Advertisement
Advertisement

করোনায় নিজে থেকে ডাক্তারি নয়, নয়তো ভয়াবহ বিপদ! সতর্ক করছেন চিকিৎসকরা

জেনে নিন, হোম আইসোলেশনে কী করবেন আর কী করবেন না।

Doctor prescribes some precautions for COVID-19 treatment for home isolation | Sangbad Pratidin
Published by: Paramita Paul
  • Posted:May 4, 2021 6:11 pm
  • Updated:May 4, 2021 6:12 pm

করোনার ব্যাপারে ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত বিপজ্জনক। শোনা কথায় নিজের মতো ওষুধ খাবেন না। হোম আইসোলেশনে থাকাকালীন বেশ কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। বললেন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. অরিন্দম বিশ্বাস। শুনল সংবাদ প্রতিদিন

এখন হোম আইসোলেশনে রেখেই চিকিৎসা করা হচ্ছে অধিকাংশ কোভিড (Covid-19) রোগীর। কী ওষুধ খাবেন, কী নিয়ম মানবেন তা ফোনেই বলে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। তার পরেও আতঙ্ক কিন্তু প্রতি পদে পদে। শরীরের ভিতরে মারণ ভাইরাস কী বিপদ পাকাচ্ছে কেউই জানেন না। বরং বাড়ি বন্দি অবস্থায় কিছু একটা অস্বাভাবিকতা দেখলেই চিন্তা বাড়ছে এই রোগীদের। কখন হাসপাতালে যাবেন, কখন অক্সিজেন প্রয়োজন, কখন জরুরি আনুষঙ্গিক টেস্ট করাতে হবে সবই কিন্তু অজানা। সারাদিন শুধু এদিক-ওদিক থেকে শোনা কথার ভিড়ে চিন্তার আনাগোনা। এই টানা ১৭ দিনের লড়াইটা সত্যিই কষ্টকর। অন্যদিকে, এই পরিস্থিতিতে অনেকেই লক্ষণ দেখেও চুপচাপ বসে থাকছেন। টেস্ট করাচ্ছেন না, নিজের মতো ওষুধ খাচ্ছেন। যার দরুন ভয়াল রূপ নিচ্ছে করোনা। করোনা হলে বা লক্ষণ থাকলে প্রতিটি পদক্ষেপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ঠিক কখন কী করবেন, সে সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা থাকা দরকার।

Advertisement

কেন ফেলে রাখা যাবে না?
নিত্য অজস্র মানুষ মারা যাচ্ছেন করোনায়। তাই করোনা নিয়ে ছেলেখেলা করবেন না। চিকিৎসা শুরু হতে যত দেরি হবে, তত সংক্রমণ ফুসফুসে ছড়িয়ে যাবে। যদি ফুসফুসে প্রদাহ বা ফাইব্রোসিস তৈরি হয়ে যায় তবে রোগীর প্রাণসংশয় দেখা দেবে। এমনকী, প্রদাহ শুরু হলে লিভার, কিডনি, ব্রেন, হার্ট (মায়োকার্ডাইটিস) ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। হৃদপিণ্ড দুর্বল হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া রক্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে যায়, রক্ত জমাট বেঁধে যেতে পারে। তাই প্রথমেই সাবধান হতে হবে।

Advertisement

[আরও পড়ুন : করোনার অল্প উপসর্গেই সিটি স্ক্যানের কথা ভাবছেন! কী পরামর্শ এইমসের ডিরেক্টরের?]

সাইটোকাইন স্ট্রম থেকে বাঁচতে, আগে সতর্কতা জরুরি
আমাদের শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা রয়েছে। যখনই কিছু সংক্রমণ শুরু হয় তখন সেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার দ্বারাই শরীর রোগ জীবাণুকে ধ্বংস করে। অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে যায় রোগপ্রতিরোধ শক্তি। ফলে জীবাণু ধ্বংস করতে গিয়ে শরীরেরও ক্ষতি করে ফেলে। যার প্রভাব পরে শরীরের নানা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে। তাই লক্ষণ থাকলে দ্রুত টেস্ট করান।

কখন সাবধান হবেন?

  • জ্বর, সর্দি, গলাব্যথা
  • গন্ধ বা মুখের স্বাদ চলে গেলে
  • কারও ক্ষেত্রে এত রকম উপসর্গ দেখা নাও দিতে পারে। অল্প গা-হাতে ব্যথা, ক্লান্তি, বমি ভাব নিয়েও হাজির হতে পারে করোনা
  • ডায়েরিয়ার লক্ষণ থাকলেও ফেলে রাখা যাবে না
  • অক্সিজেন স্যাচুরেশন ৯২-এর নিচে গেলে চিকিৎসকে তা জানান।

করোনা হলে সকলের জন্য কি একই ওষুধ?
কার ক্ষেত্রে করোনা কী উপসর্গ নিয়ে আসছে এবং কতটা ক্ষতি করছে সেটা আমরা বিচার-বিবেচনা করে তবেই ওষুধ দিচ্ছি। নিজে থেকে কোনও ওষুধ না খাওয়াই ভাল। সাধারণত দু’ভাবে চিকিৎসা করা হয়, হেপারিন দেওয়া হচ্ছে। যা সাইটোকাইন স্ট্রমের দরুন শরীরের রক্ত জমাট বাঁধাকে রোধ করে। রক্ত জমাট বাঁধলে ধমনির মধ্যে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে না, অক্সিজেনের আদার-প্রদান ঠিকমতো হতে পারে না ফলে রোগীর প্রাণসংশয় দেখা দেয়। এই অবস্থা রুখে দিতে হেপারিন প্রয়োগ করে রোগীদের চিকিৎসা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, অ্যান্টিভাইরাল (ফ্যাবিপিরাভির, রেমডিসিভির) দিয়ে ভাইরাসের বৃদ্ধি রোধ করে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া আটকায়। ফ্যাবিপিরাভির সাধারণত মাইল্ড বা মডারেট সংক্রমিত যাঁরা, তাঁদের দেওয়া হচ্ছে। রেমডিসিভির মূলত যাঁদের শ্বাসকষ্ট শুরু হচ্ছে, অবস্থা বাড়াবাড়ি পর্যায়ে যাচ্ছে তাঁদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হচ্ছে। সঙ্গে দেওয়া হচ্ছে স্টেরয়েড, যা সংক্রমণের ভয়াবহতাকে আটকে, সাইটোকাইন স্ট্রম থেকে শরীরের অন্যান্য অঙ্গের ক্ষতি রোধ করতে পারছে।

[আরও পড়ুন : করোনা কালে বাড়ছে গুলঞ্চের কদর, ভেষজ এই পাতার উপকারিতা জানলে চমকে যাবেন]

জরুরি রেসপিরেটরি রেট চেক করা। কীভাবে করবেন?
রোগীর পেটে দিকে দেখতে হবে। পেটের মুভমেন্ট বা নড়াচড়া এক মিনিটে ২৩-২৪ বারের বেশি থাকলে রেসপিরেটরি রেট অস্বাভাবিক রয়েছে ধরে নেওয়া হয়। এমন দেখলে রোগীকে হাসপাতালে ভরতির কথা ভাবতে হবে।

নিত্য মেনে চলুন

  • পালস অক্সিমিটার রাখুন, অক্সিজেন স্যাচুরেশন দেখুন।
  • অক্সিজেনের প্রয়োজন না হলে, অযথা অক্সিজেন নেওয়ার কথা ভাববেন না।
  • ১৭ দিন কোভিড পজিটিভ রোগীকে হোম আইসোলেশনে থাকতেই হবে।
  • করোনা পজিটিভ হওয়ার ৫-১০ দিন খুবই ক্রিটিক্যাল পিরিয়ড। এই সময় যে কোনও রকম জটিলতা দেখা দেওয়ার প্রবণতা বেশি।
  • করোনা থেকে সেরে ওঠার পর ৩-৪ মাস চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে থাকা জরুরি।
  • ফুসফুস কিংবা অন্যান্য কোনও সমস্যা শরীরে রয়েছে কি না সেটা পরবর্তী সময় দেখা জরুরি।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ