Advertisement
Advertisement
করোনা চিকিৎসা

সাতদিনে করোনা সারানোর গ্যারান্টি! ৭৫ হাজারে চিকিৎসার ‘হোম ডেলিভারি’র ব্যবসা নার্সিংহোমের

রীতিমতো দরদামও চলছে।

Few hospitals claims to patients to make corona free within a week
Published by: Sandipta Bhanja
  • Posted:July 16, 2020 8:24 pm
  • Updated:July 16, 2020 10:20 pm

অভিরূপ দাস: করোনা আক্রান্ত হয়ে বেড পাচ্ছেন না? বাড়িতেই সাতদিনে সুস্থ করে দেব। ৭৫ হাজার টাকা দিলেই। এমনই বিজ্ঞাপন ঘুরছে সোশ্যাল সাইটে। সাধারণ মানুষের আতঙ্ককে পুঁজি করে শুরু হয়েছে ‘রোগমুক্ত করার ব্যবসা।’ রীতিমতো দরদামও চলছে।

কোনওদিন পনেরোশো কোনওদিন তেরোশো। প্রতিদিন এই হারে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। সরকারি হাসপাতালে ভিড়ের চাপে বেড পাচ্ছেন না অনেকেই। এদিকে বেসরকারি হাসপাতালে হাতেগোনা বেডের সংখ্যা। টাকা থাকলেও চিকিৎসা মিলছে না আমজনতার। মানুষের মনের এই আতঙ্কের হদিশ পেয়েছে শহরের একাধিক ছোটখাটো নার্সিংহোম।

Advertisement

মৌলালির হরাইজন লাইফ লাইন নার্সিংহোমের কয়েকজন চিকিৎসক রোগী ধরতে বিজ্ঞাপন দিয়েছেন। সেই বিজ্ঞাপন দেখেই ফোন করেছিলেন রানিকুঠির বাসিন্দা পিয়ালি ঘোষ। তাঁর কথায়, “টাকা যায় যাক। চিকিৎসা তো পাব। টিভিতে তো দেখছি টাকা থাকলেও চিকিৎসা পাচ্ছেন না অনেকেই।” বিশেষ ওই বিজ্ঞাপনগুলিতে একটি ফোন নম্বর দেওয়া। সেখানে ফোন করলেই বলা হচ্ছে, নিজের নাম-ফোন নম্বর, ঠিকানা একটি বিশেষ নম্বরে হোয়াটস অ্যাপ করে দিতে। বাড়িতে লোক পৌঁছে যাবে।

Advertisement

কী কী রয়েছে এই ৭৫ হাজারের প্যাকেজে?
প্রথমে বাড়ি স্প্রে করে সংক্রমণমুক্ত করা হবে। কী কী খাবার খেতে হবে তার ডায়েট চার্ট তৈরি করে দেবেন চিকিৎসক। যে সাতদিন চিকিৎসা চলবে, প্রতিদিন বিকেলে একজন ডাক্তার আসবেন রোগীকে দেখতে। থাকবেন নার্সও। পালস অক্সিমিটারে দিনে দশবার অক্সিজেন স্যাচুরেশন মাপা হবে। আর যদি সাতদিনে না কমে? “দিন যত বাড়বে। খরচও বাড়বে।” জানিয়েছেন, বিজ্ঞাপনদাতা।

[আরও পড়ুন: করোনা নির্ণয়ের জন্য পৃথিবীর সবচেয়ে সস্তার কিট বানিয়ে ফেলল ভারত, নাম ‘করোশিওর’]

এমন আশঙ্কাজনক পরিস্থিতিতে কতটা ভরসাযোগ্য এ ধরনের চিকিৎসা? ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের সম্পাদক ডা. কৌশিক চাকি জানিয়েছেন, অনেক ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষ বেড পাচ্ছেন না। একথা মিথ্যে নয়। কোনও বেসরকারি হাসপাতালের পক্ষ থেকে অর্থের বিনিময়ে বাড়িতে এসে যদি সঠিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করা হয় তবে তাতে ক্ষতি নেই। কিন্তু এক্ষেত্রে দেখতে হবে মানুষের আতঙ্ককে পুঁজি করে ব্যবসা করা হচ্ছে কি না। যা গর্হিত অপরাধ।

ডা. চাকি জানিয়েছেন, “সাতদিনে করোনা সারিয়ে দেব- এই ধরনের দাবি যদি কেউ করে থাকেন তবে তা মেডিক্যাল কাউন্সিল—এর নীতি বিরোধী। সরকারকেই দেখতে হবে এই মহামারীর সময়ে কেউ ব্যক্তিগত মুনাফা লুটতে মানুষকে বিপদে ফেলতে চাইছে কি না। যে চিকিৎসক চিকিৎসা করবেন আদৌ তাঁর রেজিস্ট্রেশন নম্বর রয়েছে কি না, তাও যাচাই করে দেখে নেওয়া প্রয়োজন। আদতে করোনার কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। জ্বর হলে ক্যালপল জাতীয় ওষুধ খেতে বলছেন ডাক্তাররা। অনেকক্ষেত্রে ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও স্বাভাবিকভাবেই সেরে গিয়েছেন উপসর্গহীনরা। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ড. নিশান্তদেব ঘটকের কথায়, “করোনার তো সেভাবে কোনও ওষুধ নেই। এরা কী ওষুধ দিচ্ছে তা দেখতে হবে। রোগ হয়তো এমনিই সেরে যেত। আমরাই সারিয়েছি এই দাবি করে কেউ মানুষকে সর্বস্বান্ত করে পালাল।”

[আরও পড়ুন: করোনা-লক্ষণ নিয়ে রাজ্যে অন‌্য জ্বরের হানা, নয়া দুই ভাইরাসের সংক্রমণে নাজেহাল শিশুরা]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ