BREAKING NEWS

১৯ অগ্রহায়ণ  ১৪৩০  সোমবার ৪ ডিসেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

পাঁচ রাজ্যের রায়

মিজোরাম (৪০/৪০) এগিয়ে / জয়ী
এমএনএফ ১০
জেডপিএম ২৭
কংগ্রেস
বিজেপি
অন্যান্য
মধ্যপ্রদেশ (২৩০/২৩০) জয়ী
বিজেপি ১৬৪
কংগ্রেস ৬৫
অন্যান্য
রাজস্থান (১৯৯/২০০) জয়ী
বিজেপি ১১৫
কংগ্রেস ৬৯
অন্যান্য ১৫
ছত্তিশগড় (৯০/৯০) জয়ী
বিজেপি ৫৪
কংগ্রেস ৩৫
অন্যান্য
তেলেঙ্গানা (১১৯/১১৯) জয়ী
বিআরএস ৩৯
কংগ্রেস ৬৪
বিজেপি
এআইএমআইএম
অন্যান্য

‘সিবিটি’ থেরাপিতেই কমবে জল অপচয়ের প্রবণতা, বাঁচতে পারে জল

Published by: Tiyasha Sarkar |    Posted: July 9, 2019 1:02 pm|    Updated: July 9, 2019 1:04 pm

Cognitive behavioral therapy can save water, say experts

অভিরূপ দাস: দিনে চল্লিশবার হাত ধুচ্ছেন। খাবার খেয়ে ছাব্বিশ বার প্লেট মাজছেন। কাচা কাপড়ও দশবার করে জলে চুবোতে হচ্ছে বাড়ির লোককে। নাহলে যে তিনি বাড়ি মাথায় তুলবেন! “শুচি অশুচি কিছু রইল না!” দেশজোড়া জল সংকটের আবহে এইসব শুচিবাইগ্রস্তদের বাতিকগুলি আরও বেশি করে চোখে পড়ছে। স্রেফ নিজেদের মানসিক বিকার চরিতার্থ করতে ওরা যেভাবে প্রতিমুহূর্তে ‘জলের মতো’ জল বইয়ে দিচ্ছেন, তা দেখে পরিবার তো বটেই মনোবিদ ও বিশেষজ্ঞ মহলও শঙ্কিত। তাঁদের কথায়, “এভাবে জল নষ্টের বিলাসিতার দিন আর এখন নেই। যা সময় আসছে, দিনে এক বালতি জল বাঁচানো গেলেও অনেক। হয়তো সেটুকুর জন্যই মাথা খুঁড়তে হবে।”

[আরও পড়ুন: বাইকে চেপে পরপর শ্লীলতাহানি, জলের জ্যারিকেনই ধরিয়ে দিল ‘সাইকো’কে]

ব্যবহারের হিসেবে শহরের বড় একটি আবাসনে দৈনিক ৪০ হাজার লিটার জলের প্রয়োজন পড়ে। বেসরকারি সংস্থা থেকে এই জল কিনতে খরচ হয় মাসে প্রায় এক লক্ষ টাকা। অমূল্য সেই জলই যদি অকারণে হাত, পা ধুয়ে নষ্ট করা হয়, তাহলে তো সর্বনাশ। কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি আয়োগের রিপোর্ট বলছে শহরে প্রগাঢ় জল সংকট। ইতিমধ্যেই তা ঠেকাতে রাস্তার পানীয় জলের কলে ছিপি আটকাতে বলছেন বিচক্ষণরা। কিন্তু শুচিবাইদের জল নষ্টের হিসেব কে দেবে? টালিগঞ্জ থেকে শ্যামবাজার জুড়ে ছড়িয়ে শুচিবাই থুড়ি ‘ওসিডি’ রোগীরা।

পিজি হাসপাতালের ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রির ডিরেক্টর ডা. প্রদীপ সাহা জানিয়েছেন, হাসপাতালেও এই শুচিবাইদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। প্রতি একশোটি পরিবারের মধ্যে একটা পরিবারে এমন রোগী দেখা যায়। তাঁর কথায়, “এই জল নষ্ট করার প্রবণতাকে বলে অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডার বা ওসিডি। এটি আদতে সম্পূর্ণ মনের অসুখ। এ অসুখে রোগীর মনে হয়, তাঁর হাতে বা গায়ে ময়লা লেগে আছে। যদিও তিনি ভাল করেই জানেন কোথাও ময়লা নেই, কিন্তু চিন্তাটা বার বার আসতে থাকে এবং ওই ব্যক্তি বার বার হাত ধুতে থাকেন। সাবানও ব্যবহার করেন। ফলে প্রচুর জল নষ্ট হয়।” এহেন লোকেদের বারণ করেও লাভ হয়না।

এখন এই ওসিডি রোগীদের নিয়েই বিপাকে পরিবারের লোকেরা। বাগুইআটির অনুপম চাকলাদারের স্ত্রী যেমন। প্রতি মিনিটেই মুখ ধুতে থাকেন তিনি। সবসময়ই তাঁর মনে হয় মুখে কিছু লেগে আছে। অনুপম বাবুর কথায়, “কী সমস্যা বলুন তো! ৩০ লিটার পানীয় জল ভরতি একটি ড্রাম রিকশায় আনতে খরচই পড়ে যায় ৩০ টাকা। এমনিতেই এখন জলের আকাল। তারপর এই বাতিকের জন্য অকারণে ও এত জল নষ্ট করছে যে আমাদের মাথায় হাত।” টালিগঞ্জের প্রবীণ সোমনাথ দণ্ডপাতের আবার কেবলই মনে হয় ঘর নোংরা রয়েছে। কাজের লোক ঘর মোছার পরেও বার বার তিনি ঘর মুছতেই থাকেন। পরিবারের লোকেরা রাগ দেখান। কিন্তু তাতে লাভ কিছুই হয় না।

রাগারাগি নয়, সঠিক চিকিৎসাতেই এই অসুখ সারতে পারে বলে মনে করছেন ইনস্টিটিউট অফ সাইকিয়াট্রিক ডিরেক্টর। তাঁর ব্যাখ্যা, এ অসুখে রোগীর মাথায় বারবার চিন্তা আসে আমার হাতে কিংবা পায়ে নোংরা লেগে আছে। সে নিজেও জানে নোংরা লেগে নেই। কিন্তু ওই কাজটা না করলে তাঁর ভিতরে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়। আসলে অবসেশনগুলি রোগীর মাথায় গেঁথে যায়। বার বার না চাইতেও চিন্তাগুলি এসে যায়। চাইলেও এর বাইরে বেরোতে পারেন না। নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না। দশ মিনিট বাদে বাদে এমন চিন্তা আসতেই থাকে। একবার ভাবুন দশ মিনিট বাদে বাদে একজন হাত ধুচ্ছেন। এতে জলের সর্বনাশ সময়েরও সর্বনাশ।

[আরও পড়ুন: বিপদ ডাকছে বেপরোয়া গতি, সচেতনতা বাড়াতে ছাত্রদের হেলমেট বিলি পুলিশের]

মেডিসিন আর ফার্মাকোথেরাপির মাধ্যমেই এমন অসুখ সাড়ানো সম্ভব বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, কাউন্সেলিংয়ের দুটো ভাগ, একটা ইআরপি অন্যটা সিবিটি। ইআরপি-র পুরো কথা হল এক্সপোজার রিলাপস প্রিভেনশন। আর সিবিটি-র অর্থ কগনিটিভ বিহেবিহারাল থেরাপি। এই দুই থেরাপির সঙ্গে নিয়মিত ওষুধ খেলে সারতে পারে জল নষ্টের অবাক অসুখ। চিকিৎসা বিজ্ঞান জানাচ্ছে, শতকরা ৪৫ থেকে ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রে জিনগত কারণে এই রোগ হয়। মস্তিষ্কের যে অংশ রোগীকে একই কাজ বার বার করাতে বাধ্য করছে ওষুধগুলি সেই অংশে ক্রিয়া করে। রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। রোগ আরও বেড়ে গেলে ইলেকট্রো কনভালসিভ থেরাপি, সার্জিক্যাল থেরাপি দেওয়া হয়। শেষের দুটির জন্য রোগীকে হাসপাতালে ভরতি করাতে হয়।

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে