BREAKING NEWS

১৬ চৈত্র  ১৪২৯  শুক্রবার ৩১ মার্চ ২০২৩ 

READ IN APP

Advertisement

চুলচেরা চিড় অচিরেই ডেকে আনতে পারে বিপদ

Published by: Sandipta Bhanja |    Posted: March 19, 2019 1:42 pm|    Updated: March 19, 2019 1:42 pm

Here is what doctors say about hairline crack in bones

এ ভাঙা সে ভাঙা নয়! হাড়ের উপর অনবরত একটানা চাপ পড়ে অতি সূক্ষ্ম চিড় কিন্তু মারাত্মক হতে পারে। তাই ব্যথা না কমলে হেয়ার লাইন ফ্র্যাকচার নয় তো! জিনিয়া সরকারকে এই ব্যথা চেনালেন আর এন টেগোর হসপিটালের বিশিষ্ট অর্থোপেডিক ডা. সূর্য উদয় সিং।

চুলচেরা চিড়! হাত-পা মচকে পট করে হাড় ভাঙা নয়। এ এক অদ্ভুত হাড় ভাঙা। এত সূক্ষ্ম যে তা বোঝাই যায় না। ব্যথার তীব্রতাও নেই। তবে ধীর গতিতে ভোগায় অনেক দিন। এতে ডাক্তারি পরিভাষায় বলা হয়, স্ট্রেস ফ্র‌্যাকচার।

কাদের হয়?
সাধারণত যাঁদের শারীরিক পরিশ্রম অত্যন্ত বেশি তাঁদেরই এই ধরনের হাড়ের সমস্যা বেশি হয়। বিশেষত যাঁরা খেলাধুলা করেন অথবা মিলিটারি তাঁরা এই ব্যথায় কষ্ট পান। এতে হাড়ের যে স্থানে খুব চাপ পড়ে সেখানকার হাড়ে খুব সূক্ষ্ম চিড় ধরে। সাধারণত চোট লেগে এই সমস্যা হয় না। হাড়ে দীর্ঘসময় চাপ পড়তে পড়তে এই সমস্যা শুরু হয়। তবে বর্তমানে যাঁদের নিত্য অত্যধিক পরিশ্রম করতে হয় এঁদের ক্ষেত্রেও আজকাল এই ব্যথার সমস্যা প্রায়ই দেখা দেয়। কৃষক, যাঁরা খুব বেশি হাঁটেন, খেলাধুলা করেন ও অনেক ভার বহন করেন তাঁদেরও এই ধরনের ফ্র‌্যাকচার হতে পারে।

[শান্তির নিদ্রা চান? ঘুম দিবসে নেটিজেনরা বাতলে দিলেন কয়েকটি উপায়]

চিনুন
সাধারণত এই ফ্র‌্যাকচারে যে খুব ব্যথা হয় তা নয়। তবে কাজ করলেই তখন ওই স্থানটি ফুলে ওঠে। অল্প বিশ্রাম নিলে বা সেই স্থানে বরফ লাগালে তা কমে যায়। প্রয়োজনে অনেকেই ব্যথা কমাতে পেন কিলার খেয়ে আরাম পান। তখন মনে করেন হয়তো ব্যথা ঠিক হয়ে গেছে। এই ব্যথা এত সহজে কিন্তু কমে না। তা বারবার ফিরে আসে। এমন হলে সতর্ক হতে হবে।

শরীরের কোন অংশে হয়?
অধিকাংশেরই এই ধরনের ফ্র‌্যাকচার হাঁটুর নিচের হাড়ের অংশে ও পায়ের পাতায় আঙুলের সঙ্গে যুক্ত যে পাঁচটা হাড় থাকে সেই হাড়ে এই ফ্র‌্যাকচার হতে দেখা যায়। বয়স্কদের ক্ষেত্রে পেলভিক হাড়ে বা কোমর ও পায়ের জয়েন্ট যে হাড় থাকে সেই হাড়েও এমন হতে পারে।

চিকিৎসা
এই ফ্র‌্যাকচার কিন্তু হাড় ভেঙে যাওয়ার মতো নয়। খুবই সুক্ষ্ম ব্যাপার। যা শুধু রেস্ট অর্থাৎ প্রায় ৬ সপ্তাহ রেস্ট নিলেই এই সমস্যা ঠিক হয়ে যায়। তবে, কারও যদি এই ব্যথা থাকে তাও কারণ বুঝতে না পেরে যদি অনবরত পরিশ্রম করতে থাকেন ও হাড়ে চাপ পড়তে থাকে। তবে পরবর্তীকালে তা হাড় ভাঙার পর্যায়ে চলে যায়। কমপ্লিট ফ্র‌্যাকচার হলে তখন পুরো প্লাস্টার করতে হয়। তা না হলে শুধু সব রকমের পরিশ্রম কমিয়ে রেস্টে থাকলে এই ব্যথা একেবারে কমে যায়।

কখন রিস্ক
এই ব্যথা অবহেলা করলে বিপদ। একটা সময় ক্রনিক ব্যথা হতে শুরু করে। ধীরে ধীরে ওই সূক্ষ্ম ভাঙা জায়গায় নতুন হাড় বা মাংস গজাতে শুরু করে। যা আরও মারাত্মক। তাই এই ব্যথা ফেলে রাখা উচিত নয়।

কী ভাবে বুঝবেন?
লক্ষণ দেখা গেলে তখন নিজেকেই সতর্ক হতে হবে। অনেক ক্ষেত্রেই এক্স-রে করার পর অনেকক্ষেত্রেই কিছুই পাওয়া যায় না। তখন কোনও সমস্যা নেই বলেই ধরে নেন অনেকে। চিকিৎসকরাও অনেক সময় বুঝতে পারেন না যে এই ধরনের ফ্র‌্যাকচার হয়েছে। তাই এক্স-রেতে কিছু না পাওয়া গেলে ও ব্যথা বারবার ফিরে ফিরে এলে সেক্ষেত্রে প্রথম ভাবা উচিত রোগী কী ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত। যদি এমন হয় খুব কায়িক পরিশ্রম করতে হয় ও ব্যথা বারবার ফিরে আসছে সেক্ষেত্রে, হেয়ারলাইন বা স্ট্রেস ফ্র‌্যাকচার হতে পারে। সঠিক নির্ধারণ করতে এমআরআই স্ক্যান করা জরুরি।

[‘খেলব হোলি, ভাং খাব না!’ কিন্তু হ্যাংওভার কাটাবেন কী করে?]

দায়ী ভিটামিনের অভাব
বিশেষ করে যাঁদের শরীরে ভিটামিন ডি বা ক্যালশিয়ামের অভাব রয়েছে তাঁদের হাড়ের এই ধরনের ফ্র‌্যাকচার দেখা যায়। এছাড়া বয়স্কদের হাড় নরম হতে থাকলে একটা সময় হাঁটাচলা করলেই হাড়ে এই ফ্র‌্যাকচার হতে পারে।

সতর্কতা
এই ধরনের ফ্র‌্যাকচার রোধ করতে শরীরে ভিটামিন ডি–এর মাত্রা ঠিক রাখা জরুরি। গায়ে রোদ লাগাতে হবে। পর্যাপ্ত ভিটামিন–ডি না থাকলে যে কোনও বয়সেই অল্প পরিশ্রমেই হেয়ার লাইন ফ্র‌্যাকচার হতে পারে। ৪০ বছরের পর টেস্ট করে মেপে দেখা উচিত এই ভিটামিনের মাত্রা ঠিক আছে কিনা। নিয়মিত এক্সারসাইজ করতে হবে। পেশি শক্তিশালী থাকলে হাড়ও শক্ত থাকে ও সহজেই ভঙ্গুর হয়ে যায় না। তবে মর্নিং ওয়াক বা ওয়ার্ক আউট করলে শুধু হবে না। জরুরি পেশির শক্তি বৃদ্ধি করে এমন এক্সারসাইজ বা মাসল টোন আউট করা।

পরামর্শে : ৯০৫১৯৩৯৩৯৩

Sangbad Pratidin News App: খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ
নিয়মিত খবরে থাকতে লাইক করুন ফেসবুকে ও ফলো করুন টুইটারে