২০ অগ্রহায়ণ  ১৪৩০  মঙ্গলবার ৫ ডিসেম্বর ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

পাঁচ রাজ্যের রায়

মিজোরাম (৪০/৪০) এগিয়ে / জয়ী
এমএনএফ ১০
জেডপিএম ২৭
কংগ্রেস
বিজেপি
অন্যান্য
মধ্যপ্রদেশ (২৩০/২৩০) জয়ী
বিজেপি ১৬৪
কংগ্রেস ৬৫
অন্যান্য
রাজস্থান (১৯৯/২০০) জয়ী
বিজেপি ১১৫
কংগ্রেস ৬৯
অন্যান্য ১৫
ছত্তিশগড় (৯০/৯০) জয়ী
বিজেপি ৫৪
কংগ্রেস ৩৫
অন্যান্য
তেলেঙ্গানা (১১৯/১১৯) জয়ী
বিআরএস ৩৯
কংগ্রেস ৬৪
বিজেপি
এআইএমআইএম
অন্যান্য

৩ মাস পরও করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট হতে পারে পজিটিভ, বলছেন বিশেষজ্ঞরা

Published by: Suparna Majumder |    Posted: September 28, 2020 5:26 pm|    Updated: October 1, 2020 2:16 pm

Bengali News of CoronaVirus : COVID-19 report can be positive for 3 months, claims experts | Sangbad Pratidin

ফাইল ছবি

গৌতম ব্রহ্মকেউ বিয়াল্লিশ দিন, কেউ পঞ্চান্ন দিন, কেউ দু’মাস। কেউ আবার আরও বেশি। করোনা (CoronaVirus) ধরা পড়ার পর নেগেটিভ হতে মাস কাবার হয়ে যাচ্ছে। তাতেই রক্তচাপ বাড়ছে কোভিড রোগী ও তাঁর পরিবারের।

করোনা (COVID-19) জয়ের পর ‘করোনামুক্ত’ হতে কেন এত সময় লাগছে? এই চিন্তায় আকুল চিকিৎসকদের একাংশও। আর এই ভয় পল্লবিত হয়ে সমাজের শিরা-উপশিরায় ঢুকে পড়ছে। চাউর হয়ে যাচ্ছে, যত দিন গড়াচ্ছে সার্স-কোভ ২ (Sars-CoV-2) তত ভয়ংকর হচ্ছে। একজন চিকিৎসক তো বলেই ফেললেন, আগে তো সাত-দশদিনের মাথায় রিপোর্ট নেগেটিভ হত। এখন তিন সপ্তাহেও হচ্ছে না।

রাজারহাটের একটি হাসপাতালের কর্মী রেশমা রায়ের কথাই ধরা যাক। তিনি পজিটিভ হয়েছিলেন ১০ জুলাই। নেগেটিভ হয়েছেন ৪৩ দিন পর, ১৭ আগস্ট। তার মানে কি রেশমা ৪২ দিন পর্যন্ত পজিটিভ ছিলেন? করোনা বেঁচে ছিল তাঁর শরীরে?

[আরও পড়ুন: ব্যাংকের তরফে হোয়াটসঅ্যাপ কল বা মেসেজ আসছে? গ্রাহকদের সাবধান করল SBI]

বিজ্ঞান কী বলছে?

সংক্রামক ব্যাধি বিশেষজ্ঞ ডা. যোগিরাজ রায় (Dr Yogiraj Roy) সাফ জানিয়ে দিলেন, কিছু ভুল ধারণার জেরে আতঙ্ক ছড়াচ্ছে। উপসর্গ চলে গেল মানে ধরে নিতে হবে সেই রোগী কোভিডমুক্ত। কিন্তু তা না করে অনেকেই বারবার কোভিড টেস্ট করে ‘নেগেটিভ’ হওয়ার চেষ্টা করছেন। এটা ‘ICMR’-এর নিয়মের পরিপন্থী। যদিও করোনা রোগীদের একাংশ এটাই করে চলেছেন। ‘পজিটিভ’ হওয়ার দু’দিন পর থেকেই টেস্ট করিয়ে চলেছেন। কিছু ক্ষেত্রে নেগেটিভ আসছে ঠিকই, কিছু ক্ষেত্রে আবার নেগেটিভ হতে মাস ঘুরে যাচ্ছে। তখনই আতঙ্ক শুরু হচ্ছে। ‘কেন আমি নেগেটিভ হচ্ছি না? কেন আমার করোনা সারছে না? ও তো সাতদিনেই নেগেটিভ হয়ে গেল।’ হরেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে মনের অলিগলিতে। হতাশা গ্রাস করছে রোগীর মনে। রেশমা রায় জানালেন, “আমার হাসপাতাল রিপিট টেস্ট করতে বারণ করেছিল। কিন্তু আমার অফিস নেগেটিভ রিপোর্ট চাইছিল। আবাসনের তরফেও প্রবল চাপ ছিল। তাই উপসর্গ চলে গেলেও একপ্রকার বাধ্য হয়েই আমায় রিপিট টেস্ট করাতে হয়েছে। এই সমস্যা অনেকের ক্ষেত্রেই হচ্ছে।”

এই ঘটনা বেশি ঘটছে হোম আইসোলেশন থাকা ও বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি রোগীদের ক্ষেত্রে। সরকারি ক্ষেত্রে ‘রিপিট টেস্ট’-এর সুযোগই নেই। আইসিএমআরের  নিয়ম মেনে উপসর্গ চলে গেলেই রোগীকে ছুটি দেওয়া হয়। ১৪ দিন হোম কোয়ারান্টাইনে থাকতে হয়। কিন্তু বহু বেসরকারি হাসপাতাল বিল বাড়ানোর জন্য দু’দিন অন্তর টেস্ট করিয়ে চলেছে বলে অভিযোগ। হোম আইসোলেশনে থাকা রোগীদের একাংশও টাকার জোরে বেসরকারি ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলিকে দিয়ে দু’দিন অন্তর টেস্ট করাচ্ছে। কোনও পক্ষই রোগীকে নির্জলা সত্যিটা ব্যাখ্যা করে বোঝাচ্ছেন না। এমনটাই অভিযোগ ভাইরোলজিস্ট অধ্যাপক ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদারের (Dr Siddhartha Joardar)।

[আরও পড়ুন: করোনাকালে শরীরে ভিটামিন ডি’র মাত্রা কমে গেলেই বিপদ, জানাচ্ছে গবেষণা]

নির্জলা সত্যিটা কী?

যোগিরাজের বক্তব্য, RTPCR-এ ভাইরাসের শরীরে মজুত নিউক্লিক অ্যাসিড দেখা হয়। কিন্তু সেই নিউক্লিক অ্যাসিড জ্যান্ত না মৃত ভাইরাসের তা বুঝতে পারে না আরটিপিসিআর যন্ত্র। যন্ত্রে ধরা পড়া ভাইরাসের দেহাংশ ‘মাল্টিপ্লাই’ করতে পারছে কি না তা জানতে ‘ভাইরাল অ্যাক্টিভেশন স্টাডি’ বা ‘ভাইরাল কালচার’ করতে হবে। সেগুলি করার পরিকাঠামো আমাদের দেশে খুবই সীমিত।

আসলে ভাইরাস কোষের এপিথেলিয়াল কোষের মধ্যে ঢুকে যায়। তার থেকে সংগ্রহ করা নমুনাই আরটিপিসিআরে দেওয়া হয়। সমস্যা অন্যত্র। ‘রেসপিরেটরি এপিথেলিয়াল সেল’ পরিবর্তন হতে (টার্ন ওভার রেট) তিনমাস সময় নেয়। এই সময় টেস্ট করলে কোষের মধ্যে থাকা নিষ্ক্রিয় ভাইরাসের ‘নিউক্লিক অ্যাসিড’ পজিটিভ রিপোর্ট দিতেই পারে। এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। উপসর্গকেই পাখির চোখ করতে হবে। যদি অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা রোগীর দু’দিন অক্সিজেন না লাগে তাহলে ধরে নিতে হবে যে তিনি করোনামুক্ত।

নেগেটিভ রিপোর্ট বিষয়টাই বোগাস। প্রথমদিকে কোভিড-১৯ সম্পর্কে ডাক্তারদের মধ্যে বাস্তবিক কোনও ধারণা ছিল না। তাই বেলেঘাটা আইডিতে ভরতি রোগীদের দু’দিন অন্তর টেস্ট করা হয়েছিল। এবং ‘নেগেটিভ’ হওয়ার পর দেওয়া হয়েছিল ছুটি।

চিকিৎসকদের বক্তব্য, আমাদের দেহ হরেক কোষ-কলায় সাজানো। এক এক ধরনের কোষের আয়ু এক একরকম। স্কিনের ‘টার্ন ওভার রেট’ ৬-৭ দিন। রেসপিরেটরি এপিথেলিয়াল সেলের তিন মাস। তাই তিনমাস ধরেই পজিটিভ আসতে পারে। আমরা নাক থেকে খুঁচিয়ে যে সোয়াব সংগ্রহ করছি সেটা ‘রেসপিরেটরি এপিথেলিয়াল সেল’। অতএব, করোনাজয়ীদের নেগেটিভ বা পজিটিভ রিপোর্টের কোনও ক্লিনিক্যাল গুরুত্ব নেই। ব্রিটেনেও বহুদিন হল রিপিট টেস্ট বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এখানেও বন্ধ হোক।

 

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে