কাজ করে না। ‘ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট’ হয়ে যাওয়ায় শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হয়। বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কমতে থাকে। গবেষকদলের পর্যবেক্ষণ, আসলে ক্যানসার মোকাবিলার যে সব ওষুধ এখনও পর্যন্ত বাজারে রয়েছে, সেগুলি মূলত ‘ফেরোপটিসিস’ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্যানসার আক্রান্ত কোষকে নির্মূল করে। কিন্তু এসটিকে১১ ও কেইএপি১ জিন দু’টি সেই প্রক্রিয়াকেই গোড়ায় আটকে দেয়। ফলে জটিল কর্কট-যুদ্ধের ময়দানে কোনও ওষুধই ঠিকঠাক কল্কে পায় না। নিউ ইয়র্কের ‘মেমোরিয়াল স্লোয়ান কেটারিং ক্যানসার সেন্টার’-এর গবেষকরা এবার এই দুই মারণ জিনের মদতদাতাকে চিহ্নিত করে ফেলায় যুদ্ধটা অনেক সহজ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। মার্কিন মুলুকের এই প্রতিষ্ঠানেই প্রায় ২ বছর ‘অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটেন্ডিং’ হিসাবে সাফল্যের সঙ্গে কাজ করছেন ত্রিপর্ণা। গবেষণাসঙ্গী ও সহ লেখক ডা. চার্লস রুডিন।

[আরও পড়ুন : জবাবে সন্তুষ্ট নয় কেন্দ্র, চিরতরে বন্ধ হতে পারে TikTok-সহ ৫৯টি অ্যাপ]

কে সেই গডফাদার, যার প্রশ্রয়ে লাং ক্যানসার কার্যত অপ্রতিরোধ্য? কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জেনেটিক্স নিয়ে স্নাতকোত্তর করা তরুণী গবেষকের কথায়, “এসসিডি১ নামে একটি জিনের সাহায্যে এমন ভয়ংকর আকার নিচ্ছে এসটিকে১১ ও কেইএপি১। এসসিডি১-কে কোনওভাবে দুর্বল (ব্লক) করে দিতে পারলেই শেষ হয়ে যাবে খলনায়ক যুগলের কারিকুরি। শুনে আশাবাদী বিশেষজ্ঞ মহলও।

সাফল্যের উদ্ভাস ত্রিপর্ণার কণ্ঠেও। জানালেন, বর্তমানে আমেরিকায় নতুন করে লাং ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন ২,৩৫,৭৬০ জন। যার মধ্যে ১,১৯,১০০ জন পুরুষ। ১,৩১,৮৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাৎপর্যের বিষয় হল, লাং ক্যানসার রোগীদের ১০ শতাংশই এসটিকে১১ ও কেইএপি১-র মস্তানির শিকার। “চতুর্থ পর্যায়ে পৌছলে এই ১০ শতাংশ রোগী বড়জোর ছ’মাস বাঁচেন। কিন্তু এসসিডি১-কে ব্লক করা গেলে আয়ুরেখা চার—পাঁচগুণ প্রলম্বিত হবে।” গবেষণায় প্রতিরক্ষা দপ্তর হাত মেলাল কেন? ত্রিপর্ণা জানালেন, মার্কিন সেনাদের একটা বড় অংশ লাং ক্যানসারের শিকার। যার মূল কারণ অতিরিক্ত ধূমপান ও ফুসফুসে গান পাউডারের প্রবেশ। লাং ক্যানসারের ওষুধ নাগালে এলে শক্তিশালী হবে বিডেনের প্রতিরক্ষা দপ্তরও।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে