সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনার জেরে দেশজুড়ে লকডাউন। মারণ ভাইরাসের সঙ্গে মোকাবিলার জন্য বন্ধ করে দিতে হয়েছে স্পোর্টস ইভেন্ট থেকে ছবি-সিরিয়ালের শুটিং। ফলে বাড়ি বসে পুরনো সিরিয়ালই ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে দেখতে হচ্ছে দর্শকদের। তবে এরইমধ্যে টিভির পর্দায় প্রত্যাবর্তন করে বাজিমাত করেছে রামায়ণ ও মহাভারত। আশির দশকের দুই অত্যন্ত জনপ্রিয় সিরিয়াল এখন একাধিক চ্যানেলে দেখানো হচ্ছে। টিআরপিও আকাশ ছোঁয়া। পুরনো দিনের স্মৃতি রোমন্থণ করে যেমন হাসি ফুটেছে বড়দের মুখে, তেমনই মহাকাব্যের বিভিন্ন চরিত্রের সঙ্গে পরিচয় ঘটাতে টিভির সামনে বসে পড়ছে খুদেরাও। কিন্তু সমস্যা হল, পৌরাণিক কাহিনি জানা হলেও এই সিরিয়াল বাচ্চাদের চোখের ক্ষতি করছে।
দূরদর্শনে রামায়ণের প্রথম পর্বটি টিআরপির দিক থেকে বিশ্বরেকর্ড গড়েছিল। এতেই স্পষ্ট, ভারতীয়দের কীভাবে নতুন করে আকৃষ্ট করেছে এই পৌরাণিক সিরিয়াল। রাম-লক্ষ্মণ-সীতা কিংবা অর্জুন-দ্রৌপদীদের দেখতে বারণ করছেন না বাড়ির বড়রাও। ফলে পড়াশোনার ফাঁকে টিভির পর্দায় চোখ রেখে আশির দশকে শুট করা সেই সিরিয়ালে পৌঁছে যাচ্ছে তারাও। চিকিৎসকরা বলছেন, এতেই তাদের চোখের ক্ষতি হচ্ছে। না, পুরনো ভিজ্যুয়াল-কালার কনট্রাস্ট চোখে কুপ্রভাব ফেলছে, এমনটা নয়। আসলে এই সিরিয়াল দেখে খুদেরা বাড়িতে তীর, ধনুক বানিয়ে খেলার চেষ্টা করছে। আর সেই তীরই চোখে লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
[আরও পড়ুন: হাইড্রক্সিক্লোরোকুইন না অশ্বগন্ধা? করোনা যুদ্ধের ব্রহ্মাস্ত্র খুঁজতে শুরু ক্লিনিকাল ট্রায়াল]
রাঁচিতে ইতিমধ্যেই এমন এক ঘটনা সামনে এসেছে। ১০ বছরের এক কিশোর ভিডিও দেখে বাড়িতেই বানিয়েছিল তীর-ধনুক। সেই তীরই চোখে লেগে কর্নিয়া নষ্ট করে দেয় তার। অস্ত্রোপচার করতে হয়েছে। গত ৪০ দিনে হায়দরাবাদে ১২ জন শিশু অন্তত একটি করে চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে। অন্যান্য শহর থেকেও একই খবর সামনে এসেছে।
ডা. সুভদ্র জালালি বলেন, দুই-তিন দশক আগে যখন রামায়ণ-মহাভারত টিভিতে দেখানো হত, তখনও এইরকম ঘটনা সামনে আসত। তীর-ধনুক নিয়ে খেলতে গিয়ে চোট পেত শিশুরা। তারপর ১৫ বছর এরকম ঘটনা ঘটেনি। লকডাউনে সেই দিনই ফিরেছে। তাই সিরিয়াল শুরুর আগে বিজ্ঞপ্তি দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। বাড়িতে এধরনের কোনও প্রয়াস যাতে ছোটরা না করে, সে বিষয়ে সতর্ক করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন ওই চিকিৎসক।